ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ভাগ্যবিড়ম্বনায় জয়বঞ্চিত ম্যানচেস্টার সিটি

প্রকাশিত: ০৯:১২, ১৯ আগস্ট ২০১৯

 ভাগ্যবিড়ম্বনায় জয়বঞ্চিত ম্যানচেস্টার সিটি

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ভুল এড়াতে ক্রিকেটের মতো ফুটবলেও আনা হয়েছে প্রযুক্তির পরশ। কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আরও বেশি ভুল হয়ে যাচ্ছে। শনিবার রাতে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগ ফুটবলে ম্যানচেস্টার সিটি ও টটেনহ্যাম হটস্পারের মধ্যকার হাইভোল্টেজ ম্যাচটিতে ভিডিও এ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির (ভিএআর) সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনার ঝড় বয়ে যাচ্ছে। ইতিহাদে অনুষ্ঠিত ম্যাচে টটেনহ্যামের বিরুদ্ধে দুইবার এগিয়ে যায় স্বাগতিক সিটি। দুইবারই পিছিয়ে পড়ে সমতা ফেরায় অতিথি স্পার্সরা। ম্যাচের ইনজুরি সময়ে গ্যাব্রিয়েল জেসুস আরেকটি গোল করে সিটিজেনদের উচ্ছ্বাসে ভাসান। কিন্তু এর পরই ভিডিও এ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারির সহায়তা নিয়ে গোলটি হ্যান্ডবলের অযুহাতে বাতিল করা হয়। আর তাতে ৩-২ গোলে জিতে যাওয়া ম্যাচটি সিটিকে ২-২ গোলে সমতা রেখে শেষ করতে হয়। এতে করে হার থেকে রক্ষা পেয়েছে টটেনহ্যাম। অবাক করা বিষয়, গত এপ্রিলে এই দলটির কাছে ভারের কারণেই চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিল সিটিকে। সেই ম্যাচটিও ছিল অনেকটা এমন। শেষদিকে গোল করে উৎসব করছিল সিটির ফুটবলাররা। কিন্তু স্পার্সদের আবেদনের প্রেক্ষিতে রেফারি ভারের সহায়তা নেন। আর তাতে অফসাইড দেখিয়ে গোলটি বাতিল করা হয়। ফলে সিটিকে টপকে সেমিফাইনালে উঠে যান হ্যারি কেনরা। একই প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে আবারও প্রযুক্তির মারপ্যাঁচে জয়বঞ্চিত হওয়ায় হতাশ সিটি কোচ পেপ গার্ডিওলা। ম্যাচ শেষে সাবেক বার্সিলোনা ও বেয়ার্ন মিউনিখ কোচ বলেন, আগেরবার অফসাইডের কারণে গোল পেলাম না, এবার হ্যান্ডবলের কারণে। বল হাতে লাগলে আমার কিছু বলার নেই। তবে ভার (ভিডিও এ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি) যারা পরিচালনা করেন, তাদের আরও দায়িত্বশীল হওয়া দরকার। বিরক্ত গার্ডিওলা উদাহরণ টেনে বলেন, লাপোর্টের হাতে বল লাগলে গোল হবে না, কিন্তু ফার্নান্ডো লরেন্টের হাতে লাগলে গোল হবে। এটা কেমন বিচার! এর আগে চেলসি যখন লিভারপুলের বিরুদ্ধে খেলল, পেনাল্টি বক্সের মধ্যে আন্দ্রে ক্রিশ্চিয়ানসেনের হাতে বল লাগে। তখন কিন্তু লিভারপুলকে পেনাল্টি দিতে দেখিনি। এরিক লামেলা যখন রড্রিগোকে ফাউল করে বক্সে তখনও আমরা পেনাল্টি পাইনি। আমার মনে হয়, ভার পরিচালনাকারীরা অন্য কিছু খাওয়াতে ব্যস্ত ছিল। গার্ডিওলার মনের অবস্থা বুঝতে পারছেন টটেনহ্যাম কোচ মউরিচিও পোচেট্টিনো। তিনি ম্যাচ শেষে বলেন, আমি নিজেও ভার নিয়ে আগে অনেক সমালোচনা করেছি। তবে লোকজন চায় না কোচেরা অজুহাত দিক। এখন ভারের যুগ। ভারের সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হবে। কিছু করার নেই। এর আগে ম্যাচের ২০ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনের বাড়ানো বল কোনাকুনি হেডে গোল করে সিটিকে এগিয়ে নেন রাহিম স্টার্লিং। এরপর নিজেদের প্রথম ভাল আক্রমণে সমতা ফেরায় টটেনহ্যাম। ডি বক্সের বাইরে থেকে জোরালো শটে ঝাঁপিয়ে পড়া গোলরক্ষক এডারসনকে পরাস্ত করেন আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার এরিক লামেলা। ৩৫ মিনিটে আবারও ব্রুইনের ক্রসে পা ছুঁইয়ে সিটিকে এগিয়ে নেন আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড সার্জিও এ্যাগুয়েরো। ৫৬ মিনিটে বদলি হিসেবে নেমেই টটেনহ্যামকে সমতা এনে দেন লুকাস মৌওরা। লামেলার কর্নার কিকে হেডে গোল করেন ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার। ৬২ মিনিটে পর্তুগীজ মিডফিল্ডার বার্নাডো সিলভার শট ক্রসবারে লাগলে গোলবঞ্চিত হয় সিটি। শেষ সময়ে কর্নার থেকে আসা বলে বদলি হিসেবে নামা জেসুস গোল করলেও বাতিল করা হয়। ফলে ম্যাচ শেষ হয় সমতাবস্থায়। আরেক খেলায় সাউদাম্পটনকে ২-১ গোলে হারিয়ে নিজেদের ক্লাব রেকর্ড টানা ১১ ম্যাচ জয় পেয়েছে লিভারপুল। এই জয়ে পূর্ণ ৬ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার এক নম্বরে অবস্থান করছে জার্গেন ক্লপের দল। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে এগিয়ে যায় লিভারপুল। মিলনারের পাস থেকে বল পেয়ে গোল করে দলকে এগিয়ে নেন সাদিও মানে। বিরতির পর মানের পাসে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবার্টো ফিরমিনো। ৮৩ মিনিটে প্রতিপক্ষের ফরোয়ার্ড ড্যানি ইঙ্গসের পায়ে বল তুলে দিয়ে গোল হজম করে লিভারপুল। ক’দিন আগে সুপার কাপে সুপার খেলা গোলরক্ষক আদ্রিয়ান হাস্যকর ভুলটি করেন। তবে শেষ পর্যন্ত জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে দ্য রেডসরা।
×