ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

মারকোসারভুক্ত দেশসমূহের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৯:২৬, ২৯ আগস্ট ২০১৯

মারকোসারভুক্ত দেশসমূহের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হচ্ছে

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুন্শি বলেছেন, ব্রাজিল-আর্জেন্টিনাসহ মারকোসার ভুক্ত দেশসমূহের সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) স্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত আগামী ডিসেম্বরে। বাংলাদেশ মারকোসার বাণিজ্যজোট ভুক্ত ব্রাজিল, আর্জেনটিনা, প্যারাগুয়ে ও উরুগুয়ের সঙ্গে এফটিএ স্বাক্ষরের জন্য প্রস্তাব দিয়েছে। দেশগুলো নীতিগতভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে এফটিএ করতে সম্মত। দক্ষিণ আমেরিকার বাণিজ্যিক জোট মারকোসার ভুক্ত দেশসমূহের শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ডিসেম্বরে, এ সম্মেলনে বাংলাদেশের এফটিএ স্বাক্ষরের প্রস্তাব উত্তাপন করা হবে। সদস্যভুক্ত দেশগুলো একমত হলে এফটিএ স্বাক্ষর করা সম্ভব হবে। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, সেখানে ৩০ কোটি ক্রেতা রয়েছে এবং চার ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার জিডিপির এ অঞ্চলে বাংলাদেশী পণ্য রফতানির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু সেখানে রফতানির পরিমাণ খুবই সামান্য। বর্তমানে সেখানে তৈরি পোশাক রফতানি করতে ৩৫ ভাগ আমদানি শুল্কসহ অন্যান্য শুল্ক মিলে মোট শুল্কের পরিমাণ দাঁড়ায় প্রায় ৬০ ভাগ। এ অঞ্চলে বাংলাদেশের প্রধান রফতানি পণ্য তৈরি পোশাকের প্রচুর চাহিদা রয়েছে, তবে উচ্চ শুল্কহার এর কারণে প্রত্যাশিত রফতানি করা সম্ভব হচ্ছে না। তারাও বাংলাদেশে গরুর মাংস রফতানির প্রস্তাব দিয়েছে এবং তুলা রফতানির জন্য ওয়্যার হাউস নির্মাণ করতে চায়। বাণিজ্যমন্ত্রী বুধবার বাংলাদেশ সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির উদ্দেশে ব্রাজিল, আর্জেন্টিনাসহ মারকোসারভুক্ত দেশসমূহ (ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, উরুগুয়ে ও প্যারাগুয়ে) সফর শেষে আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য প্রদানের সময় এসব কথা বলেন। বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, মুক্ত বাণিজ্য চুক্তির (এফটিএ) মাধ্যমে উল্লিখিত শুল্ক হার হ্রাস করলে এ অঞ্চলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকসহ টেক্সটাইল, ওষুধ, তামাক, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, টেবিল ওয়্যার প্রভৃতি পণ্য রফতানি বৃদ্ধি পাবে। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এ সফরে চার দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা ও ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দের সঙ্গে বাণিজ্য সম্প্রসারণ বিষয়ে ১৭টি আলোচনা সভা করা হয়েছে। বিজিএমইএ-এর পক্ষ থেকে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ফলে বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের উপর তাদের আগ্রহ বেড়েছে। বিজিএমইএ ও ব্রাজিলের সর্ববৃহৎ ব্যবসা সংগঠন সাঁওপাওলো চেম্বার অব কমার্সের মধ্যে একটি সহযোগিতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিজিএমইয়ের উদ্যোগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় আগামী নবেম্বর মাসে ব্রাজিলে একটি সিঙ্গেল কান্ট্রি আরএমজি এক্সিবিশন এ্যান্ড ফ্যাশন শো-এর আয়োজন করা হবে। টিপু মুন্শি বলেন, বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্য আমদানির উপর ব্রাজিল ১৯৯২ সালে এন্টি ডাম্পিং ডিউটি আরোপ করে। বাংলাদেশের অনুরোধে তা প্রত্যাহার করার আশ্বস্ত দেয়া হয়েছে। ব্রাজিলের বাণিজ্যিক রাজধানী সাঁওপাওলোতে একটি কনসাল জেনারেল অফিস স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মফিজুল ইসলাম, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (রফতানি) তপন কান্তি ঘোষ, অতিরিক্ত সচিব (এফটিএ) শফিকুল ইসলাম, টেরিফ কমিশনের চেয়ারম্যান জ্যোতিরময় দত্ত, বিজিএমইয়ের প্রেসিডেন্ট রুবানা হকসহ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সিনিয়র কর্মকর্তাবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
×