ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিউইয়র্ক টাইমসকে ইমরান খান

সংলাপের সম্ভাবনা নেই

প্রকাশিত: ০৯:১১, ২৩ আগস্ট ২০১৯

সংলাপের সম্ভাবনা নেই

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান মনে করেন না কাশ্মীর ইস্যুতে ভারতের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ আছে। বুধবার নিউইয়র্ক টাইমসকে দেয়া সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, ভারতীয় কর্মকর্তাদের সঙ্গে আর কোন সংলাপে যেতে আগ্রহী নন তিনি। নিউইয়র্ক টাইমস। ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ উপনিবেশ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কাশ্মীর ইস্যুতে তিনটি যুদ্ধ। ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। প্রতিবাদে ভারতের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক হ্রাস করাসহ ইসলামাবাদে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনারকে বহিষ্কার করেছে পাকিস্তান। দুই দেশের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন ছাড়াও সেখানে চলছে টানটান উত্তেজনা। একই সঙ্গে সব ধরনের দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য চুক্তি স্থগিত ও ভারতের স্বাধীনতা দিবসকে কালো দিবস হিসেবে পালন করে পাকিস্তান। ইমরান খান বলেন, তিনি ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে ৫ আগস্টের আগে ও পরে বার বার যোগাযোগ করে ব্যর্থ হয়েছেন। তিনি বলেন, তাদের সঙ্গে আলোচনার কোন মানে নেই। আমি অনেক কথা বলেছি। এখন আমি পেছন ফিরে তাকালে দেখতে পাই যে আমি শান্তি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছি আর তারা একে দুর্বলতা বলে মনে করেছে। আমাদের এর বেশি আর কিছু করার নেই। কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয়ায় এর আগেও বারবার ভারতের হিন্দুত্ববাদী সরকারের সমালোচনা করেছেন ইমরান খান। সাম্প্রতিক এই মন্তব্য নিয়ে ভারতের পক্ষ থেকে কোন জবাব পাওয়া যায়নি এখনও। তবে নিউইয়র্ক টাইমস পরিদর্শনকালে যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, কাশ্মীরে সরকারী অফিস, ব্যাংক ও হাসপাতাল স্বাভাবিকভাবেই চলছে। পর্যাপ্ত খাবার রয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা হয়েছে। ভারতের বর্তমান সরকারকে ইমরান খান ও তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা নাৎসি বাহিনীর সঙ্গে তুলনা করেছেন। তাদের দাবি, বিরোধপূর্ণ এই অঞ্চলে গণহত্যা হতে পারে। কাশ্মীরের অচলাবস্থা শুরুর পর প্রথমবারের মতো কোন আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থাকে সাক্ষাতকার দিয়েছেন ইমরান খান। তিনি বলেন, ৮০ লাখ মানুষের জীবন ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের আশঙ্কা, সেখানে জাতিগত নিধন এবং গণহত্যা সংঘটিত হতে পারে। এমন দাবি উড়িয়ে দিয়েছে মোদি সরকার। কাশ্মীর ইস্যুকে অভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলে আখ্যা দিয়েছে তারা। সেনা মোতায়েনের ব্যাপারটি সাময়িক ও জরুরী। ইমরান খান বলেন, কাশ্মীরে ভারত কোন ভুল অভিযান চালাতে পারে। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে, তখন পাকিস্তানও জবাব দিতে বাধ্য হবে। তিনি বলেন, পরমাণু শক্তিধর দুই দেশ যখন চোখে চোখ রেখে যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দেয় তখন যে কোন কিছুই হতে পারে। বিশ্ব শান্তির জন্য যা ভাল কিছু নয়। একদিন আগেই ফোনে ট্রাম্পকে সামগ্রিক পরিস্থিতি জানান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। পরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও একই ইস্যুতে ট্রাম্পকে ফোন করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে নালিশ জানান। দুই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফোনালাপের পর সোমবার টুইটারে দেয়া এক পোস্টে তিনি কাশ্মীরের বর্তমান অবস্থাকে ‘একটি কঠিন পরিস্থিতি’ হিসেবে উল্লেখ করেন। পরদিন মঙ্গলবার এনবিসি নিউজের সঙ্গে আলাপকালে অঞ্চলটির বিদ্যমান অবস্থাকে ‘উত্তেজনাপূর্ণ’ হিসেবে উল্লেখ করেন ট্রাম্প।
×