ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

রেজা সেলিম

তিনটি কথোপকথন ও চিরচেনা বঙ্গবন্ধু

প্রকাশিত: ১১:৫৭, ২৫ আগস্ট ২০১৯

তিনটি কথোপকথন ও চিরচেনা বঙ্গবন্ধু

যারা বলেন বঙ্গবন্ধু তাঁর দেশ পরিচালনার শেষের দিকে মার্কিন নীতির কাছে নিজেকে প্রায় সমর্পণ করেছিলেন, সেসব অলীক প্রচারণার যুতসই জবাব আছে খোদ মার্কিন দলিলপত্রেই। একটু কষ্ট করে নতুন প্রজন্মকে সেগুলো খুঁজে বের করে নিতে হবে। কারণ স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসে আমাদের অনেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে। ১৯৭২ সাল থেকেই দুর্ভাগ্যবশত বাংলাদেশকে এমন সব পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে তার খুঁটিনাটি প্রমাণগুলো জেনে এখন প্রকাশ করা দরকার, যাতে স্বাধীনতাবিরোধী ও অপশক্তির ক্রমাগত সম্মিলিত উদ্যোগে বাধা দেয়া যায়। এটা অনেকটা অপর একটি মুক্তিযুদ্ধের মতোই। আমাদের মাতৃভূমিকে রক্ষা করতে হলে তাকে পাহারা দিয়েই রাখতে হবে। বঙ্গবন্ধুর ব্যক্তিত্বের কাছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ফোর্ড, পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিসিঞ্জার ও একজন মার্কিন কূটনীতিকের ম্লান হয়ে যাওয়া অন্তত তিনটি কথোপকথনের উল্লেখ করে আজকের এই রচনা। বাংলাদেশ ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। স্বাধীন সার্বভৌম দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশের পরেও কেন জাতিসংঘে পৌঁছাতে এতদিন বিলম্ব হলো সে অন্বেষণও জরুরী ও গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের নাম বহুবার আলোচিত হয়েছে জাতিসংঘের দরবারে। পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে নিরাপত্তা পরিষদে বাংলাদেশের পক্ষে রাশিয়ার ভেটো বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামকে বিশ্বব্যাপী পরিচিত করেছিল। অথচ জাতিসংঘে চীন সদস্যপদ পায় ১৯৭১ সালে, যারা ২৫ বছর আগে আবেদন করেও সদস্যপদ পায়নি। সেই চীন ও তার অক্ষশক্তির হস্তক্ষেপই মূলত বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তিকে দীর্ঘায়িত করেছিল। বঙ্গবন্ধুর অবিচল কূটনৈতিক নির্দেশনার মাধ্যমে বাংলাদেশ মাত্র দুই বছরে চীন ও তার সেই অক্ষশক্তিকে দুর্বল করতে সমর্থ হয়েছিল। সদস্যপদ পেয়ে ১৯৭৪ সালের সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠিত জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সম্মেলনে বাংলাদেশ যোগ দেয় বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে। ৩০ সেপ্টেম্বর মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হেনরী কিসিঞ্জার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তাঁর হোটেলে দেখা করতে যান। নিউইয়র্কের ওয়ার্ল্ডরফ টাওয়ারে বঙ্গবন্ধুর সুইটে এই সাক্ষাতে কিসিঞ্জারের সঙ্গে ছিলেন মার্কিন সরকারের তিনজন উর্ধতন কর্মকর্তা। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল হোসেন ও যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হোসেন আলী। কিসিঞ্জারের সঙ্গে যে তিনজন ছিলেন তাদের একজন পিটার কনস্টেবল, যিনি এই সাক্ষাতের নোট নিয়েছিলেন, যা এখন মার্কিন দলিলপত্রের আর্কাইভে উন্মুক্ত। তাতে দেখা যায় বঙ্গবন্ধু কিসিঞ্জারের সঙ্গে এই সাক্ষাতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একজন অবিচল নেতার মতোই আচরণ করেছেন, যেখানে কিসিঞ্জার কখনও কখনও হোঁচট খেয়েছেন। কূটনৈতিক শিষ্টাচার অনুযায়ী আলোচনা শুরু করলেও (I am verz pleased to meet zou and to welcome zou to the United States) কিসিঞ্জারকে দেখা গেছে বঙ্গবন্ধুকে খুশি করার চেষ্টা করতে। যেমন তিনি বলছেন, ”It is a great pleasure to see zou here. In 1970 when Yahza Khan was here for the UN, he explained to me whz the elections in Pakistan would be well manipulated. He said there were 20 parties in East Pakistan. There would be no majoritz partz and Yahza would therefore have an excellent opportunitz to maneuver to control the situation. Then of course zou achieved zour spectacular majoritz, with 167 out of 169 seats in East Pakistan. Ever since then I have never believed political predictions, unless of course zou make them” (বঙ্গবন্ধুকে উদ্দেশ করে কিসিঞ্জার বলছেন, ‘আপনাকে এখানে দেখতে পেয়ে খুবই আনন্দ লাগছে। ১৯৭০-এ জাতিসংঘে যোগ দিতে ইয়াহিয়া খান যখন এখানে আসেন, তিনি আমাকে বোঝান, পাকিস্তানে নির্বাচনকে কেন তার পক্ষে কাজে লাগানো যাবে। তিনি জানান, পূর্ব পাকিস্তানে ২০টি দল আছে, কেউই সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে না। তখন পরিস্থিতি সামাল দেয়ার একটা সুযোগ পাবেন ইয়াহিয়া। এরপর তো পূর্ব পাকিস্তানের ১৬৯টি আসনের ১৬৭টিতে আপনি নাটকীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেন। এরপর থেকে রাজনৈতিক ভবিষ্যদ্বাণীতে আমি আর বিশ্বাস করি না...’)। উত্তরে বঙ্গবন্ধু খুবই দৃঢ়। বললেন, ‘নির্বাচনের আগে ঢাকায় এক সংবাদ সম্মেলনে আমি ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলাম। আমাকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল ৯০ শতাংশ ভোট পাব কি-না। বলেছিলাম, ৯৭ শতাংশ পাব। আমি এত নির্বাচন করেছি যে, অবশ্যই আমি ইয়াহিয়ার চেয়ে ভাল জানি। তার আইডিয়া, কর্মকৌশল আমি ভালই বুঝি...(I gave mz prediction before the election at a press conference in Dacca. I was asked if I would get 90% of the votes. I said I would get 97%. Of course, I have contested so manz elections that I knew better than Yahza. I understood his ideas and plans to maneuver) । প্রতি উত্তরে কিসিঞ্জার যোগ করেন যাতে বঙ্গবন্ধুকে খুশি করার চেষ্টা করতে দেখা যায়, ‘ফলাফল কী হবে তা যদি সে জানত তাহলে কোন নির্বাচনই হতো না। চীন যাওয়ার পথে তার সঙ্গে আমার শেষ দেখা, আমার জন্য যে সফরের ব্যবস্থা সে করেছিল। আমার সম্মানে সে একটা ডিনার দিয়েছিল। টেবিলে আমাকে বলল, ‘লোকে আমাকে একনায়ক বলে।’ তারপর সবাইকে উদ্দেশ করে সে বলল, ‘আমি কি একনায়ক?’ সবাই বলল, ‘না।’ তারপর আমাকে জিজ্ঞেস করলে বললাম, ‘আমি ঠিক জানি না। তবে একজন একনায়ক হিসেবে খুবই বাজে একটা নির্বাচন করেছেন আপনি।’ যদি কেউ নিবিষ্ট মনে এই দলিল নিরীক্ষণ করেন তাহলে দেখতে পাবেন বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কথোপকথনে কিসিঞ্জার কেমন নিষ্প্রভ হয়ে পড়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু তাঁর স্বভাবসুলভ আথিতেয়তায় কিছু খাবে কি-না জানতে চাইলে কিসিঞ্জার চা খেতে চান। বঙ্গবন্ধু চা পরিবেশনের ইঙ্গিত করে বলেন, ‘আমরা কিন্তু চা উৎপাদন করি।’ এই সাক্ষাতে কিসিঞ্জার ও বঙ্গবন্ধুর মধ্যে দুই দেশের সম্পর্ক, উন্নয়ন সহায়তা ছাড়াও আরও বেশ কিছু বিষয়ে আলোচনা হয়, যার ঐতিহাসিক মূল্য অনেক। এক পর্যায়ে বঙ্গবন্ধু বলেন, ‘জেল থেকে ছাড়া পাবার পরে আমার দেশে মার্কিনবিরোধী মনোভাব প্রবল ছিল। কিন্তু এখন দেশের মানুষ মার্কিনীদের প্রতি বন্ধুভাবাপন্ন হয়েছে।’ এই প্রসঙ্গে কিসিঞ্জার বলেন, ‘বিচক্ষণতার পরিচয় দিয়েছেন আপনি। পাকিস্তান ও যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপিয়ে তোলা এবং তাদের কঠোরভাবে মোকাবিলা করার প্রবল প্রলোভন নিশ্চয়ই ছিল। বাঙালীদের প্রতি বরাবরই আমরা ভীষণ সহানুভূতিশীল’...’It is a natural friendship on our side’– কিসিঞ্জার এরকম কথা বললেও শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ও বঙ্গবন্ধুর প্রতি তার মনোভাব কী ছিল ইতিহাস সে সাক্ষী দিয়েছে। চীনের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নিয়ে কিসিঞ্জার বঙ্গবন্ধুকে প্রশ্ন করেন, চীনাদের ব্যাপারটা কি? তারা আপনার দেশে নাশকতামূলক কিছু কি করছে? এতদিনে আপনাদের সম্পর্ক হয়েছে কি? জবাবে বঙ্গবন্ধু সুস্পষ্ট স্বরে বলেন, Not zet. We know each other. I went to Peking in 1958 and thez came to Dacca in 1962. I want friendship with China but we have our self-respect. I can offer friendship but the initiative has to come from them also|” কিসিঞ্জার এ সময় ইঙ্গিত করেন, চীন সম্ভবত আগামী বছর (হিসেবে ৭৫’-এর মাঝামাঝি হবে) থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করা শুরু করবে। বাঙালীদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উল্লেখ করে এক পর্যায়ে কিসিঞ্জার মন্তব্য করেছিলেন, ‘বাঙালীরা বিদ্রোহী জাতি। হার্ভার্ডে তোমার পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ আমার অনেক ছাত্র ছিল, যাদের আমি জানি।’ এই বিদ্রোহী ও দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীদের কেমন করে পাকিস্তানীরা হত্যা করেছে বঙ্গবন্ধু তার উল্লেখ করে বলেন, পাকিস্তানী জেনারেল ফরমান আলী খান একটা চিরকুটে লিখেছিল, ‘পূর্ব পাকিস্তানের সবুজ মাটিকে লালে রঞ্জিত করে তুলতে হবে।’ ওটা আমরা পেয়েছি, যা সবিস্তারে বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের অন্যায় ভূমিকা তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সময়োচিত প্রসঙ্গের অবতারণা করে কিসিঞ্জারকে প্রকৃত চিত্র তুলে ধরতে প্রয়াসী ছিলেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিরও ধারণা উল্লেখ করেন, যা কিসিঞ্জারের জানা দরকার ছিল। বঙ্গবন্ধু বলেন, ’We have a foreign policz that is neutral, non-aligned and independent|’।” পরেরদিন অক্টোবরের ১ তারিখ বেলা ৩টায় আমন্ত্রিত হয়ে বঙ্গবন্ধু হোয়াইট হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ডের সঙ্গে সাক্ষাত করেন। আলাপের শুরুতেই বঙ্গবন্ধু মিসেস ফোর্ডের শারীরিক অসুস্থতার খবর নেন ও বিস্ময়করভাবে প্রেসিডেন্ট ফোর্ড বঙ্গবন্ধুকে বিস্তারিত অবহিত করতে শুরু করেন। ফোর্ড জানান যে, ’It was a shock to us. We had to make the decision for the operation, then wait for them to determine malignancz, and so forth’. ফোর্ড এ সময় বঙ্গবন্ধুকে জানান যে, মিসেস ফোর্ডের শরীরে ৩০টির মতো নোড (এক ধরনের টিউমার) শনাক্ত হয়েছে, যার মধ্যে ২টি ইতোমধ্যে ক্যান্সার বলে চিহ্নিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু এ সংবাদে দুঃখ প্রকাশ করেন ও তাঁর দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। যদিও প্রেসিডেন্ট ফোর্ড এ বিষয়ে তাঁর উদ্বেগের কথা বঙ্গবন্ধুকে অবহিত করেন। কূটনৈতিক জগতের বন্ধুদের কাছে শুনেছি এরকম ব্যক্তিগত তথ্য সাধারণত খুব ঘনিষ্ঠ পর্যায়ের শ্রদ্ধাবোধ না থাকলে প্রকাশ হয় না। বিশেষত মার্কিন প্রেসিডেন্টের বেলায় তো নয়ই। দলিল সূত্রে লক্ষণীয় যে, ওভাল হাউসের বারান্দায় ফটোসেশনের পরপরই মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর কথোপকথন শুরু হয় ও বঙ্গবন্ধুর মতো ব্যক্তিত্বের সামনে দুই মাস আগে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেয়া যিনি কি-না বঙ্গবন্ধুর চেয়ে বয়সে ৭ বছরের বড় ছিলেন গড়গড় করে তাঁর স্ত্রীর ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য তথ্য শেয়ার করছিলেন। প্রেসিডেন্ট ফোর্ড যখন বঙ্গবন্ধুকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই প্রথম কোন মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বাংলাদেশের কোন সরকার প্রধানের সাক্ষাৎ হলো, তখন বঙ্গবন্ধু তার জবাবে বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি আপনার সঙ্গে আমার জনগণের জন্য কথা বলার সুযোগ পেয়ে খুশি হয়েছি’ (Yes. I am happz to have the opportunitz to talk with zou about mz people) । মার্কিন এই দলিল পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, প্রতিটি প্রসঙ্গে বঙ্গবন্ধু কি অসাধারণ শব্দ ব্যবহার করে এই গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাৎ আলোচনাকে সমৃদ্ধ করেছেন। বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের পটভূমি তুলে ধরে বঙ্গবন্ধু তাঁর গৃহীত উন্নয়ন কর্মসূচী ব্যাখ্যা করেন ও যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল উন্নত দেশের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই সহযোগিতা কামনা করেন। এক পর্যায়ে প্রেসিডেন্ট ফোর্ড বাংলাদেশের পাট উৎপাদন সম্পর্কে ও আন্তর্জাতিক ঋণ সহায়তা প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে বাংলাদেশের আলোচনা হয়েছে কি-না জানতে চান। বঙ্গবন্ধু বিশ্বব্যাংকসহ অন্যদের সঙ্গে আলাপ চলছে বলে জানান। ফোর্ডের সঙ্গে আলোচনায় বঙ্গবন্ধু কখনও কাঁচুমাচু করে কিছু চেয়েছেন এমন তথ্য নেই। যদিও পরের সরকারের সঙ্গে নানা আলোচনার মার্কিন দলিলে এরকম তথ্য আছে যে, মার্কিনীদের খুশি করতে বাংলাদেশের একজন রাষ্ট্রপ্রধান অস্ত্র কিনতে আগ্রহী বলে চিঠি দিয়েছিলেন, যা যুক্তরাষ্ট্র সরকারকে কৌতূহলী করেছিল। বঙ্গবন্ধুর দৃঢ়চিত্তে তাঁর দর্শন ব্যক্ত করার বক্তব্য পাওয়া যায় বাংলাদেশে মার্কিন রাষ্ট্রদূত ইউজেন বোস্টারের সঙ্গে শেষ সাক্ষাতে। হত্যাকা-ের মাত্র দিন দশেক আগে ৫ আগস্ট ১৯৭৫ বোস্টার বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তিনি তাদের দু’জনের আলোচনার যে প্রতিবেদন ওয়াশিংটনে পাঠান সেখানে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু বলছেন, ‘আমি মার্ক্সিস্ট নই। আমি একজন সমাজতান্ত্রিক কিন্তু সেটা আমার নিজস্ব পথে। আমি সব দেশের বন্ধু হতে চাই কিন্তু তার মানে এই নয় যে, কোন দেশ ভাবুক আমাকে কী করতে হবে সেটা সে বলে দেবে- ”I am not a Marxist. I am a Socialist, but a Socialist in mz own waz. I want to be friends with all countries but I don’t want anz countrz to think it can tell me what to do|” তৃতীয় বিশ্বের অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধুর মুখেই এমন উচ্চারণ মানায়। এখন সময় হয়েছে প্রকৃত তথ্য যাচাই-বাছাই করে মূল দলিলগুলো বিভিন্ন সূত্র থেকে বের করে আনা। নতুন প্রজন্মের দেশপ্রেমিক সকলের দায়িত্ব বাংলাদেশ, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধু- এই তিনের সমন্বিত যে ইতিহাস তা অবিকৃত করে তুলে ধরা। বাংলাদেশের মানুষ কখনও মাথা নিচু করেনি। এরা বীরের জাতি, যে জাতির নিজস্ব উন্নয়ন দর্শন রয়েছে, যার মূল প্রোথিত হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর হাতে। আমাদের সেসব জানতে হবে ও জানাতে হবে। লেখক : পরিচালক, আমাদের গ্রাম গবেষণা প্রকল্প [email protected]
×