ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

দিনাজপুরে গার্মেন্টস কর্মী হত্যার আলামতসহ প্রধান আসামি গ্রেফতার

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১৯ আগস্ট ২০১৯

দিনাজপুরে গার্মেন্টস কর্মী হত্যার আলামতসহ প্রধান আসামি গ্রেফতার

স্টাফ রিপোর্টার, দিনাজপুর ॥ টাকার লোভে শারমিন আক্তারকে (২২) গলা টিপে হত্যা করে রিকাশাচালক রাজু ওরাও। রবিবার মধ্যেরাতে হিলি পুলিশ তাকে আটক করে। পরে তার দেওয়া স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাড়ি থেকে শারমিনের ব্যাগ ও পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। শারমিন হিলির খাট্টাউছনা গ্রামের শাফি আকন্দের মেয়ে। তিনি ঢাকায় একটি গার্মেন্টসে কাজ করতেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে রাজু জানায়, ‘গ্রামীণ ব্যাংক থেকে ৩০ হাজার টাকা লোন নিয়ে একটি রিকশা কিনেছিলাম। এজন্য প্রতি সপ্তাহে ৮৫০ টাকা কিস্তি দিতে হয়। প্রতিদিন রিকশা চালিয়ে যা আয় হয় তা দিয়ে পরিবার নিয়ে কোনোমতে চললেও কিস্তির টাকা পরিশোধ করতে কষ্ট হচ্ছিল। শুক্রবার ভোরে শারমিন নামের ওই মেয়েটিকে একা পেয়ে ও সঙ্গে ব্যাগ দেখে মনে হয়েছিল যেহেতু সে ঢাকা থেকে এসেছে তার কাছে হয়তো ভালো টাকা পয়সা রয়েছে। মেয়েটিকে রিকশায় করে খাট্টাউছনায় তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার সময় আমি তাকে হাসপাতাল রোড দিয়ে নিয়ে যাই। কারণ ওই সড়কে সিসি ক্যামেরা নেই। ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য তার গলা টিপে এবং ধানক্ষেতের কাদার মধ্যে ঠেসে ধরে শ্বাসরোধে হত্যা করি। পরে ব্রীজের নিচে ফেলে তার কাছে থাকা ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যাই।’ হাকিমপুর থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, ১৫ আগস্ট রাতে এসআই পরিবহনে করে ঢাকা থেকে হিলিতে এসে চারমাথা মোড়ে নামে শারমিন। পরে হিলি থেকে খাট্টাউছনা যাওয়ার জন্য সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা একটি রিকশায় উঠলে রাজু তাকে অন্যপথ দিয়ে হিলি-বৈগ্রাম সড়কের পাশে কাঁচা রাস্তায় ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। পরে রিকশা থেকে নামিয়ে তার কাছে থাকা ব্যাগ ও টাকা পয়সা চাইলে মেয়েটি চিৎকার করে। এ সময় সে টাকা ও ব্যাগ হাতিয়ে নেওয়ার জন্য মেয়েটিকে গলা টিপে হত্যা করে। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে ধানক্ষেতের কাদার মধ্যে মুখ ঠেসে ধরে। মৃত্যু নিশ্চিত হলে কালভার্টের নিচে পানিতে ডুবিয়ে রেখে পালিয়ে যায়। পরে সার্কেল এসপির নেতৃত্বে আমরা হিলি স্থলবন্দরের চারমাথা মোড়ে লাগানো সিসি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে ও স্থানীয় লোকদের সহায়তায় তাকে ও রিকশা শনাক্ত করতে সক্ষম হই। রবিবার মধ্যে রাতেই রাজুকে তার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী তার বাসা থেকে মেয়েটির ট্রাভেল ব্যাগ ও তার ব্যবহৃত কাপড় চোপড়, প্রসাধনী সামগ্রী এবং পোশাককর্মীর ও ইউনিয়ন পরিষদের পরিচয়পত্র উদ্ধার করা হয়। মামলার বাকি কার্যক্রম সম্পন্ন করে আসামিকে দ্রুত আদালতে তোলা হবে। শুক্রবার রাতে স্থানীয়দের কাছ থেকে খবর পেয়ে হিলির পালপাড়া-বৈগ্রাম কাঁচা রাস্তার ব্রিজের নিচ থেকে অজ্ঞাতনামা হিসেবে শারমিনের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে তার সঙ্গে থাকা মোবাইলের সূত্র ধরে পরিচয় পায় পুলিশ। এ ঘটনায় শারমিনের বাবা বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন।
×