ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ঝিকরগাছায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক

প্রকাশিত: ০৫:০৬, ২১ আগস্ট ২০১৯

ঝিকরগাছায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষক

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় পাট চাষে আগ্রহ হারাচ্ছেন কৃষকরা। উৎপাদন খরচ বেশি এবং দাম কম হওয়ায় কৃষক শুধুমাত্র প্রয়োজনের তাগিদেই পাট চাষ করছেন বলে জানান তারা। যার কারণে কৃষি অধিদফতরের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হচ্ছে না। এক সময় দেশের প্রধান অর্থকারী ফসল ছিলো পাট। সোনালী আঁশ নামে পরিচিত এ ফসল চাষে কৃষকের ব্যাপক আগ্রহ ছিল। দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রফতানি করা হতো সোনালী আঁশ। কিন্তু সেই পাট চাষে এখন আর কৃষক আগ্রহ দেখায় না। শুধুমাত্র পাটখড়িকে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করার জন্য কৃষক পাট চাষ করছে। কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, পাট চাষে ব্যাপক খরচ। খরচের তুলনায় পাট চাষে লাভ হয় না। প্রতিবার লোকসান গুণতে হয়। যে কারণে কৃষি অধিদফতরের পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। ঝিকরগাছা উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরে উপজেলায় পাট উৎপাদিত হয়েছে ৫ হাজার ২০০ হেক্টর। উপজেলার নির্বাসখোলা ইউনিয়নের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের কৃষক আনোয়ার হোসেন জানান, পাট কাটতে মাথাপ্রতি ২৫০ টাকা শ্রমিক খরচ লাগে। এক গল্লা পাট বাড়ি আনতে ২৫ টাকা দিতে হয়। সেই পাট পচানোর পর ধুতে দিতে হয় ২০ টাকা গল্লা। শ্রমিক নিয়ে আবার বাড়িতে আনতে হয়। এছাড়া প্রথমে জমি তৈরি করা। বীজ রোপন এবং পরিষ্কার করে বড় করতে অনেক শ্রমিক প্রয়োজন হয়। সব মিলিয়ে অর্ধেকের বেশি লোকসান হয়। কথা হয় একই গ্রামের কৃষক শাহাঙ্গীর আলম শিমুল, অহেদ আলী, রেজাউল ইসলাম, আহম্মদ আলী, আব্দুল জলিল, মন্টু মিয়া, ইব্রাহিম হোসেনসহ কয়েকজনের সাথে। সকলেই একই অভিযোগ করে বলেন, পাট চাষে লোকসান গুনতে গুনতে আগ্রহ হারিয়েছে তারা। এখন শুধুমাত্র পাটখড়ির জন্য প্রয়োজনে পাট চাষ করেন তারা। সাদিপুর বকুল বাজারের পাট ব্যবসায়ী নওশের আলী জানান, মাস খানেক আগে পাটের দাম ছিল মন প্রতি সাড়ে ১৯০০ থেকে ২০০০। এখন বাজারে পাটের দাম কমেছে। মণ প্রতি ১৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পাটের দাম চলছে। ঝিকরগাছা কৃষি অফিসার দীপংকর কুমার দাস জানান, যে চাষে লাভ বেশি কৃষক সেই চাষগুলো বেশি করে। পাট চাষে লাভ কম হওয়ায় কৃষক অন্য ফসল চাষ করছে। এছাড়া চাষের বহুমূখীকরণ হয়েছে। আগের মত এখন কৃষক শুধু ধান আর পাট চাষ করে না। লাভজনক চাষগুলোই বেশি করছে কৃষক।
×