ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ভোক্তা অধিদপ্তরকে হটলাইন স্থাপনে ৩ মাস সময় দিল হাইকোর্ট

প্রকাশিত: ০৮:১৪, ২৭ আগস্ট ২০১৯

ভোক্তা অধিদপ্তরকে হটলাইন স্থাপনে ৩ মাস সময় দিল হাইকোর্ট

অনলাইন রিপোর্টার ॥ ভোক্তাদের সার্বক্ষণিক সেবা দিতে ‘আউট সোর্সিং’ করে আগামী তিন মাসের মধ্যে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরে হটলাইন চালুর নির্দেশ দিয়েছে হাই কোর্ট। আর এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয়কে ‘কোনো ধরনের অজুহাত’ না দেখিয়ে বা ‘আমলাতান্ত্রিক জটিলাতা’ না করে বাজেট বরাদ্দ দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এসব নির্দেশনা বাস্তবায়নে কতটা অগ্রগতি হল তা ১৫ অক্টোবর আদালতে জানাতে বলা হয়েছে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তরকে। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি মো. বদরুজ্জামানের হাই কোর্ট বেঞ্চ মঙ্গলবার এ আদেশ দেয়। আদালতে বিএসটিআইয়ের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সরকার এম আর হাসান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের পক্ষে ছিলেন মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পক্ষে ছিলেন কামরুজ্জামান কচি। ভোগ্য পণ্যের মান নিয়ন্ত্রণ, নিরীক্ষণ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ সংক্রান্ত এক রিট মামলার ধারাবাহিকতায় গত ১৬ জুন হাই কোর্ট ভোক্তাদের জরুরি সেবা দিতে দুই মাসের মধ্যে একটি হটলাইন চালু করতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছিল। সেই হটলাইন স্থাপনের জন্য ৫০ লাখ টাকা বরাদ্দ চেয়ে গত ১৪ জুলাই অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) মো. হারুন-উজ-জামান ভূঁইয়া বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে প্রস্তাব পাঠান। হটলাইন চালু করতে ৫০ লাখ টাকা চাওয়ার ব্যাখ্যা জানতে গত ২০ আগস্ট ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রশাসন ও অর্থ বিভাগের পরিচালক শামীম আল মামুনকে তলব করে আদালত। প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে তাকে ২৭ অগাস্ট আদালতে হাজির হতে বলা হয়। এর ধারাবাহিকতায় শামীম আল মামুন মঙ্গলবার হাই কোর্টে হাজির হয়ে ৫০ লাখ টাকা চাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন। আর একটি বেসরকারি সফটওয়্যার কোম্পানির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা রাফসান জানি সামি হটলাইন স্থাপনের বিষয়ে আদালতে বিশেষজ্ঞ মত দেন। আদালতে সামি বলেন, বিটিআরসি থেকে লাইসেন্স নিয়ে মাসিক ভিত্তিতে প্রয়োজন অনুযায়ী খরচের ভিত্তিতে আউটসোর্সিং করে হটলাইন চালু করা যেতে পারে। সেজন্য কত টাকা লাগতে পারে তা আদালত জানতে চাইলে অধিদপ্তরের পরিচালক শামীম আল মামুন বলেন, কমিটির আলোচনায় আউটসোর্সিংয়ের বিষয়টি আসেনি। তখন আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারক উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, “বিষয়টি আপনাদের নজরে কেন আসেনি? আগে বলেছেন আপনাদের লোকবল কম। তাহলে আপনারা কীভাবে এটি স্থাপন করবেন?” শামীম আল মামুন এ সময় ক্ষমা চেয়ে বলেন, “আপনারা যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেভাবে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমেই স্থাপন করা হবে।” আউটসোর্সিংয়ে কত দিন লাগবে বিচারক তা জানতে চাইলে অধিদপ্তরের পরিচালক বলেন, বাজেট পাওয়ার পর তিন মাস লাগবে। কারণ এক্ষেত্রে আমলাতান্ত্রিক কিছু প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। এরপর আদালত তিন মাসের মধ্যেই ‘আউট সোর্সিং’ এর মাধ্যমে হটলাইন চালুর আদেশ দেয়। এদিকে বিএসটিআইয়ের পক্ষ থেকে এদিন আদালতে দেওয়া এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি খোলা বাজার থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব পরীক্ষার পর ১১টি কোম্পানির ১৩টি নিম্নমানের পণ্যের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। বাতিল করা পণ্যগুলো হল- আকিজ ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ঘি ‘ফার্ম ফ্রেশ’, শক্তি এডিবল প্রাইভেট লিমিটেডের ‘শক্তি সয়বিন তেল’, এ কে খান ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘সেফ’ সয়াবিল তেল, বিসমিল্লাহ সল্ট ফ্যাক্টরির আয়োডিনযুক্ত লবণ ‘উট’, জনতা সল্ট মিলের আয়োডিনযুক্ত লবণ ‘নজরুল’, জে কে ফুড প্রোডাক্টের ‘মদিনা’ লাচ্ছা সেমাই, মডার্ন কসমেটিকস অ্যান্ড হরবাল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ‘মডার্ন স্কিন ক্রিম’, জিএম কেমিকেল ওয়ার্কসের ‘জিএম স্কিন ক্রিম’, নিউ চট্টলা প্রাইভেট লিমিটেডের ‘এরাবিয়ান স্পেশাল ঘি’, রেভেন ফুড কোম্পানি লিমিটেডের ‘রেভেন’ লাচ্ছা সেমাই এবং খাজনা মিঠাই লিমিটেডের ‘খাজনা’ লাচ্ছা সেমাই, ঘি ও চানাচুর।
×