ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হোন

প্রকাশিত: ১১:৫০, ২১ আগস্ট ২০১৯

নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হোন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে তিন দিনব্যাপী ‘শ্রম কল্যাণ সম্মেলন-২০১৯’ শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার রাজধানীর ইস্কাটনে প্রবাসী কল্যাণ ভবনে আয়োজিত সম্মেলনে ২৬ দেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও হাইকমিশনে কর্মরত শ্রম কাউন্সিলর ও ফার্স্ট সেক্রেটারিরা অংশ নিয়েছেন। যারা বিদেশে কর্মী হিসেবে কাজ করতে যান তাদের সুবিধা-অসুবিধার বিষয়ে এই সম্মেলন থেকে দিকনির্দেশ দেয়া হবে। আগামী বৃহস্পতিবার সম্মেলনের শেষ দিন। প্রথম দিন সম্মেলনের উদ্বোধন করেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ। তিন দিনের এই শ্রম কল্যাণ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, নতুন শ্রমবাজার অনুসন্ধান ও রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধিতে উদ্যোগী হতে হবে। নিয়মিতভাবে সঠিক শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করতে পারলে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই বাংলাদেশ দারিদ্র্য মুক্ত হবে। সরকার দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে নানা পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে বাংলাদেশী কর্মীদের সমস্যা ও সম্ভাবনার বিষয়ে সর্বক্ষণিক নজর রাখতে হবে। প্রবাসী কর্মীদের জন্য নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টি করতে পারলে রেমিটেন্স প্রবাহ বৃদ্ধি পাবেই এবং প্রবাসী কর্মীদের কল্যাণে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধায় পাশে থাকতে হবে। মন্ত্রী শ্রম কাউন্সিলর ও ফার্স্ট সেক্রেটারিদের উদ্দেশে বলেন, কর্মীদের বিষয়ে আপনাদের গাফলতির কোন অভিযোগ যাতে না শোনা যায়। আমি চাই কর্মীদের সর্বতোভাবে সহযোগিতা করবেন। কোন কর্মী যেন বিদেশে বিপদে না পড়ে সে জন্য যা কিছু করার করবেন। সরকার তো আপনাদের এ কারণেই দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছে। সরকারী দায়িত্ব পালন করলেই অনেক কর্মী উপকৃত হবেন। আপনাদের ওপর অনেক শ্রম বাজারের ভাল মন্দ নির্ভর করে। বিদেশে বাংলাদেশী কর্মীদের সুনাম আছে। কিন্তু কিছু মানুষের কারণে সেই সুনাম নষ্ট হয়। এই বিষয়টিও দেখার দায়িত্ব আপনাদের। মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা আপনাদের দেয়া হচ্ছে। আশা করি আপনারা কর্মীদের প্রতিও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করবেন। সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, প্রবাসী কর্মীরা রেমিটেন্স পাঠিয়ে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। প্রবাসী কর্মীরা যাতে দ্রুততম সময়ে সহজ পদ্ধতিতে সেবা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে। আমাদের একটা বদনাম রয়েছে, বিদেশে অবস্থিত আমাদের দূতাবাস ও হাইকমিশনে যারা যান তারা রাজার মতো জীবন কাটান। কিন্তু অন্য দেশের দূতাবাস বা হাইকমিশনের কর্মকর্তারা বিভিন্ন কাজ করেন। তারা একজন কর্মীর কোন অসুবিধা হলে সঙ্গে সঙ্গে তা সমাধান করার চেষ্টা করেন। আমরা আশা করব বিদেশীদের মতো করেই আপনারা কাজ করবেন। সম্মেলনে বায়রার সভাপতি বেনজির আহমেদ এমপি বলেন, আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে আমাদের প্রতিযোগী অনেক দেশ রয়েছে। অনেক প্রতিযোগিতা মোকাবেলা করেই বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক শ্রমবাজারে সফলতার সঙ্গে টিকে থাকতে হচ্ছে। বাজারগুলো যাতে ঠিক থাকে সে জন্য আপনাদের ভূমিকা সবচেয়ে বড়। নতুন বাজার খোলার বিষয়েও আপনাদের ভূমিকা রাখতে পারেন। বায়রার সাধারণ মহাসচিব শামীম আহমেদ চৌধুরী নোমান বলেন, আপনরা যারা বিভিন্ন দূতাবাস ও মিশনে কর্মরত আছেন- কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা দেখার বিষয়টি পুরোপুরি আপনাদেরই। আমরা দেশে থেকে কর্মীদের জন্য তেমন কোন কিছু করতে পারি না। কর্মীদের সুবিধা-অসুবিধা আপনরাই দেখেন। আপনাদের কাছে আমরা ব্যবসায়ীরা অনুরোধ রাখতে পারি কর্মীদের কম খরচে কিভাবে বিদেশে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। কম খরচে একজন কর্মী বিদেশে গেলে অল্প সময়ের মধ্যে তার খরচটা তুলে নিতে পারেন। পরে যে সময় পান তারা কাজ করে ভাল একটা টাকা নিয়ে দেশে ফিরে আসতে পারেন। এই কাজটিই বেশি জরুরী হয়ে পড়েছে। সম্মেলনে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব রৌনক জাহানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন আয়েশা ফেরদৌস এমপি, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক গাজী মোহাম্মদ জুলহাস, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক মোঃ সেলিম রেজা, প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন প্রমুখ।
×