ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

‘বঙ্গবন্ধু ও বাঙালী সত্তা এক ও অভিন্ন’

প্রকাশিত: ১০:০৩, ২০ আগস্ট ২০১৯

 ‘বঙ্গবন্ধু ও বাঙালী  সত্তা এক ও  অভিন্ন’

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বঙ্গবন্ধু এবং বাঙালী সত্তা এক ও অভিন্ন। তিনি ছিলেন বাঙালী সত্তার প্রকৃত প্রতিনিধি। বাঙালী জনগোষ্ঠীর আশা-আকাক্সক্ষা প্রতিফলিত হয়েছে তার সারাজীবনে ও কর্মে। বাংলা ভাষা, বাঙালী সংস্কৃতি এবং বাঙালী জাতীয়তাবোধ তাঁর কর্মপ্রেরণার মর্মমূলে কাজ করেছে সবসময়। রাজনীতি-জীবনের শুরু থেকেই শেখ মুজিব বাঙালীর উৎপত্তি, বিকাশধারা এবং পূর্বাপর বিষয়ে সচেতন ছিলেন। বাঙালীকে রাষ্ট্রক্ষমতার স্বাদ দিতে তিনি যেমন প্রয়াসী ছিলেন তেমনি একটি ভাষাভিত্তিক বাঙালী জাতিরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে পৌঁছতে তিনি ভাষা আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান এবং মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে তাঁর নিরন্তন সংগ্রাম জারি রেখেছেন। বাঙালী জনগণও তাঁর ইস্পাতদৃঢ় নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে পৃথিবীর বুকে প্রতিষ্ঠা করেছে বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। বাংলা একাডেমি আয়োজিত বঙ্গবন্ধুর বাঙালী সত্তা শীর্ষক বক্তৃতায় এসব কথা বলেন অধ্যাপক ড. হারুন-অর রশিদ। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সোমবার বিকেলে বাংলা একাডেমির আবদুল করিম সাহিত্যবিশারদ মিলনায়তনে সেমিনারে আয়োজন করা হয়। এতে বঙ্গবন্ধুর বাঙালী সত্তা শীর্ষক বক্তৃতা দেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী। সভাপতিত্ব করেন সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল। প্রধান অতিথির বক্তব্যে কে এম খালিদ বলেন, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী কেবল শোকের নয়, সংকল্পেরও। কারণ, তিনি আমাদের স্বাধীনতামুখী সংকল্পে উদ্বুদ্ধ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেছেন, পৃথিবীর বুকে উপহার দিয়েছেন একটি সংবিধান, একটি পতাকা, একটি মানচিত্র। আজকের দিনে বঙ্গবন্ধুর সংগ্রামী জীবন থেকে শিক্ষা নিয়ে তাঁরই আদর্শে ক্ষুধা-দারিদ্র্য-বৈষম্য এবং সাম্প্রদায়িকতামুক্ত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার সংকল্পই হবে আমাদের প্রধান কর্তব্য। স্বাগত ভাষণে হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, বাংলা একাডেমি ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধুর আসন্ন জন্মশতবর্ষকে সামনে রেখে গ্রহণ করেছে বছরব্যাপী বিপুল কর্মসূচী। স্বল্পতম সময়ে আমরা বঙ্গবন্ধুর চীন ভ্রমণের আলেখ্য পুস্তকাকারে প্রকাশের বিষয়ে আশাবাদী। এছাড়া পর্যায়ক্রমিকভাবে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্মের বিশ্লেষণমূলক ১০০টি বই প্রণয়ন ও প্রকাশের পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। সভাপতির বক্তব্যে আবু হেনা মোস্তফা কামাল বলেন, বাঙালী সত্তার মূল কেন্দ্রে যে অসাম্প্রদায়িক মূল্যবোধ, বৈষম্যহীন আর্থসামাজিক ধারণা এবং উদার-প্রগতিমুখী অভিযাত্রার চেতনা নিহিত আছে; বঙ্গবন্ধু তাঁর গোটা জীবনে তা ধারণ করে গেছেন। ঔপনিবেশিক আধিপত্যের শৃঙ্খল ভেঙ্গে স্বাধীনতার সোনালি ঊষার পানে তিনি নিয়ে গেছেন বাঙালী জাতিকে। বঙ্গবন্ধু তাঁর জীবন দিয়ে বাঙালী সত্তার প্রতি তাঁর অবিচল ভালবাসা প্রকাশ করে গেছেন, তাঁরই পথরেখায় আমরা এগিয়ে চলেছি সমৃদ্ধ-আধুনিক বাংলাদেশের দিকে।
×