বঙ্গবন্ধু রচিত পথ ধরেই বিশ্বসভায় মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে দেশ ॥ অর্থমন্ত্রী

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রচিত পথ ধরেই বিশ্বসভায় বাংলাদেশ মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু চেতনার বাতিঘর হয়ে বেঁচে থাকবেন- যতদিন এই পৃথিবী থাকবে। তিনি বাঙ্গালী অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে তিনি থাকবেন সারজীবন এ আমার বিশ্বাস। মঙ্গলবার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ আয়োজিত জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব মনোয়ার আহমেদ। এছাড়া অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সকল স্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ। আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, আগস্ট মানে বাঙ্গালীর শোকের মাস, বেদনার মাস। বছর ঘুরে আবার এসেছে বাঙ্গালী জাতির ইতিহাসে রক্তের অক্ষরে লেখা শোকাবহ আগস্ট। বঙ্গবন্ধুর অজেয় আদর্শ, তার মহান আত্মত্যাগ এবং তার যোগ্য উত্তরসূরির অকুতোভয় সংগ্রামের ফলে বাংলাদেশ আজ বঙ্গবন্ধুর রচিত পথ ধরেই বিশ্বসভায় মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, এইমাত্র আমরা বঙ্গবন্ধু প্রদত্ত জাতিসংঘের ভাষণটি শুনলাম। সেখানে তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের বিভিন্ন হুমকির কথা বলেছেন। যে জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির বিষয়টি বর্তমান বিশ্বের অন্যতম আলোচ্য বিষয়। যা তিনি এত বছর আগে উল্লেখ করে গিয়েছেন। তিনি ছিলেন প্রসাশনিক ও রাজনৈতিভাবে অত্যন্ত দক্ষ ও সুদূরপ্রসারী। তিনি বলেন, আমার জীবনের অনেক বড় একটি প্রাপ্তি হচ্ছে, আমি চারবার এই মহান নেতার সান্নিধ্য লাভের সুযোগ পেয়েছিলাম, কিছু নির্দেশনা পেয়েছিলাম। তিনি দেশ পরিচালনার জন্য স্বল্প সময়ে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো গ্রহণ করেছিলেন তা এখনও অত্যন্ত সময়োপযোগী এবং ভবিষ্যতেও এর প্রয়োজনীয়তা ফুরাবে না। অতি অল্পদিনে আমাদেরকে দিয়েছেন একটি সংবিধান যেখানে সবকিছু রয়েছে। মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সকল শ্রেণীকে সম্পৃক্ত করতে হবে। যাদের জন্য উন্নয়ন তারা যেন বঞ্চিত না হয় তাদের সম্পৃক্ত করেই উন্নয়ন পরিচালনা করতে হবে। অর্থমন্ত্রী বলেন, যারা তাকে হত্যা করেছিল তারা ভেবেছিল তারা বাঙ্গালীর মন থেকে বঙ্গবন্ধুকে মুছে দিবে। কিন্তু তারা ভুল করেছিল, কারণ তারা বুঝতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর মতো নেতাকে মুছে দেয়া যায় না। যতদিন এ পৃথিবী থাকবে, যতদিন সূর্য উঠবে ততদিন তিনি থাকবেন সূর্য্যরে মতো দেদীপ্যমান থাকবেন। তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকে আমাদের কাছ থেকে দূরে সরিয়ে রাখা যাবে না। বঙ্গবন্ধুর মৃত্যু নেই। বঙ্গবন্ধু হচ্ছেন গ্রীক রূপকথার সেই ফিনিক্স পাখির মতো। ফিনিক্স পাখিরা মরে না। একটি ফিনিক্স পাখি যখন হাজার বছরের কাছাকাছি চলে আসে, তখন সে নিজে একটা ঘর বাঁধে। ঘর বেঁধে সে তার ঘরে ঢুকে যায়। পরে নিজের ঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়, আগুনে সে আত্মহুতি দেয়। ওখান থেকে যে ছাই-ভস্ম হয়, তা থেকে আরেকটি ফিনিক্স পাখির জন্ম হয়। এভাবে চলতে থাকে। এজন্য বলা হয়, ফিনিক্স পাখিদের কখনও মৃত্যু হয় না। আসুন, আমরা জাতির পিতা হারানোর শোককে শক্তিতে পরিণত করি। তার ত্যাগ এবং তিতিক্ষার দীর্ঘ সংগ্রামী জীবনাদর্শন ধারণ করে সবাই মিলে একটি অসাম্প্রদায়িক, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলি। প্রতিষ্ঠা করি জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ।