ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রতি বছর গড়ে পাচার হয় ৫৮ বাঘ ॥ জরিপ

প্রকাশিত: ১০:৫৯, ২৫ আগস্ট ২০১৯

প্রতি বছর গড়ে পাচার হয় ৫৮ বাঘ ॥ জরিপ

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ গত ১৮ বছর ধরে বিশ্বের ৩২ দেশ থেকে পাচারের জন্য ২ হাজার ৩৫৯ বাঘ শনাক্ত করার ঘটনায় ৫১ বাঘ বাংলাদেশের বলে উঠে এসেছে এক জরিপে। ‘স্কিন এ্যান্ড বোনস আনরিজলভড’ শিরোনামে গত বুধবার এই গবেষণা প্রতিবেদন নিজেদের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করেছে যুক্তরাজ্যের বেসরকারী প্রতিষ্ঠান ট্র্যাফিক ইন্টারন্যাশনাল। খবর বিডিনিউজের। ২০০০ থেকে ২০১৮ সাল পর্যযন্ত সংগৃহীত তথ্যের ভিত্তিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনটিতে ট্রাফিকের ভাষ্য, গত ১৯ বছরের প্রতি বছর ১২০টি বাঘ হারিয়ে যায়। ‘চামড়ার জন্য প্রতি বছর গড়ে প্রায় ৫৮টি বাঘ পাচার করা হয়। পাচারের ঘটনায় জীবিত ও মৃত আস্ত বাঘ মেলার ঘটনা বাড়ছে ২০১৬ সাল থেকে।’ ভারতে বাঘের সংখ্যা ২ হাজার ৯৬৭টি। বাঘের পাচার ও অবৈধ বাণিজ্যেও যে শীর্ষে আছে দেশটি, তা দেখা গেছে ট্র্যাফিকের গবেষণায়। তাদের গবেষণার সময়কালে ভারতের ৪৬৩টি পাচারের ঘটনা থেকে ৬২৫টি বাঘ শনাক্ত করা হয়। সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে জরিপ চালিয়ে ১১৪টি রয়েল বেঙ্গল টাইগার পাওয়ার কথা এ বছরের মে মাসে জানিয়েছিল বন বিভাগ। এর তিন মাসের মাথায়, দুই দিন আগে সুন্দরবনের ছাপড়াখালী এলাকা থেকে এক বাঘিনীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। প্রায় ৭ ফুট দৈর্ঘ্যরে এই বাঘিনীর বার্ধক্যজনিত মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে বন বিভাগ। ট্র্যাফিকের প্রতিবেদনে বাংলাদেশসহ ১৩টি এশীয় অঞ্চলের দেশের বাঘ পাচারের চিত্র উঠে এসেছে। এসব ঘটনায় কখনও মিলেছে বাঘের আস্ত দেহ, কখনও অঙ্গপ্রত্যঙ্গ। ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে পাওয়া গেছে বাঘের চামড়া, আর ২৯ শতাংশ ঘটনায় আস্ত দেহ এর মধ্যে ১৫ শতাংশ ছিল মৃত বাঘ। একটি বাঘের চারটি শ্বাদন্ত দাঁত থাকে। ১০ কেজির মতো হাড় থাকে। ফলে কোন ঘটনায় ২টি মাথার খুলি ও ১৩টি দাঁত পাওয়ার অর্থ অন্তত ৪টি বাঘ হত্যা করা হয়েছিল এই পাচারের ঘটনায়। যদি ৩৫ কেজি হাড় পাওয়া যায়, তবে তিনটির বেশি বাঘ হত্যা করা হয়েছিল বলে জানাচ্ছে ট্র্যাফিকের গবেষণা পদ্ধতি। বাঘের আস্ত দেহ বা অঙ্গপ্রত্যঙ্গ উদ্ধারের ঘটনা দিয়ে অবৈধ পাচারের পুরো চিত্রটি যে বোঝা সম্ভব নয় তাও জানাচ্ছে সংস্থাটি। বাঘ পাচার ও হত্যার অসংখ্য ঘটনা অগোচরেই থাকছে বলে জানাচ্ছে তারা। তবে বাঘ পাচারকারী ও হত্যাকারীদের ধরা পড়ার তথ্যও রয়েছে প্রতিবেদনে। মোট ৫৯১টি ঘটনায় এক হাজার ১৬৭ জন আটক হয়। এর মধ্যে ৩৮ শতাংশ আটকের ঘটনা ভারতে। মোট ১৯৯ ঘটনায় বাঘ পাচারে জড়িত হওয়ার কারণে কারাবাসের রায় হয়। গড়ে ৪ বছর পর্যন্ত কারাবাসের শাস্তির কথা জানাচ্ছে ট্র্যাফিকের গবেষণাটি।
×