ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

হাইল হাওড়ে বাড়ছে মাছের উৎপাদন

প্রকাশিত: ১০:২৪, ২২ আগস্ট ২০১৯

 হাইল হাওড়ে বাড়ছে মাছের উৎপাদন

সংবাদদাতা, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার, ২১ আগস্ট ॥ মৎস্য ভা-ার হিসেবে খ্যাতি রয়েছে হাইল হাওড়ের। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এই মৎস্য ভান্ডার থেকে হারিয়ে যাচ্ছে দেশী প্রজাতির বিভিন্ন মাছ। তবে গত পাঁচ বছরে এই হাওড়ে মাছের সার্বিক উৎপাদন বেড়েছে। হাওড়ে এখন পাওয়া যায় রুই, কাতলা, শিং, মাগুর, ঘনিয়া, বোয়াল, বইচা, ছোট চিংড়ি, কালবাউশ, গ্রাসকার্প, খলিশা, লাল খলিশা, গুতুম, বেলে, কুচিয়া ইত্যাদি মাছ। মৎস্য কর্মকর্তার দফতরের তথ্য অনুযায়ী, ২০ বছর আগের তুলনায় বর্তমানে হাইল হাওড়ে মাছের উৎপাদন কম হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে মাছের উৎপাদন ক্রমান্বয়ে বাড়ছে। ২০১৮ ও ১৯ সালে হাওড়ে বিভিন্ন প্রজাতির দেশীয় মাছ উৎপাদন হয়েছে ৯৬০ দশমিক ৪০ টন। ২০১৭-১৮ সালে ছিল ৯৪৫ দশমিক ৬৭ টন, ২০১৬-১৭ সালে ৯৪০ দশমিক ৬২ টন, ২০১৫-১৬ সালে ৯৩০ দশমিক টন এবং ২০১৪-১৫ সালে ছিল ৯২৭ দশমিক ২৫ টন। হাইল হাওর সংলগ্ন পশ্চিম ভাড়াউড়া গ্রামের মৎস্যজীবী ইউসুব আলী বলেন, এক সময় হাওড়ের পারের বাসিন্দারা মাছ ধরেই জীবন চালাত। এখন বেশির ভাগ মানুষ অন্য পেশায় চলে গেছে। আগে বড়ি (বড়শি) দিয়েই হাওর থেকে অনেক মাছ ধরা যেত কিন্তু এখন জাল দিয়েও মাছ পাওয়া যায় না। তিনি জানান, হাওড়ে কীটনাশকের প্রভাব, কারেন্ট জাল ব্যবহার, সেচ মেশিন লাগিয়ে বিল সেচে মাছ ধরার ফলে এসব মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে। শুধু তাই নয়, হাওর একসময় ছিল উন্মুক্ত জলাশয়। এখন হাওড়ের বিলগুলো সবই দখলে চলে গেছে। হাওড়ে ফিশারি (খামার) তৈরি করে দেশী মাছের পরিবর্তে বিদেশী মাছ চাষ হচ্ছে। উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ সহিদুর রহমান সিদ্দিকী বলেন, হাইল হাওড়ে উপজেলার সব জায়গা থেকে পানি এসে জমা হয়। উপজেলার বিভিন্ন চা বাগান, লেবু বাগান ইত্যাদিতে পোকামাকড় মারার জন্য ব্যবহৃত কীটনাশক চক্রাকারে হাওড়ের পানিতে এসে পড়ে। এতে হাওড়ের মাছের প্রজননক্ষমতা কমে যায়। মাছগুলো মারাও যায়। তাছাড়া ছোট ছড়াগুলো দিয়ে আসা পলি ও বালু হাওড়ে এসে মাছের আবাসস্থল নষ্ট করে। এ ছাড়া শহরের বর্জ্যও হাওড়ের পানি নষ্ট করে। উপজেলা মৎস্য অফিসের মাধ্যমে চা বাগানের ব্যবস্থাপকসহ কীটনাশক ব্যবহারকারীদের এসব বিষয়ে জানানো হয়েছে। দেশী মাছ রক্ষায় সবার সচেতনতা প্রয়োজন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম বলেন, দেশীয় মাছ যাতে বিলুপ্ত হয়ে না যায় সে জন্য হাইল হাওর পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
×