ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

লিভারপুলেই ‘সুখী’ সালাহ

প্রকাশিত: ১২:১৬, ২২ আগস্ট ২০১৯

লিভারপুলেই ‘সুখী’ সালাহ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ চেলসি থেকে রোমা ঘুরে আবারও ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ মাতাচ্ছেন মোহাম্মদ সালাহ। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের ক্লাব চেলসির হয়ে নিজেকে সেভাবে মেলে ধরতে পারেননি তিনি। তবে লিভারপুলের জার্সিতে ইতোমধ্যেই নিজের জাত চিনিয়েছেন এই মিসরীয় ফরোয়ার্ড। গত মৌসুমে অলরেডদের উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগ জয়ের পেছনে নায়কের ভূমিকায় ছিলেন মোহাম্মদ সালাহ। নতুন মৌসুমে ইতোমধ্যেই উয়েফা সুপার কাপ জিতে গেছেন তিনি। ২৭ বছরের এই তারকা ফুটবলার জানালেন লিভারপুলে বেশ সুখেই আছেন। এ প্রসঙ্গে ‘সিএনএন’কে দেয়া এক সাক্ষাতকারে লিভারপুল সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘লিভারপুলে আমি বেশ সুখী। এমন শহরে থাকতে পেরে আমি খুব আনন্দিত যেখানকার সমর্থকরা আমাকে ভালবাসে বিনিময়ে আমিও তাদের ভালবাসি। এই ক্লাবের জার্সিতে খেলে আমি খুব খুশি।’ গত সপ্তাহেই শেষ হয়েছে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের দলবদল। গ্রীষ্মকালীন এই দলবদলে এবার আলোচনার তুঙ্গে ছিলেন লীগের অনেকেই। পল পগবার আলোচনা তো এখনও চলছে। লিভারপুলের সাবেক তারকা ফুটবলার ফিলিপে কুটিনহোও বার্সিলোনা থেকে ধারে চলে গেছেন জার্মান বুন্দেসলিগায় রাজত্ব করা বেয়ার্ন মিউনিখে। তবে তার আগে ব্রাজিলিয়ান এই তারকা নাকি চেয়েছিলেন এ্যানফিল্ডে ফিরতে। এ রকম আরও অনেক তারকাই এবার শিরোনামে ছিলেন ভিন্ন ভিন্ন সময়ে। এই তালিকায় অবশ্য সালাহর নাম ছিল না। এটাই প্রমাণ করে যে, এনফিল্ডে দীর্ঘ সময় থাকছেন মিসরীয় ফরোয়ার্ড। লিভারপুলের আগে বাসেল, চেলসি, ফিওরেন্টিনা এবং রোমায় খেলেছেন সালাহ। সেই সময়ে তার গোল স্কোরিং ক্ষমতা খুব বেশি ছিল না। এখন যেমনটা আছে তার লিভারপুলের হয়ে। কেননা অলরেডদের জার্সিতে ৭৬ ম্যাচ খেলেই প্রতিপক্ষের জালে জড়িয়েছেন ৫৫ বার। অথচ এর আগে পাঁচ ক্লাবের হয়ে তার করা গোলের সংখ্যা মাত্র ৫৭টি। তারপরও সালাহ নিজেকে মূল স্ট্রাইকার হিসেবে মানছেন না। বরং স্ট্রাইকারদের দিয়ে গোল করাটাকেই তার আসল কাজ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি। এ বিষয়ে সালাহর খুব সোজাসাপ্টা উত্তর, ‘আমি স্ট্রাইকার নই, আমি উইঙ্গার হিসেবে খেলি। যে কারণে শুধু গোল করাটা আমার কাজ নয়, সতীর্থদের দিয়ে গোল করানোটাও আমার কাজ। তবে আমি যে উইং হিসেবে খেলি সেটা নিয়ে কেউ কিছু বলে না। যদি খেয়াল করেন দীর্ঘ সময় ধরেই আমি ৯ নম্বর হিসেবে খেলি না। উইঙ্গার হিসেবে খেলতেই আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। এক নম্বর স্ট্রাইকারের কাজই গোল করা। কিন্তু উইঙ্গার হিসেবে তা আমার কাজ নয়। আমার কাজ এ্যাসিস্ট করা... এবং দলের সঙ্গে খেলা।’ গত মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের শিরোপা জিততে পারেনি লিভারপুল। তবে লীগ শিরোপা জয়ের জন্য সবধরনের চেষ্টাই করেছে জার্গেন ক্লপের দল। শিরোপার জন্য শেষ ম্যাচ পর্যন্ত লীগকে টেনে নিয়েছে তারা। কিন্তু ভাগ্য আর ম্যানচেস্টার সিটিই প্রিমিয়ার লীগ শিরোপা জিততে দেয়নি অলরেডদের। তবে লীগে অল্পের জন্য শিরোপা হাতছাড়া করা লিভারপুল ঠিকই পরেছে ইউরোপ সেরার মুকুট। টানা দুইবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনাল খেলা অলরেডরা গত মৌসুমে শিরোপা উঁচিয়ে ধরেছে টটেনহ্যাম হটস্পারকে পরাজিত করে। এর পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে লিভারপুলের শক্তিশালী আক্রমণভাগের তিন তারকা মোহাম্মদ সালাহ, সাদিও মানে এবং রবার্তো ফিরমিনো। এ জন্য কোচ জার্গেন ক্লপ সৃষ্টিকর্তার কাছেও কৃতজ্ঞ। এ প্রসঙ্গে লিভারপুলের অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেছেন, ‘আমার জীবনে অসংখ্য সেনসেশন খেলোয়াড় সবসময়ই পেয়েছি। কিন্তু বিশ্বমানের খেলোয়াড় ছিল না। তবে এখন আছে। সে জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করি। আসলে তারাই ম্যাচের পার্থক্য গড়ে দেয়। সাদিও মানে, ববি ফিরমিনো, মোহাম্মদ সালাহ- এই তিন খেলোয়াড় সত্যিই অসাধারণ।’ ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের নতুন মৌসুমের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলছে লিভারপুল। প্রথম দুই ম্যাচেই টানা দুই জয় তুলে নিয়েছে তারা। প্রিমিয়ার লীগের যুগে এই কীর্তিটা তাদের আগে ছিল মাত্র দুইবার। ১৯৯৩-৯৪ এবং ১৯৯৪-৯৫ মৌসুমে। আগামী শনিবার আবারও মাঠে নামবে জার্গেন ক্লপের দল। নিজেদের মাঠে শক্তিশালী আর্সেনালকে স্বাগত জানাবে লিভারপুল।
×