ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কমিটির সঙ্গে মতবিনিময়ে কাদের

সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নিতে অচিরেই টাস্কফোর্স

প্রকাশিত: ১০:৪৯, ২৩ আগস্ট ২০১৯

 সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ব্যবস্থা নিতে অচিরেই টাস্কফোর্স

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় সড়ক দুর্ঘটনা উদ্বেগজনক পর্যায়ে। তাই দুর্ঘটনারোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে অচিরেই টাস্কফোর্স গঠন করা হবে। সড়ক দুর্ঘটনারোধ ও সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে গঠিত কমিটির ১১১ দফা সুপারিশের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নয়টি। এসব সুপারিশ বাস্তবায়ন শুরুর কথা রয়েছে আগামী পাঁচ সেপ্টেম্বর সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৭তম বৈঠকের পর থেকেই। বৃহস্পতিবার সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নে গঠিত কমিটি প্রতিবেদন দাখিলকালে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের একথা জানান। এর আগে কমিটির সদস্যদের সঙ্গে মন্ত্রী মতবিনিময় করেন। মতবিনিময়ের শুরুতে কমিটির প্রধান সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাজাহান খান এমপি প্রতিবেদনটি সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। কমিটি তাদের প্রতিবেদনে সড়ক দুর্ঘটনা রোধে ১১১টি সুপারিশ তুলে ধরেছে। এ সময় সড়ক পরিবহন সমিতির সভাপতি মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সম্প্রতি কমিটির পক্ষ থেকে সুপারিশ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতেও তুলে দেয়া হয়। সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, সড়ক পরিবহন আইন বাস্তবায়নে সরকার আন্তরিক। আইনটি কার্যকর করতে বিধিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে। এ লক্ষ্যে স্টেক-হোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা চলছে। স্বল্পতম সময়ে আইনটি কার্যকর হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন। উল্লেখ্য, সড়ক পরিবহন সেক্টরে শৃঙ্খলা জোরদারকরণ এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়নে চলতি বছরের গত ১৯ ফেব্রুয়ারি জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৬তম সভায় একটি কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি এ লক্ষ্যে এক শ’ এগারোটি আশু করণীয়, স্বল্পমেয়াদী ও দীর্ঘমেয়াদী সুপারিশমালা তৈরি করে। মন্ত্রী জানান, কমিটির সুপারিশসমূহ আগামী ৫ সেপ্টেম্বর জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের সভায় উত্থাপন করা হবে। তিনি বলেন, আর দেরি নয়, আমরা দ্রুত বাস্তবায়ন কাজ শুরু করতে চাই। সভায় অন্যদের মাঝে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব মোঃ নজরুল ইসলাম, বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ, সাংস্কৃতিক কর্মী রোকেয়া প্রাচী, হাইওয়ে পুলিশের অতিরিক্ত মহাপুলিশ পরিদর্শক ব্যারিস্টার মাহাবুবুর রহমান, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের এক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের প্রধান কাজী মোঃ সাইফুন নেওয়াজসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং মন্ত্রণালয়ের উর্ধতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘গত ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সড়ক নিরাপত্তা কাউন্সিলের ২৬তম সভায় সড়ক পরিবহন খাতে শৃঙ্খলা জোরদার এবং দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে সুপারিশ প্রণয়ণের জন্য ১৫ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়। সাবেক নৌপরিবহন মন্ত্রী ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের কার্যকরী সভাপতি শাহজাহান খানকে এ কমিটির প্রধান করা হয়। পরবর্তী সময়ে আরও ৮ সদস্যকে কমিটিতে কো-অপ্ট করা হয়। তিনি বলেন, ‘কমিটি পরপর ৭টি সভার মাধ্যমে দুর্ঘটনার কারণ চিহ্নিত এবং সুপারিশমালাসহ প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে। প্রতিবেদনে মোট ১১১টি সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আশু করণীয় ৫০টি, স্বল্প মেয়াদী ৩২টি এবং দীর্ঘ মেয়াদী ২৯টি সুপারিশ।’ সুপারিশে সড়কে বিশৃঙ্খলা ও দুর্ঘটনার প্রধান প্রধান কারণগুলো উঠে এসেছে জানিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সুপারিশে উঠে আসা বিষয়গুলোর মধ্যে রয়েছে- সড়ক ও সড়কে চলাচলের পরিবেশ, অদক্ষ চালক, ত্রুটিপূর্ণ যানবাহন, চালকের অসতর্কতা, সড়ক নির্মাণে প্রকৌশলগত ত্রুটি, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও অধীনস্থ দফতর বা সংস্থার মধ্যে দায়িত্ব পালনে অনীহা। যানবাহন ও সড়ক ব্যবহারকারী তথা চালক, যাত্রী ও পথচারীসহ সবার অসচেতনতা; সড়কের পাশে বসবাসরত জনগণের অসচেতনতা ইত্যাদি।’
×