ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বাটারফ্লাই পার্ক

প্রকাশিত: ০৯:২২, ২৪ আগস্ট ২০১৯

 বাটারফ্লাই পার্ক

কি অনাবিল শান্তি প্রকৃতির আদলে ঢেকে থাকা অনিন্দ্যসুন্দর স্পটগুলোতে। আর প্রকৃতি যেন হাতছানি দিয়ে ডাকছে তার ছায়াতলে। তাই পর্যটকরা ভ্রমণপিপাসু হয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ছে প্রকৃতির ছায়াতলে। বন্ধের দিনগুলো কেন যেন একটু বাকি থেকে যায় ঘুরে বেড়াতে না পারলে। যারা ভ্রমণপিপাসু বা যারা প্রকৃতির কাছে যেতে চায়, তারা একটু সুযোগ পেলেই পরিবার পরিজন বা বন্ধু-বান্ধব নিয়ে ছুটে যায় বনে বাঁদাড়ে। চট্টগ্রামে প্রায় সব স্পটই প্রকৃতির আদলে গড়া বা প্রকৃতিই সৃষ্টি করে দিয়েছে সুন্দরের পূজারী করে। শুধু পানি আর বালুকা রাশির মিলনমেলা রয়েছে পতেঙ্গার সমুদ্র সৈকতকে ঘিরে। এদিকে ফয়’স লেক এক সময়ের প্রাকৃতিক স্পট হলেও তা ব্যবসায়ীদের কৃত্রিমতায় প্রকৃতির ছোঁয়া ধূলিসাৎ হওয়ার পথে। সম্পূর্ণ কৃত্রিম আঙ্গিকে গড়ে তোলা হয়েছে বহদ্দারহাটের স্বাধীনতা পার্ক। এখানে রয়েছে প্রাচীন স্থাপত্যের মডেল নিদর্শন। যারা দেশ ঘুরে দেখার সুযোগ পাচ্ছে না তারা এক আঙ্গিনায় পুরো দেশটাকে উপলব্ধি করতে পেরে খুশিতে আটখানা। তবে দেশের একমাত্র নতুন মাত্রা হিসেবে পর্যটকদের মন কেড়েছে বাটারফ্লাই পার্ক। পতেঙ্গায় ইন্ট্রাকো গ্রুপের উদ্যেগে গড়ে তোলা এ পার্কে রয়েছে প্রকৃতি ও কৃত্রিমের সংমিশ্রণ । বাটাফ্লাই পার্কের আঙ্গিনায় প্রর্কতির অপার ভালবাসার কীট প্রজাপতি দিয়ে গড়ে তোলা স্পট। চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় কর্ণফুলী নদীর কোল ঘেঁষে বয়ে চলা পথ ধরে শাহ আমানত বিমানবন্দর পেরুলেই দেশের একমাত্র নয়নাভিরাম এই বাটারফ্লাই পার্ক। মৃত নয় জীবন্ত প্রজাপতির উড়ে বেড়ানো দেখতেই পরিবার পরিজন বা দলবল নিয়ে ছুটে আসছে পর্যটকরা। এ পার্কে তারের জালে তৈরি জোনে শত শত প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে। হরেক রকমের প্রজাপতি উড়ে বেড়াচ্ছে অথবা মধু আহরণে ব্যস্ত প্রজাপতির ছোটাছুটি। সত্যিই অবাক হওয়ার মতো প্রজাপতিগুলো। রঙিন ডানা মেলে উড়ে বেড়াচ্ছে এসব প্রজাপতি। মন যদি চায় আপনি ছবিও তুলে নিতে পারেন সুন্দর ডানায় ভর করা প্রজাপতির। আগতদের আকর্ষণে কর্তৃপক্ষও জানাচ্ছে, ‘আসুন এবং স্পর্শ করুন জীবন্ত প্রজাপতি’ এমন স্লোগান সংবলিত হ্যান্ডবিলে রয়েছে পার্কের সামগ্রিক চিত্র। আবারও মানুষকে জাগ্রত করতে ও সচেতনতা বাড়াতে পার্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে ‘সেভ দ্য বাটারফ্লাই-সেভ দ্য আর্থ।’ পতেঙ্গার এ পার্কে রয়েছে পর্যটকদের রাতযাপনের জন্য মনোরম পরিবেশে আরামদায়ক রিসোর্ট। এ রিসোর্টে স্ট্যান্ডার্ড, সুপার ডিলাক্স কক্ষ ও বাটারফ্লাই স্যুটে রাতযাপন করতে পারবে আগতরা। এ পার্কে ক্রমান্বয়ে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, আউটডোর ও ইনডোর পার্টি সেন্টার। এসব সেন্টারে বার্থডে পার্টি, পিকনিক, কর্পোরেট মিটিং, সেমিনার ও স্কুল ডে আউট প্রোগ্রাম করার মত নয়নাভিরাম স্থান। দেশের একমাত্র প্রজাপতি পার্কে রয়েছে ট্রপিক্যাল গার্ডেন, বাটারফ্লাই জোন, বাটারফ্লাই মিউজিয়াম, বাটারফ্লাই রিএরিং রুম, নার্সারি, পার্টি হল, কৃত্রিম লেক, ঝর্ণা, ¯েœপ জোন, ফিশ ফিডিং জোন, বাটারফ্লাই ফিডিং জোন, রিক্রিয়েশন জোন, চিলড্রেন প্লে জোন। তবে ছোট্ট লেকের ঘাটে বাধা নৌকায় চড়ে ছোট্ট লেকের পানিতে ঘুরে বেড়াতে পারবেন। আগতদের ক্ষুদা নিবারণে এ পার্কে যে বাটারফ্লাই রেস্টুরেন্ট রয়েছে তাতে পাওয়া যাচ্ছে ফাস্টফুডসহ দুপুরের খাবার ও নৈশ খাবারের ব্যবস্থা। তৈরি করা হয়েছে কৃত্রিম লেক। লেকের ধারে ঘাট বাধানো রয়েছে। যেখানে আগতরা একটু শান্তির পরশ নিতে পারেন মনের প্রশান্তির জন্য। টাকা খসালেই আনন্দ নিতে পারবেন সকলে মিলে। রয়েছে কৃত্রিম ঝরণা। যেখানে জলরাশি তার গতিতেই ছমছম-ঝিরঝির শব্দে পড়ছে। বানানো পাথরের ফাঁকে ফাঁকে এসব পানি রেকে গিয়ে পড়ছে। সম্পূর্ণ প্রকৃতির আদলেই গড়ে তোলা হয়েছে এ ঝরণাটিও। তবে আকর্ষণীয় একটি স্পট রয়েছে যা টিনেজদেরও কাছে টানে ছবি তুলতে। সেটি হলো হার্ট স্পট। বিশাল আকৃতির একটি হার্ট তৈরি করে মাঝখানটা ফাঁকা রাখা হয়েছে ছবি তোলার নিমিত্তে। নারিকেল বাগানে প্রজাপতির আকৃতিতে গড়া চেয়ার ও টেবিল পাতানো রয়েছে। লেকের ধারের এই নারিকেল গাছগুলো এলাকাজুড়ে যেন অনাবিল বাতাস বিলিয়ে দিচ্ছে। একটু হিম শীতল পরশ পেতে আপনাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। -মাকসুদ আহমদ, চট্টগ্রাম অফিস থেকে
×