ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলখরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় জামাল ভুঁইয়া

প্রকাশিত: ০৮:০৬, ২৬ আগস্ট ২০১৯

আন্তর্জাতিক ম্যাচে গোলখরা নিয়ে দুশ্চিন্তায় জামাল ভুঁইয়া

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ আন্তর্জাতিক ফুটবলে গোল করা অনেক সুযোগই পায় বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। তবে গোলের সেই সুযোগ কাজে লাগাতে না পারায় ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়ে থাকে তারা। দীর্ঘদিনের এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে চান বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক জামাল ভুঁইয়া। সোমবার ঢাকার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অন্যান্য দিনের মতো অনুশীলনে ঘাম ঝরায় লাল-সবুজ বাহিনী। আগামী ১০ সেপ্টেম্বর তাজিকিস্তানের দুশানবেতে তারা ফিফা বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের গ্রুপ ম্যাচে মোকাবেলা করবে আফগানিস্তানকে। এই ম্যাচে জিতে শুভসূচনা করতে চায় জেমি ডের শিষ্যরা। আফগানদের বিরুদ্ধে গোলখরা কাটিয়ে ওঠার দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার জামাল ভুঁইয়া। তিনি বলেন, ‘এটা ঠিক বাংলাদেশের ফরোয়ার্ডরা অনেক গোলের সুযোগ তৈরি করে, কিন্তু তা কাজে লাগাতে পারে না। তখন মিডফিল্ডার ও ডিফেন্ডারদের এগিয়ে আসতে হয়। প্রিমিয়ার লিগে জীবন-মতিন সহজেই গোল পেয়েছে। কিন্তু ক্লাব ফুটবল আর ইন্টারন্যাশনাল ফুটবল এক জিনিষ নয়। কারণ ক্লাব পর্যায়ে আমাদের খেলতে হচ্ছে চার বিদেশী ফুটবলারের সঙ্গে। কিন্তু জাতীয় দলের হয়ে খেলতে গেলে বিদেশী ফুটবলারদের বিরুদ্ধে খেলতে হচ্ছে, এখানে তাদের কোন সাহায্য পাওয়া যাবে না। এখানে নিজেদেরই খেলতে হবে। এটা বড় একটা পার্থক্য।’ দলের বর্তমান ফিটনেস নিয়ে জামাল বলেন, ‘আমরা ফিট। তবে আমরা সর্বোচ্চ পর্যায়ের ফিট থাকার জন্য কাজ করছি। কিছু খেলোয়াড় (ঢাকা আবাহনীর) এখনও ক্যাম্পে যোগ দেননি। তারা যোগ দিলে আমরা সর্বাত্নকভাবে দলীয় কৌশল নিয়ে কাজ করবো। আমরা মনোসংযোগ করছি আমাদের সর্বোচ্চ লেভেলের ফিটনেসে উন্নীত হওয়ার জন্য। এবং আমরা অনুশীলন করছি খুবই গুরুত্ব সহকারে।’ ২০২২ কাতার বিশ্বকাপ ও ২০২৩ সালের এশিয়ান কাপের বাছাইয়ের দ্বিতীয় রাউন্ডে আফগানিস্তানের বিপক্ষে ম্যাচ সামনে রেখে শুক্রবার ক্যাম্প শুরু করেছে বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দল। ম্যানেজার সত্যজিৎ দাশ রূপুর কাছে রিপোর্ট করেন ১৯ ফুটবলার। বাকি সাত ফুটবলার রিপোর্ট করেননি। তারা সবাই ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের খেলোয়াড়। আগামী ২৮ আগস্ট পিয়ংইয়ংয়ে গিয়ে এএফসি কাপের আন্তঃ আঞ্চলিক সেমিফাইনালের প্লে-অফের দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ খেলবে আবাহনী (প্রতিপক্ষ উত্তর কোরিয়ার এপ্রিল টুয়েন্টি ফাইভ)। ফলে এখনই তাদের ডাক পাওয়া খেলোয়াড়রা ক্যাম্পে যোগ দিতে পারছেন না। প্রথম তিন-চারদিন খুবই ‘হার্ড ট্রেনিং’ হয়েছে বলে জানান জামাল। এই হার্ড ট্রেনিংয়ের পর নিজের শিষ্যদের ফিটনেস এখনও অটুট রয়েছে বলে বুঝতে পারেন কোচ জেমি। সেজন্য তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। ‘কোচ আমাদের ফিটনেসে খুশি। তবে তিনি আমাদের আরও ফিট দেখতে চান। সে লক্ষ্যেই আমরা পরিশ্রমের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছি।’ ভাষ্য জামালের। বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের খেলা শেষ হয়েছে গত ৩ আগস্ট। এরপরেই আবাহনী বাদে বাকি ক্লাবের ফুটবলাররা, বিশেষ করে জাতীয় দলের ফুটবলাররা ছুটিতে বাড়ি চলে যান। অতীতে দেখা গেছে এরকম পরিস্থিতিতে তারা নিজেদের ফিটনেস নিয়ে উদাসীন থাকেন, ফলে জাতীয় দলের ক্যাম্পে এল এ নিয়ে ঝামেলায় পোহাতে হয় বেচারা কোচকে। কিন্তু এবার বিস্ময়করভাবে তেমনটা হয়নি। কেননা প্রতিটি ফুটবলারই বাড়িতে গিয়েও নিজ উদ্যোগে ফিটনেস ধরে রেখেছেন, সঠিক খাদ্যাভাসও বজায় রেখেছেন। তাছাড়া জেমির নিদের্শনাও তেমনটি ছিল। শিষ্যরা সেটি যথাযথভাবে পালন করেছে বলে খুশি না হয়ে উপায় ছিল না জেমির। আফগানিস্তান পারতপক্ষে বাংলাদেশের জন্য একটি অজানা দল। কেননা সাম্প্রতিক সময়ে তাদের বিরুদ্ধে খেলেনি বাংলাদেশ। তাদেরকে বোঝার উপায় একটাই, ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ। এ নিয়ে বাংলাদেশ দলের প্রস্তুতি কেমন? জামাল এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দলের সবাই একসঙ্গে হলেই কোচ এ নিয়ে কাজ করবেন। আমরা সে অপেক্ষাতেই আছি। এখন ভিডিও নিয়ে কাজ করলে কোন লাভ হবে না। কারণ পুরো স্কোয়াড একসঙ্গে এখনও হয়নি।’ প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানিস্তানকে ‘শক্তিশালী’ হিসেবে আখ্যায়িত করা জামালের মন্তব্য, ‘অবশ্যই আফগানিস্তান অনেক শক্তিশালী দল। কারণ তাদের অধিকাংশ ফুটবলারই খেলেন জার্মান লিগে। দৈহিকভাবে তারা সুঠামদেহী। কয়েক বছর আগে তারা সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জিতেছিল। তবে আমরা তাদের সম্পর্কে অবগত আছি এবং তাদের ভয়ে ভীত নই।’ জামাল জানেন তাদের সামনে কঠিন সময অপেক্ষা করছে। এ পরিস্থিতিতে ‘মোটিভিশন’ই হতে পারে একজন খেলোয়াড়ের শক্তি। জামাল বলেন, ‘যে পরিস্থিতিই আসুক না হেন, মোটিভিশন সব সময় ধরে রাখতে হবে। এটা না থাকলে কোন লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এজন্য পেশাদার হতে হবে। সে চেষ্টাই করছি আমরা।’
×