ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ধর্ষণের শিকার যশোরের সেই নারী পেল ৫০ হাজার টাকা

প্রকাশিত: ০৩:৫৮, ২৮ আগস্ট ২০১৯

ধর্ষণের শিকার যশোরের সেই নারী পেল ৫০ হাজার টাকা

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরে এক নারীকে ধর্ষণের ঘটনা মাত্র ৫০ হাজার টাকায় মীমাংসায় বাধ্য করা হয়েছে। ধর্ষক প্রভাবশালী হওয়ায় অসহায় ওই নারী থানায় অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেয়া হয়নি। প্রভাবশালী ওই ব্যক্তির পক্ষে অবস্থান নিয়ে ওই নারীর ভগ্নিপতিসহ কয়েকজন হাতিয়ে নিয়েছে আরো কয়েক লাখ টাকা। অভিযোগে জানা গেছে, স্বামী পরিত্যক্ত মাগুরার এক নারী যশোর শহরতলীর বিরামপুরে দু’টি সন্তান নিয়ে বসবাস করেন। যশোরের জহির বুক ডিপোর মালিক জহির উদ্দিন খানের ভাই আলাউদ্দিন ওই নারীর আত্মীয়। সেই সুবাদে জহির উদ্দিনের সাথে পরিচয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। স্ত্রী মৃত্যু সজ্জায় এ কথা বলে জহির ওই নারীকে বিয়ের প্রস্তাব দেন। প্রস্তাবে রাজি না হলে জহির বলেছেন তার স্ত্রী মারা গেলে বিয়ে করে বাড়িতে তুলে নিবেন। গত ৮ মাস পূর্বে তিনজন লোক সাথে নিয়ে একজনকে কাজী সাজিয়ে তার বাড়িতে গিয়ে ভুয়া কাবিননামায় স্বাক্ষর করিয়ে নেন। এরপর থেকে দফায় দফায় তাকে স্ত্রী হিসেবে শারীরিক সম্পর্ক করতে থাকেন জহির। কিন্তু গত ৪ মাস আগে জহিরের স্ত্রী মারা গেলেও তিনি ওই নারীকে স্ত্রীর স্বীকৃতি দেননি। ফলে ওই নারী আর জহিরের সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে রাজি হননি। এরপর গত ৫ মে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়িতে কেউ না থাকায় চাকু দেখিয়ে আবারো ধর্ষণ করেন জহির উদ্দিন। গত ৭ আগস্ট বেলা ১১টার দিকে শহরের দড়াটানায় জহিরকে পেয়ে ওই নারীকে বিয়ের জন্য বলেন। এসময় জহির বিয়েতে রাজি নয় বলে জানান। এব্যাপারে ওই নারী গত ২১ আগস্ট জহির উদ্দিনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করেন কোতোয়ালি মডেল থানায়। বিষয়টি নিয়ে থানার এসআই নূর ইসলাম তদন্ত শুরুর আগেই তৃতীয় একটি পক্ষ পুলিশকে পিছনে রেখে দেনদরবার শুরু করে। তবে জহির বিষয়টি ছেড়ে দেন জসিম নামে তার একান্ত এক ব্যক্তির কাছে। জসিম উদ্দিন সবাইকে ম্যানেজ করার জন্য একজনের মাধ্যমে কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। এদিকে, অভিযোগ তুলে নেওয়ার শর্তে তাকে ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগী ওই নারী। তিনি বলেন, জহিররা পারিবারিকভাবে বসে আমাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বিষয়টি নিয়ে আর বাড়াবাড়ি করতে নিষেধ করেছেন। অভিযোগ তুলে নিতেও বলেছেন। একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ওই নারীকে দিয়ে মামলা করিয়ে পরে মিমাংসার নামে তার ভগ্নিপতি হাতিয়ে নিয়েছেন তিন লাখ টাকা। আবার মধ্যস্থতাকারী তৃতীয় পক্ষ হাতিয়ে নিয়েছে আরো লক্ষাধিক টাকা। ফলে ধর্ষণের শিকার ওই নারী মাত্র ৫০ হাজার টাকা পেলেও তৃতীয় পক্ষের পকেটে গেছে কয়েক লাখ টাকা। এব্যাপারে অভিযুক্ত জহির উদ্দিন জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী নারীকে দেনমোহর বাবদ ৫০ হাজার টাকা দেয়া হয়েছে। এব্যাপারে তদন্ত কর্মকর্তা এসআই নুর ইসলাম জানিয়েছেন, অভিযুক্ত জহির উদ্দিন খানের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেয়ার আগেই তারা একটি আপোসনামা দিয়েছেন।
×