ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

জি-৭ সম্মেলনে ইরান ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ ফ্রান্স ও ব্রিটেন

প্রকাশিত: ০৮:৪১, ২৬ আগস্ট ২০১৯

 জি-৭ সম্মেলনে ইরান ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ ফ্রান্স ও ব্রিটেন

ফ্রান্স ও ব্রিটেন জি-৭ সম্মেলনে ইরান ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান গ্রহণ করে। শনিবার ফ্রান্সের বিয়ারিৎসে জি-সেভেন (জি-৭) শীর্ষ বৈঠক শুরুর একদিন আগেই তারা নিজেদের কর্মপরিকল্পনা ঠিক করে। জলবায়ু পরিবর্তন, জ্বালানি, অভিবাসন ছাড়া সম্মেলনের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল ইরান। ইয়াহু নিউজ। ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তি রক্ষার চেষ্টা চালিয়ে আসছে ইউরোপীয় দেশগুলো। গত বছর মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই চুক্তি থেকে তার দেশকে প্রত্যাহার করে নিয়ে ইরানের ওপর একতরফাভাবে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন। এর ফলে তেহরানের অর্থনীতি মুখ থুবড়ে পড়ে। অন্যদিকে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক বজায় রাখতে চাপে পড়ে ইউরোপীয় দেশগুলো। ইরান ছাড়াও ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বেরিয়ে যাওয়ার আগেই এটি ছিল জি-৭ এর শেষ শীর্ষ সম্মেলন। তাই এবারের সম্মেলনে যুক্তরাজ্যের দিকে সবার দৃষ্টি বিশেষভাবে ছিল। বিয়ারিৎসে ব্রিটিশ কূটনৈতিক সূত্র জানায়, ‘আমরা জেসিপিওএ’র (জয়েন্ট কম্প্রিহেনসিভ প্ল্যান অব অ্যাকশন নামে পরিচিত পরমাণু চুক্তি) দৃঢ় সমর্থক। আমরা মনে করি, এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হচ্ছে না। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এটা অব্যাহত রয়েছে এবং আমি মনে করি না, ব্রিটিশ সরকারের অবস্থানের কোন পরিবর্তন হবে।’ এটা তাৎপর্যপূর্ণ যে, ইরান চুক্তি পুরোপুরি মেনে চলছে। কিন্তু জনসন যখন যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে জানবেন, তখনও এতে বাস্তবিক কোন পরিবর্তন হবে। সূত্র জানায়, ‘যুক্তরাষ্ট্র যদি লক্ষ্য অর্জনে (ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাচ্ছে না) অন্য কোন ধারণা দেয়, তাহলে সেটা নিয়ে আলোচনা করতে আমরা সানন্দে রাজি।’ ই থ্রি নামে পরিচিতি আন্তর্জাতিক পরমাণু চুক্তির ইউরোপীয় পক্ষগুলো (ফ্রান্স, ব্রিটেন ও জার্মানি) ওয়াশিংটনের চাপ সত্ত্বেও একজোট রয়েছে। ক্রমাগত চুক্তির শর্ত থেকে ইরানের সরে আসার পরও উত্তেজনা প্রশমনে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে প্যারিস। বিয়ারিৎসে এক ফরাসী কর্মকর্তা বলেন, ‘ইউরোপীয় প্রথাগত পছন্দের সঙ্গেই আছে গ্রেট ব্রিটেন... হোক সেটা জলবায়ু, জীববৈচিত্র্য, ইরান কিংবা প্রতিরক্ষা। ইরানের বিষয়ে দেশ তিনটির একসঙ্গে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফের সঙ্গে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেছেন। সঙ্কট সমাধানে বিভিন্ন প্রস্তাব সম্পর্কে তারা আলোচনা করেন। এছাড়া মার্কিন নিষেধাজ্ঞা কিভাবে কমানো যায় এবং ইরানকে কিভাবে অর্থনৈতিক ক্ষতিপূরণ দেয়া যায় সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে। ইরানী পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ বলেন, আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। জারিফের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইলনা জানায়, ‘কিভাবে পরমাণু চুক্তি রক্ষা করা যায়, সে বিষয়ে ফ্রান্স কিছু পরামর্শ তুলে ধরেছে এবং আমরাও কিছু পরামর্শ উপস্থাপন করেছি। আর উভয় পক্ষের কী পদক্ষেপ নেয়া উচিত সেটাও তুলে ধরা হয়েছে।’ জারিফ বলেন, ‘পরমাণু চুক্তির বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল এবং পরমাণু চুক্তির পর ও যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার পর কী প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছিল অবশ্যই সেটার ওপর নির্ভর করছে।’ সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ট্রাম্পের সঙ্গে এসব প্রস্তাব আলোচনা করার কথা রয়েছে ম্যাক্রোঁর।
×