ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বোথামকে মনে করাচ্ছেন স্টোকস

প্রকাশিত: ১২:০৮, ২৮ আগস্ট ২০১৯

বোথামকে মনে করাচ্ছেন স্টোকস

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ স্যার ইয়ান বোথাম। ইংল্যান্ড তো বটেই ক্রিকেট ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। ১৯৭৬-১৯৯২ পর্যন্ত বিশ্বকে মাতিয়ে রাখা সাবেক ইংলিশ অধিনায়ক ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে ১০২ টেস্টে করেন ৫২০০ রান, পেস বোলিংয়ে শিকার ৩৮৩ উইকেট। ওয়ানডেতে রান ২১১৩, উইকেট ১৪৫। ৮ বছরের ক্যারিয়ারে ২৮ বছর বয়সী স্টোকসের পারফর্মেন্স সেখানে টেস্টে ৩৪৭৯ রান ও ১৩৫ উইকেট, ওয়ানডেতে ২৬৮২ রান ও ৭০ উইকেট। পরিসংখ্যানে নিশ্চয়ই বোথামের সঙ্গে তুলনা চলে না। তবে একটা জায়গায় দু’জনের দারুণ মিলÑ মানসিক শক্তি এবং কঠিন পরিস্থিতিতে অসাধারণ পারফর্মেন্স। লর্ডসে বিশ্বকাপের ফাইনালে স্টোকসের অপরাজিত ৮৪ রানের সৌজন্যে ইতিহাসে প্রথম শিরোপা স্বাদ পায় ইংল্যান্ড। তার রেশ না কাটতেই এ্যাশেজে অপরাজিত ১৩৫ রানের মহাকাব্যিক ইনিংসে সিরিজ বাঁচিয়ে রাখার পর কুলিন বৃটিশদের স্যার বোথামের স্মৃতি মনে করিয়ে দিচ্ছেন নিউজিল্যান্ড বশোদ্ভূত তুখোড় এই অলরাউন্ডার। ৩৮ বছর পেছনে ফিরে যাওয়া যাক। ১৯৮১ সালের হেডিংলিতে এমনি ঐতিহ্যের এ্যাশেজে মুখোমুখি দু’দল। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ার চার শ’ ছাড়ানো স্কোর করতে সমস্যা হয়নি। জবাবে ১৭৪ রানে অফআউট ইংল্যান্ড। ব্যাটসম্যানদের আসা-যাওয়ার মিছিলে শুধু অলরাউন্ডার ইয়ান বোথামই ছিলেন সফল, ৫৪ বলে ৫০ রান করেছিলেন তিনি। ফলোঅনে পড়ল ইংল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসেও একই দশা, ১৩৫ রান তুলতে গিয়ে ৭ উইকেট হারিয়ে স্বাগতিকরা তখন রীতিমতো ধুঁকছে। কিন্তু বোথাম যে এই ম্যাচকেই ফিনিক্স পাখির মতো জেগে ওঠার উপলক্ষ হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। দ্বিতীয় ইনিংসে দুই বোলার গ্রাহাম ডিলি আর ক্রিস ওল্ডকে সঙ্গী করে খেললেন ১৪৯ রানের মহাকাব্যিক এক ইনিংস। যে ম্যাচে ইংল্যান্ডের ইনিংসের ব্যবধানে হারার কথা ছিল, উল্টো দ্বিতীয় ইনিংসে অস্ট্রেলিয়াকে ১৩০ রানের টার্গেট দিলেন বোথামরা। বোথামের মতো পেসার বব উইলিসও দ্বিতীয় ইনিংসে নিজের ছন্দ খুঁজে পেলেন। উইলিসের গতির কাছে আত্মসমর্পণ করলেন অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানরা। ১১১ রানে গুটিয়ে গেল অস্ট্রেলিয়া, অবিশ্বাস্যভাবে টেস্ট জিতল ইংল্যান্ড। বৃটিশ মিডিয়া এখন বোথামের সেদিনের সঙ্গে এই স্টোকসের তুলনা করছে। হেডিংলিতে জয়ের জন্য ইংল্যান্ডের লক্ষ্য ছিল ৩৫৯। স্টুয়ার্ট ব্রড যখন আউট হন ইংল্যান্ডের রান তখন ২৮৬। চাই আরও ৭৩। শেষ ব্যাটসম্যান জ্যাক লিচকে নিয়ে অবিশ্বাস্য, অবিস্মরণীয় এক জয় উপহার দেন বেন স্টোকস। শেষ জুটিতে যোগ করেন অবিচ্ছিন্ন ৭৬ রান। যেখানে ৪৪ বলে ৭৪ স্টোকসের। লিচ ১৭ বলে ১*। ১১ চার ও ৮ ছক্কায় অপরাজিত ১৩৫ রানের মহাকাব্য লেখেন ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ জয়ের নায়ক। ১ উইকেটের নাটকীয় জয়ে নতুন ইতিহাস গড়ে জো রুটের দল। ১-১ সমতায় বাঁচিয়ে রাখে এ্যাশেজ জয়ের সম্ভাবনা। টেস্টে শেষ উইকেট জুটিতে অবিচ্ছিন্ন ৭৬ রানের বেশি আর মাত্র একটি রেকর্ড জুটি রয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ১০ম উইকেটে বিশ্ব ফার্নান্দোকে সঙ্গে নিয়ে অপরাজিত ৭৮ রানের জুটি গড়েছিলেন কুশল পেরেরা। স্টোকস আর জ্যাক লিচ মিলে ৭৬ রানে জুটি গড়ে জেতিয়েছিলেন দলকে। নিজেদের টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে চতুর্থ ইনিংসে সবচেয়ে বেশি রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড গড়ল ইংল্যান্ড। ৯১ বছর আগে ১৯২৮ সালে মেলবোর্নে ৩৩২ রান করে জিতেছিল ইংলিশরা।
×