ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘দুষ্ট’ ঠিকাদারদের কালোতালিকা করুন ॥ পরিকল্পনামন্ত্রী

প্রকাশিত: ১০:৫৩, ২৩ আগস্ট ২০১৯

‘দুষ্ট’ ঠিকাদারদের কালোতালিকা করুন ॥ পরিকল্পনামন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ‘দুষ্ট’ ঠিকাদারদের কালোতালিকা করার নির্দেশ দিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। বৃহস্পতিবার এনইসি অডিটরিয়ামে পাবলিক-প্রাইভেট স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে এক আলোচনা সভায় পরিকল্পনামন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের এ নির্দেশ দেন। এছাড়াও যেসব ঠিকাদার সরকারী বিভিন্ন প্রজেক্ট পান বা নেন, তাদের প্রান্তিক পর্যায়ে প্রজেক্টের সব হিসাব দিতে হবে। দুষ্ট ঠিকাদার প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমি ফুললি সাপোর্ট করছি, দুষ্টু ঠিকাদারদের ব্ল্যাক লিস্ট করুন। এলজিইডি (স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর), পিডিবি (বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড), পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড (পিডব্লিউডি) জানে কারা কারা দুষ্টু ঠিকাদার। এদের ব্ল্যাক লিস্ট করে ইন্টারনালি সার্কুলেট করুন। দুষ্টু ঠিকাদারদের কাজে রাখার কোন মানে হয় না। সিপিটিইউ (সেন্ট্রাল প্রকিউরমেন্ট টেকনিক্যাল ইউনিট) এদের খুঁজে বের করবে। পরিকল্পনামন্ত্রী আরও বলেন, উন্নয়নের মোট বাধা দুটি একটা নাই বললাম অন্যটি ঠিকাদার। তারা কাজ নিয়ে বসে থাকে, শুরু করে না। ঠিকাদাররা অহেতুক প্রকল্পের কালক্ষেপণ করেন। এটা উন্নয়নের খারাপ দিক। আমরা দেখছি কিছু কিছু সিমেন্ট কোম্পানি ঠিকাদারদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে। আমরাও ঠিকাদারদের প্রশিক্ষণ দিতে পারি। এসএসসি প্লাস অনেক ঠিকাদার আসছে তাদের প্রশিক্ষণ দেয়া সহজ হবে। এদেশে অভিযোগের শেষ নেই। অনেক কর্মকর্তাও ইট-সিমেন্ট সম্বন্ধে কিছু বোঝেন না, অথচ ঠিকাদারদের ধমক দেন- ইট ভাল না সিমেন্ট ভাল না। এসব বন্ধ হওয়া দরকার। আমরা উভয়ের স্বার্থ দেখব। পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকারের নীতি অনুযায়ী প্রধানমন্ত্রী চান, জনগণের কল্যাণে জনগণের অর্থ যেন মানুষের ও দেশের উনয়নমূলক কর্মকা-ে ব্যবহৃত হয়। সরকারী ক্রয় বিষয়ক পাবলিক-প্রাইভেট স্টেকহোল্ডার কমিটির মূল কাজ হলো- সরকারী প্রজেক্টে ঠিকাদারদের কাজের কোথাও কোন গ্যাপ আছে কিনা সেসব দেখা এবং কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট আকারে প্রতিবেদন দেয়া। তিনি বলেন, যদি এই সংগঠনটি সরকারী ক্রয় মনিটরিং যথাযথভাবে করতে পারে। তাহলে সরকারী প্রজেক্ট পাওয়া ঠিকাদাররা কাজে খারাপ জিনিস ব্যবহার করতে পারবে না। জনগণের কাছে সব ধরনের হিসাব দিতে বাধ্য হবে। তখন কোন প্রজেক্টের কাজই নিম্নমানের হবে না। তাহলে আর পত্রিকায় আসবে না রডের বদলে বাঁশ ব্যবহার করা হচ্ছে। এছাড়া ‘ব্ল্যাক লিস্টেড’ যেসব ঠিকাদার আছে তারা যেন নতুন কোন প্রজেক্ট না পায় সে বিষয়ে আমাদের পদক্ষেপ নিতে হবে। তিনি বলেন, বড় প্রকল্প এলাকায় সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করব। এ দেশ এখন সিসিটিভি ক্যামেরার দেশ হয়ে যাচ্ছে। আমার মনে হয় সিসিটিভি ক্যামেরা বাংলাদেশে বেশি ব্যবহার হচ্ছে। এম এ মান্নান বলেন, এবার প্রথম মাসেই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী ভাল বাস্তবায়ন হয়েছে। আমরা পিডি’র টাকা সরাসরি দিয়ে দিয়েছি। এবার শুরুতেই আমরা ছক্কা মেরেছি। মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পের টাকা সঠিকভাবে ব্যয় করতে হবে। জনগণের টাকা কোন মতেই অপচয় করা যাবে না। পিপিএসসির উন্মুক্ত আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রান্তিক পর্যায়ে সরকারী যেসব কাজ চলছে সেগুলোর কোয়ালিটি দেখার জন্য সরকারী পর্যায়ে কমিটি করে দিলে তারা সেটা মনিটর করতে পারে, মানসম্মত কাজ পাওয়া যায়। তাছাড়া, অনেক জায়গা আছে যেখানে ইন্টারনেট না থাকায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার করতে পারে না ফলে সেখানকার লোকজন অভিযোগ জানাতে পারেন না। তাই একটা হটলাইন নাম্বারের ব্যবস্থা করা হলে সব শ্রেণীর মানুষ যে কোন প্রজেক্টর অনিয়মের কথা জানাতে পারবেন। সভায় উপস্থিত ছিলেন আইএমইডি সচিব আবুল মনসুর মোঃ ফয়েজ উল্লাহ, পরিকল্পনা বিভাগের নূরুল আমিন, সিপিটিইউ মহাপরিচালক আলী নুর, বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য ক্রয় বিশেষজ্ঞ জাফরুল ইসলাম প্রমুখ।
×