ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্রে জড়িতদের বিচারে কমিশন হবে

প্রকাশিত: ১১:১৪, ২৮ আগস্ট ২০১৯

বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্রে জড়িতদের বিচারে কমিশন হবে

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত ও বিচার করতে কমিশন গঠন এবং এর কর্মপদ্ধতি নিয়ে শীঘ্রই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। মঙ্গলবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্প্রীতি বাংলাদেশ আয়োজিত ‘শোকের মাস, ষড়যন্ত্রের মাস আগস্ট’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি সরকারের এ অবস্থানের কথা তুলে ধরেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার করতে কমিশন গঠনের দাবি উঠেছে একথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আছে বলেই কমিশন গঠনের দাবি উঠানো সম্ভব হয়েছে। এখন হত্যাকা-ের নেপথ্যে যাওয়ার সময় এসেছে। নেপথ্যে যারা ছিল তাদের চিহ্নিত করার সুযোগ পেয়েছি। আমরা সেই সুযোগ কি ছেড়ে দিব? সুযোগ ছাড়ব না। আমরা কমিশন গঠন করবই। অনেকে আছেন এই কমিশনে অন্যান্য হত্যাকা- সম্পৃক্ত করার কথা বলছেন। তবে আমি মনে করি এই কমিশনটা শুধু বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের নেপথ্যে কারা ছিল তাদের খুঁজে বের করার জন্যই করা উচিত। আইনমন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় খন্দকার মোশতাক ও জিয়াউর রহমান যে জড়িত ছিল হত্যাকা-ের বিচারের সময় সে বিষয়ে আমাদের কাছে যথেষ্ট তথ্য-প্রমাণ এসেছে। কিন্তু তারা মারা যাওয়ায় এবং আইনের সুযোগ না থাকায় ওই দুজনকে আসামির তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়। এখন পর্যন্ত এই কমিশনের কাজের পরিধি ঠিক করিনি একথা জানিয়ে আনিসুল হক বলেন, নিয়ম মাফিক কমিশন গঠন করে এর হাতে কিছু ক্ষমতা দিতে হবে। ক্ষমতা দেয়ার আগে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রিপরিষদের সভায় সিদ্ধান্ত হবে যে, এই কমিশনের প্রধান কে থাকবেন, কমিশনের কাজ কী হবে এবং এই কমিশনকে কতদিন সময় দেয়া হবে। আমি সপ্তাহ দুয়েকের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা করব। তারপর এই কমিশন সম্পর্কে বিস্তারিত জানাব। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য প্রতিমন্ত্রী ডাঃ মুরাদ হাসান বলেন, জাতির পিতা হত্যার দায় থেকে আমরা মুক্তি পেতে চাই। আমরা অর্ধেক দায় মুক্তি পেয়েছি। যারা হত্যায় সরাসরি অংশ নিয়েছে সেই কাপুরুষদের পাশাপাশি যারা ষড়যন্ত্র করেছে তাদেরও বিচার চাই। কলঙ্কিত অধ্যায় থেকে মুক্তি পাওয়ার অপেক্ষার প্রহর গুনছি। কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার মাস্টারমাইন্ডদের বিচার করা হোক। অলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, কমিশন গঠন করে বঙ্গবন্ধুর হত্যার ষড়যন্ত্রকারীদের বিচার করতে হবে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জিয়া যে জড়িত তা আজ প্রমাণিত। এছাড়া রোহিঙ্গাদের উস্কে দিতে জামায়াত কাজ করছে। এমনকি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সম্প্রতি যে সমাবেশ হয়েছে তাতে জামায়াতের ইন্ধন রয়েছে বলেও দাবি করেন বক্তারা। সম্প্রীতি বাংলাদেশের আহ্বায়ক পীযূষ বন্দোপাধ্যায়ের সভাপতিত্বে সংগঠনের এবং সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মামুন আল মাহতাবের সঞ্চালনায় এতে আরও বক্তৃতা করেন প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শফিকুর রহমান, আপীল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, সাবেক রাষ্ট্রদূত ও সচিব একেএম আতিকুর রহমান, আলী হাবিব প্রমুখ। বাংলাদেশকে ধ্বংস করে দিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল মন্তব্য করে আইনমন্ত্রী বলেন, ঘাতকরা বুঝেছিল, বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারা বাংলাদেশে থাকলে, বাংলাদেশকে ধ্বংস করা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর রক্তের ধারা শেখ হাসিনা ক্ষমতা গ্রহণ করে দেশকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না দাবি করে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র ছিল। জিয়াউর রহমান সরকার গঠনের পর পাকিস্তানের দোসরদের নিয়ে মন্ত্রিসভা গঠন করেছিলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার নেপথ্যে তারা ছিলেন। জিয়াউর রহমানের মন্ত্রিসভায় যারা ছিলেন তারা পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রিসভাসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বেও কর্মরত ছিলেন। এ থেকেই প্রমাণিত হয়, জিয়াউর রহমান মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার হবে না, এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আগামী প্রজন্ম জানতে চায়, কেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। তার হত্যার বিচারের জন্য কেন ২১ বছর দেশকে অপেক্ষা করতে হয়েছে। কেন নেপথ্যের মানুষদের এখন পর্যন্ত বিচার হয়নি।
×