ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাবির টিএসসি মিলনায়তনে মহাকালের ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’

প্রকাশিত: ০৮:৫৫, ২৬ আগস্ট ২০১৯

ঢাবির টিএসসি মিলনায়তনে মহাকালের ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালের ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের অংশ হিসেবে আজ সোমবার সন্ধ্যায় টিএসসি মিলনায়তনে মহাকাল নাট্য সম্প্রদায় প্রযোজনা ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নাটকের মঞ্চায়ন হবে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক আনন জামান রচিত ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নাটকটি নির্দেশনা দিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার এ্যান্ড পারফর্মেন্স স্টাডিস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আশিক রহমান লিয়ন। নাটকটি মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের ৪০তম প্রযোজনা। বঙ্গবন্ধু ও পরিবার পরিজনদের নির্মম হত্যাকা- নিয়ে গবেষণালব্ধ নাটক মহাপ্রয়াণের শোক আখ্যান ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন কবির আহামেদ, ফারুক আহমেদ সেন্টু, মোঃ শাহনেওয়াজ, মনিরুল আলম কাজল, পলি বিশ্বাস, সামিউল জীবন, শিবলী সরকার, শাহরিয়ার হোসেন পলিন, তারেকেশ্বর তারোক, আহাদুজ্জামান কলিন্স, সুমাইয়া তাইয়ুম নিশা, আরাফাত আশরাফ, স্বপ্নিল, ফয়সাল, পিয়াসী জাহান, কাজী তারিফ, তাজুল রনি, রেদোয়ান, সিয়াম রাব্বি, জুনায়েদ আহমেদ, নূর আকতার মায়া, রাফি, রিফাত হোসেন জুয়েল, ইকবাল চৌধুরী, মীর নাহিদ আহসান ও মীর জাহিদ হাসান। নাটকটির নেপথ্য শিল্পীরা হলেন- মঞ্চ, আলো, পোশাক ও আবহসঙ্গীত পরিকল্পনায় আশিক রহমান লিয়ন, এ্যানিমেশন ও আবহসঙ্গীত সম্পাদনায় কাজী মোহাইমিনুল হক, কোরিওগ্রাফি আমিনুল আশরাফ, পোস্টার ডিজাইন দেব্যেন্দু উদাস, রূপসজ্জা শিল্পী শুভাশীষ দত্ত তন্ময়, সেট ও প্রপস ব্যবস্থাপক রাজিব হোসেন, প্রযোজনা ব্যবস্থাপক ইকবাল চৌধুুরী, সহমঞ্চ অধিকর্তা শিবলী সরকার, মঞ্চ অধিকর্তা কবির আহামেদ, প্রযোজনা সমন্বয়ক মোঃ শাহনেওয়াজ, প্রযোজনা অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান ও সামগ্রিক তত্ত্বাবধানে আফজাল হোসেন। ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’ নাটকের কাহিনীতে তুলে ধরা হয়েছে ১৪ আগস্ট ১৯৭৫ রাত্রির দুপুর- বালুঘাট নির্মাণাধীন বিমানবন্দর। তখন শহরটির মাথার ওপর একটি কালো রঙের সুগোল চাঁদ ঝুলছিল- আর তা থেকে বৃষ্টিবিন্দুর মতো ফোটা ফোটা রাত্রি গড়িয়ে পড়ছিল খুনীদের চোখ আর চিবুকে। প্যারেডের নাম করে তাড়িয়ে আনা হয়েছে। অপেক্ষমাণ শতাধিক সেনার মুখোমুখি দাঁড়ায় দীঘল কালো ছায়াগুলো- ভয়ঙ্কর জাতি বিনাশী শব্দে খুনী মেজরদের চোয়াল নড়ে ওঠে- উচ্চারিত হয় ষড়যন্ত্রের সেই অংশটি- মাকড়ের জাল পেতে যার প্রতিটি শব্দ ধৃত হয়েছে। তাদের ক্রয়কারী বেনিয়া আর ভাড়াটে এজেন্ট রচনা করে দিয়ে গেছে যাদুময় কথার ইন্দ্রজাল। মিথ্যা ভাষণ যথাযথ আবেগ ব্যবহার করে উচ্চারণ করতে পারলেই হলো- বিশ্বাস যোগ্যতার ক্ষেত্র প্রস্তুত। এক মুঠো মার্বেল চালানোর মতো কথাগুলো পূর্বেই ক্যান্টনমেন্টে ছড়িয়ে দেয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্র পাঠ শেষে আরম্ভ হয় খুনীদের অভিযাত্রা- ভোর তখন রাত্রির পেটেপীঠে লেগে থাকা ভ্রুণ। দোজখের দেয়াল সরে গিয়ে হিম অথচ অগ্নিময় আভায় উন্মোচিত হয় খুনীদের নড়াচড়া। দোজখের দেয়ালে আঁকা চিত্রের পাপীরা আড়মোড়া ভেঙ্গে- মুখ ব্যাদান করে চেয়ে আছে তারই প্রতিছায়ার দিকে। খুনী মেজর আর বিভ্রমে ভরা সেনাগণ হত্যার হাতিয়ার আর বিকট শকট নিয়ে ছুটে চলেছে ধানমন্ডি অভিমুখে- তাদের লক্ষ্য মানচিত্রের কাঁধে চাপিয়ে দেবে ইতিহাসের সবচেয়ে ভারি লাশের বোঝা। ‘শ্রাবণ ট্র্যাজেডি’র কাহিনী বয়ানে সরাসরি ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট ব্যবহার না করে ইতিহাসের চরিত্র সকল ও ঘটনার বর্তমান ব্যাখ্যামূলক প্রতিভঙ্গী রচিত হয়েছে। খুনীদের দাঁড় করানো হয়েছে রঙ্গমঞ্চের কাঠগড়ায়। এই অনুভব ব্যক্ত হয়েছে ‘প্রাণ হরণ করা যায় চেতনা নয়’। নাটকের শেষে বঙ্গবন্ধু কোন এক চারণ কবির গীতপয়ারে নাজারাথের যিশুর সমান্তরাল হয়ে ওঠে। এক শহর মানুষের সম্মুখে ক্রুশ ঠুকে যাকে হত্যা করেছিল- হত্যাকারী। আর সে সমস্ত গ্লানিকর ক্লেদ থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিল শহরে। তেমনি এক পুনরুত্থান রচিত হয় চারণ কবির গানে- যেখানে আকাশ ব্যাপৃত আওয়াজ- জয় বাংলা।
×