ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

চন্দ্রকলা থিয়েটারের ‘শেখ সাদী’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন আজ

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ২৯ আগস্ট ২০১৯

চন্দ্রকলা থিয়েটারের ‘শেখ সাদী’ নাটকের উদ্বোধনী মঞ্চায়ন আজ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ তারুণ্যনির্ভর নাট্যদল চন্দ্রকলা থিয়েটারের নতুন প্রযোজনা ‘শেখ সাদী’ নাটকের উদ্বেধানী মঞ্চায়ন হবে আজ। এ উপলক্ষে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মূল হলে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ্আইটিআইয়ের সাম্মানিক সভাপতি রামেন্দু মজমুদার, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজিদ, ইরানী কালচারাল সেন্টারের পাবলিক রিলেশন অফিসার সাইদুল ইসলাম এবং ইরানের কালচারাল কাউন্সিলর ড. মাহদী হোসেইনি ফায়েক। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন চন্দ্রকলা থিয়েটারের সভাপতি মামুনুর রশীদ মামুন। আলোচনা ও উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে ‘শেখ সাদী’ নাটকটি মঞ্চস্থ হবে। চন্দ্রকলা থিয়েটারের ১৮তম প্রযোজনা ‘শেখ সাদী’। পারস্যের মহাকবি শেখ সাদীর জীবন ও কর্ম আশ্রীত নাটকটি রচনা করেছেন অপূর্ব কুমার কু-ু। নাটকটি নির্দেশনার পাশাপাশি নাম ভূমিকায় একক অভিনয় করবেন চন্দ্রকলা থিয়েটারের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক এইচ আর অনিক। নাটকের প্রযোজনা অধিকর্তা মামুনুর রশীদ মামুন, সঙ্গীত হামিদুর রহমান পাপ্পু, মঞ্চ ফজলে রাব্বি সুকর্ণ, মঞ্চ সহযোগী মাহমুদুল হাসান মাসুম, আলো এসএম অঙ্গন, কাজী নজরুল ইসলাম, মঞ্চ ব্যবস্থাপনায় রয়েছেন সৈকত, নিশি, পপি, গোলাম সারোয়ার, আনিস, অবনী, মেহেদী, রিজু, নাহিয়ান, মেকাপ জনি সেন, শিল্প নির্দেশনা সুজন মাহাবুব। নাটকটির প্রযোজনা সহযোগী ঢাকায় ইরানিয়ান কালচারাল সেন্টার। এছাড়া পৃষ্ঠপোষকতায় রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ‘শেখ সাদী’ নাটকের কাহিনী এক ঐতিহাসিক মুহূর্তকে ঘিরে। দিল্লীর যুবরাজ মুহম্মদ বুলবন তার সময়কালে এক বিশ্বকবি সম্মেলনের আয়োজন করেন যেখানে মুখ্য কবি হিসেবে আমন্ত্রণ পান শেখ সাদী। শেখ সাদীর প্রাণাধিক প্রিয় বন্ধু দিল্লীর কবি আমীর খসরু আমন্ত্রণ পত্র রচনা করেন এবং শেখ সাদীর আগমন নিশ্চিত করতে হৃদয়ের অন্তস্থল থেকে আহ্বান জানান। রাষ্ট্রীয় সম্মান এবং বন্ধুর আহ্বানে উৎফুল্ল শেখ সাদী সম্মানিত এবং আনন্দে আপ্লুত হলেও বার্ধক্যজনিত কারণে বিগত সময়ে একাধিকবার দিল্লী ভ্রমণ করলেও সেবার সে আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে দিল্লী আসতে পারেননি। সশরীরে না যাবার ক্ষেত্রে অপরাপর আরেকটি কারণ ছিল, শেখ সাদী চেয়েছিলেন তাঁর অন্তিম বেলা কাটুক শিরাজী নগরীতে যেখানে তাঁর জন্ম-শৈশব-কৈশোর ও যৌবনে বেড়ে ওঠা। ফলে সিরাজ ত্যাগ করে দিল্লীর সে যাত্রায় শেখ সাদী না গেলেও শেখ সাদী তাঁর রচিত গুলিস্তা, বুলিস্তাসহ অন্যান্য রচিত গ্রন্থ তুলে দিয়েছিলেন শিরাজীতে অভ্যাগত দিল্লীর রাষ্ট্রীয় অতিথিদের হাতে যুবরাজ ও কবিবন্ধুর প্রতি সম্মানার্থে। ইতিহাসের এই সত্যকে ঘিরেই নাটকটি শুরু হয়। মহাকবি শেখ সাদী তাঁর সৃজন সাহিত্যের সম্ভার নিয়ে দাঁড়িয়ে শিরাজীর নিজ গৃহে, পারস্য থেকে দিল্লীগামী মুসাফিরদের আসার অপেক্ষায়। দিল্লীর যুবরাজ মুহম্মদ বুলবন, কবি বন্ধুবর আমীর খসরুর আমন্ত্রণে শেখ সাদী আপেক্ষমাণ তাঁর রচিত সাহিত্য সমগ্র আমন্ত্রণের প্রতিদান হিসেবে মুসাফিরদের হাতে তুলে দিতে। ফজরের আজান শেষে ভোরের আলো ফোটার মাহেন্দ্রক্ষণের মধ্যবর্তী অপেক্ষমাণ শেখ সাদীর সময়টুকু নিয়েই নাটক ‘শেখ সাদী’। পোশাকের পকেটে খাবার পুরার বহুল প্রচলিত কাহিনীর পাশাপাশি পারস্যের কবি রুদকী, ফেরদৌসী, জালাল উদ্দীন রুমি, ওমর খৈয়ামসহ পূর্বসুরি ও সমসাময়িক সাহিত্যিকদের সমান্তরাল পথচলা, যাপিত জীবনকে তুলে ধরা এবং নিজ সাহিত্য সৃজনের প্রেক্ষাপটকে মনোজগতে পুনরায় ফিরে দেখার এবং অপেক্ষার অবসানে শেখ সাদীর আত্ম উপলব্ধির নাটক ‘শেখ সাদী’। ‘শেখ সাদী’ নাটকের নির্দেশক, অভিনেতা এইচ আর অনিক বলেন, পা-ুলিপি প্রস্তুত থেকে মঞ্চায়নের প্রতিটি ধাপে আমাদের শ্রদ্ধেয় নাট্যজনদের দিক নির্দেশনা নিয়ে আমরা এগিয়েছি মঞ্চায়নের লক্ষ্যে। যতদূর জানি বিশ্বের মধ্যে শেখ সাদীকে নিয়ে প্রথমবারের মতো মঞ্চ নাটক মঞ্চায়নের পথে আমরা চন্দ্রকলা থিয়েটার। ফলে দর্শকদের বিপুল চাহিদা এবং রসাস্বাদনে যতদূর চেষ্টা করা যায় একটা দলের পক্ষে তা করতে আমরা বদ্ধপরিকর।
×