ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

রোহিঙ্গা নিয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে ॥ কাদের

প্রকাশিত: ১১:০৩, ২৮ আগস্ট ২০১৯

রোহিঙ্গা নিয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র চলছে ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে যারা নোংরা খেলায় মেতে উঠেছে তাদের ব্যাপারে সরকারের কাছে তথ্য আছে জানিয়ে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিয়ে পরিস্থিতি ঘোলাটে করার চেষ্টা হচ্ছে। এক্ষেত্রে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্র আছে। সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম ও নির্বাচনে ব্যর্থ। তাই তাদের এখন ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কোন পথ নেই। তারা এখন দিশেহারা পথিকের মতো ছুটে বেড়াচ্ছে। মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু এভিনিউ ও আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুব মহিলা লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, সদ্য প্রয়াত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচএম এরশাদের শূন্য ঘোষিত রংপুর সদর আসনে লড়বে আওয়ামী লীগ। ওই আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী দেবে। যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশুবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন্নেসা ইন্দিরা, আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ, যুব মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শামসুন্নাহার রতœা, কোহেলী কুদ্দুস মুক্তি প্রমুখ। রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লা কিভাবে বাংলাদেশী ইমিগ্রেশন পার হয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের কাছে গেলেন আবার একই ইমিগ্রেশন পার হয়ে দুদিন আগের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন, এই বিষয়টিকে সরকার কিভাবে দেখছে সাংবাদিকরা জানতে চাইলে জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সব বিষয়ই আমাদের নলেজে (জ্ঞাত) আছে। রোহিঙ্গাদের মানবিক সাহায্য আমরা দিয়ে যাচ্ছি, আশ্রয় দিয়ে যাচ্ছি। তাদেরকে নিয়ে যারা খেলতে চায়, তাদেরকে নিয়ে নোংরা খেলা যারা করতে চায়, তাদের ব্যপারেও আমাদের কাছে তথ্য আছে। সময়মতো ব্যবস্থা নেয়া হবে। রোহিঙ্গারা কিভাবে মোবাইল পেল, এমনকি তারা একই রঙের টি-শার্ট কোথায় থেকে সংগ্রহ করেছেÑ এমন প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, এখানে সমস্যা আছে, এখানে বিদেশ থেকেও মদদ আছে। বিএনপির দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, বাংলাদেশেও একটা মতলবি মহল আছে। যারা আন্দোলন সংগ্রাম ও নির্বাচনে ব্যর্থ, তাদের এখন ষড়যন্ত্র ছাড়া আর কোন পথ নেই। তারা একবার কোটা আন্দোলন, একবার নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে সুযোগ খুঁজেছিল। তিনি বলেন, এসব আন্দোলনকে পুঁজি করে তারা অতীতে ক্ষমতা দখলের পাঁয়তারা করেছে। এখন তারা রোহিঙ্গা ইস্যুকে রাজনৈতিক ইস্যু হিসেবে বেছে নিয়ে এটাকে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্রমূলক ফায়দা লোটা যায় কিনা, সেটা তো নিশ্চয় তাদের মাথায় আছে। এক্ষেত্রেও তাদের সহযোগিতা থাকতে পারে। রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে আন্তর্জাতিক চাপ ক্রমাগত বাড়ছে দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, মিয়ানমারও বন্ধুহীন দেশ এ কথা ভাবার সুযোগ নেই। তাদেরও বন্ধু আছে, তাদেরও মিত্র আছে। কাজেই তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার ব্যাপারে যেমন অনাগ্রহ আছে তেমনি আন্তর্জাতিকভাবে তাদের ওপর চাপও কিন্তু ক্রমাগত বাড়ছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সাফল্য এখানে যে পৃথিবীতে কোন দেশ রোহিঙ্গাদের প্রতি এত উদার হয়ে সীমান্ত খুলে দিয়ে আশ্রয় দেয়নি। যেটা শেখ হাসিনার বাংলাদেশ গোটা বিশ্বকে দেখিয়েছে। মানবতা, উদারতার দুয়ার তিনি খুলে দিয়েছেন। বিএনপি ছাড়া বিশ্বের কোন দেশই এখানে শেখ হাসিনা সরকারের ব্যর্থতা আছে বা কোন দোষ আছে, কোন দুর্বলতা আছে, এমনটা কেউ বলেনি। সারা বিশ্ব প্রশংসা করছে। প্রশংসা তারাই করতে কুণ্ঠিত যারা রোহিঙ্গাদের সমস্যা থেকে ফায়দা তুলতে এ যাবৎ ব্যর্থ। রোহিঙ্গারা কোনদিন বাংলাদেশ ছেড়ে যাবে না, বাংলাদেশ কি ফিলিস্তিন হতে যাচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, এই বিষয়টা একেবারেই অযৌক্তিক, এটার কোন বাস্তবসম্মত ব্যাখ্যা দেয়ার সুযোগ নেই। ফিলিস্তিনীরা তাদের নিজ ভূমিতে আছে। রোহিঙ্গারা নিজ ভূমে পরবাসী, বাংলাদেশ তো তাদের ভূমি নয়া, কাজেই এটার সঙ্গে তুলনা হয় না। সেতুমন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে নৃশংসতম হত্যাকা- যারা ঘটায় তাদের স্বাভাবিক মৃত্যু হয় না। নবাব সিরাজউদ্দৌলার হত্যাকারী, ষড়যন্ত্রকারী মীর জাফরসহ অন্যদের মৃত্যু কীভাবে হয়েছে তা দেখলেই বোঝা যায়। বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের দিকে তাকালেও একই বিষয় পরিলক্ষিত হয়। জিয়াউর রহমান যদি বঙ্গবন্ধুর হত্যাকা-ের সঙ্গে জড়িতদের বিদেশে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা না করতেন, বিদেশে দূতাবাসে চাকরি না দিতেন, ইনডেমনিটি আইন করে হত্যাকারীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ না করতেন, তাহলে হয়ত তাকেও এভাবে মরতে হতো না। যে বুলেট বঙ্গবন্ধু হত্যাকা-ে ব্যবহƒত হয়েছে সেই বুলেটের আঘাতেই খালেদা জিয়াও বিধবা হয়েছেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের হত্যাকা-ের বিষয়ে তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ডের মাস্টারমাইন্ড জিয়াউর রহমান এবং ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার মাস্টারমাইন্ড তারেক রহমান।
×