ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তৃতীয় পক্ষের পকেটে ৪ লাখ, ভিকটিমের ৫০ হাজার

প্রকাশিত: ০৯:৩১, ২৯ আগস্ট ২০১৯

তৃতীয় পক্ষের পকেটে ৪ লাখ, ভিকটিমের ৫০ হাজার

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা মাত্র ৫০ হাজার টাকায় মীমাংসা করতে বাধ্য করা হয়েছে। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় অসহায় ওই নারী থানায় অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে ওই নারীর ভগ্নিপতিসহ কয়েকজন হাতিয়ে নিয়েছে আরও কয়েক লাখ টাকা। জানা গেছে, স্বামী পরিত্যক্ত মাগুরার এক নারী যশোর শহরতলীর বিরামপুরে দুটি সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। যশোরের জহির বুক ডিপোর মালিক জহির উদ্দিন খানের ভাই আলাউদ্দিন ওই নারীর আত্মীয়। সেই সুবাদে জহির উদ্দিনের সঙ্গে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্ত্রী মৃত্যু সজ্জায় এ কথা বলে জহির ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে জহির বলেছেন তার স্ত্রী মারা গেলে বিয়ে করে বাড়িতে তুলে নিবেন। গত ৮ মাস পূর্বে তিনজন লোক সঙ্গে নিয়ে একজনকে কাজী সাজিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে ভুয়া কাবিননামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপর থেকে দফায় দফায় তাকে স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকেন জহির। কিন্তু গত ৪ মাস আগে জহিরের স্ত্রী মারা গেলেও তিনি ওই নারীকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দেননি। ফলে ওই নারী আর জহিরের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে রাজি হননি। এরপর গত ৫ মে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকায় চাকু দেখিয়ে আবারও ধর্ষণ করেন জহির উদ্দিন। গত ৭ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে শহরের দড়াটানায় জহিরকে পেয়ে ওই নারীকে বিয়ের জন্য বলেন। এ সময় জহির বিয়েতে রাজি নয় বলে জানান। এ বিষয়ে ওই নারী গত ২১ আগস্ট জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন কোতোয়ালি মডেল থানায়। বিষয়টি নিয়ে থানার এসআই নূর ইসলাম তদন্ত শুরুর আগেই তৃতীয় একটি পক্ষ পুলিশকে পেছনে রেখে দেনদরবার শুরু করে। তবে জহির বিষয়টি ছেড়ে দেন জসিম নামে তার একান্ত এক ব্যক্তির কাছে। জসিম উদ্দিন সবাইকে ম্যানেজ করার জন্য একজনের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এদিকে, অভিযোগ তুলে নেয়ার শর্তে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তিনি বলেন, জহিররা পারিবারিকভাবে বসে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। অভিযোগ তুলে নিতেও বলেছেন। আবার মধ্যস্থতাকারী তৃতীয় পক্ষ হাতিয়ে নিয়েছে আরও লক্ষাধিক টাকা। এ বিষয়ে অভিযুক্ত জহির উদ্দিন জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী নারীকে দেনমোহর বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নূর ইসলাম জানিয়েছেন, অভিযুক্ত জহির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নেয়ার আগেই তারা একটি আপোসনামা দিয়েছেন।
×