ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

দূর হতে পারে আঞ্চলিক অস্থিতিশীলতা

আলোচনায় রাজি ট্রাম্প-রুহানি

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২৮ আগস্ট ২০১৯

আলোচনায় রাজি ট্রাম্প-রুহানি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেছেন, পারস্পরিক বিরোধ মিটিয়ে ফেলতে তারা একে অন্যের সঙ্গে আলোচনায় বসতে রাজি আছেন। ট্রাম্প সোমবার ফ্রান্স থেকে বলেন, পরিস্থিতি ঠিক থাকলে তিনি পরমাণু চুক্তির বিষয়টি নিয়ে দ্বন্দ্ব নিরসন করতে রুহানির সঙ্গে বৈঠক করতে প্রস্তুত আছেন। জি-৭ বৈঠকে যোগ দিতে ট্রাম্প ফ্রন্সে যান। অন্যদিকে রুহানি টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে তার এই ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন। বিবিসি, সিএনএন ও ওয়াশিংটন পোস্ট। সোমবার জি-৭ সম্মেলনকালে ট্রাম্প এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, হাসান রুহানির সঙ্গে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বৈঠক হওয়া সম্ভব। তবে তিনি নিষেধাজ্ঞার ফলে ইরানের যে ক্ষতি হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ হিসেবে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দেন। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে ছয়টি দেশের একটি পরমাণু চুক্তি হয়। ট্রাম্প গতবছর এই চুক্তি থেকে সরে আসার পর দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের আরও অবনতি ঘটে। চলতি সপ্তাহে ফ্রান্সের বিয়ারিৎসে অনুষ্ঠিত জি-৭ সম্মেলনে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী খুব সল্প সময়ের জন্য অঘোষিত সফরে যাওয়ার পর ট্রাম্প দেশটির প্রেসিডেন্টের সঙ্গে আলোচনার দ্বার খোলা বলে জানালেন। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কূটনৈতিক ভূমিকা পালন করেন। ট্রাম্প বলেন, ইরানের সঙ্গে নতুন একটি পরমাণু চুক্তি করার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী দেশটি ‘অপার সম্ভাবনাময়’ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘আমি মনে করি রুহানি বৈঠক করতে চাইবেন এবং পরিস্থিতিকে সঠিক পথে চালিত করবেন।’ ওদিকে ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানিও ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসতে প্রস্তুত বলে সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের জানান ম্যাক্রোঁ। তিনি বলেন, এ বৈঠক আগামী কয়েক সপ্তাহেই হতে পারে। ট্রাম্প এবং রুহানি দুইজনেরই আগামী মাসে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে। সোমবার টেলিভিশনে প্রচারিত ভাষণে রুহানি বলেন, ইরান উপকৃত হবে মনে করলে তিনি যে কারও সঙ্গেই বৈঠক করতে প্রস্তুত। তিনি বলেন, ‘আমি যদি নিশ্চিত হতে পারি যে, কোন অধিবেশনে যোগ দিলে বা কারও সঙ্গে বৈঠক করলে তা আমার দেশের উন্নয়নে সহায়ক হবে এবং জনগণের সমস্যার সমাধান হবে তাহলে আমি তা করতে দ্বিধা করব না,’ বলেন রুহানি। ম্যাক্রোঁ বলেন, রুহানি এবং ট্রাম্পের মধ্যে আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে একটি শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের প্রস্তুতি চলছে। তিনি জানান, পরমাণু চুক্তির বিষয়টি নিয়ে তেহরান ও ওয়াশিংটনের মধ্যে চলমান অচলাবস্থা অবসানের পথ খোঁজাই এ বৈঠকের লক্ষ্য। ম্যাক্রোঁ বলেন, ‘আমাদের জন্য দুটি বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইরানকে কখনই পারমাণু অস্ত্রের অধিকারী হতে দেয়া যাবে না। অন্যদিকে চলামান পরিস্থিতিকেও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতায় হুমকির দিকে গড়াতে দেয়া যাবে না।’ সম্প্রতি ওয়াশিংটনের ও তেহরানের মধ্যে উত্তেজনা যেভাবে বেড়েছিল তাতে ভূমধ্যসাগর থেকে পারস্য উপসাগর পর্যন্ত পুরো অঞ্চল অস্থিতিশীল হয়ে ওঠার আশঙ্কা দেখা দেয়। ভূমধ্যসাগরে ভাসতে থাকা তেলবাহী ট্যাঙ্কার নিয়ে ইরান কিছুটা চাপে থাকলেও শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি যেন নিজেদের দিকে নিয়ে গেছে। যুক্তরাষ্ট্র ওই ট্যাঙ্কারকে আটক করবে বলে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকিমূলক ইঙ্গিত দিলেও ইরানের কর্তৃপক্ষ সেই নৌযানটিতে থাকা তেল বিক্রি করতে সমর্থ হয়। ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে সিরিয়ায় ইরান তেল নিয়ে যাচ্ছে- এমন অভিযোগে ৪ জুলাই জিব্রাল্টার প্রণালী থেকে আদ্রিয়ান দারিয়া-১ নামের সুপার ট্যাঙ্কারটি আটক করে যুক্তরাজ্যের রাজকীয় নৌবাহিনী। এর জবাবে পারস্য উপসাগরে একটি ব্রিটিশ ট্যাঙ্কার আটক করে ইরান। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়।
×