ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আজ ভারত যাচ্ছে নারী হ্যান্ডবল দল

প্রকাশিত: ০৯:০৯, ১৯ আগস্ট ২০১৯

 আজ ভারত যাচ্ছে নারী হ্যান্ডবল দল

রুমেল খান ॥ ঘরোয়া পর্যায়ে (লীগ, টুর্নামেন্ট, জাতীয় চ্যাম্পিয়নশিপ) কখনও কোন দলের হয়ে অধিনায়কত্ব করেননি। অথচ জাতীয় যুব দলের হয়েই অধিনায়কত্বের অভিষেক হতে যাচ্ছে তার। এমনটা কী কখনও কল্পনা করেছিলেন আল্পনা? ‘যেদিন দলের ক্যাপ্টেন হিসেবে আমার নামটি ঘোষণা করা হয়, সেদিন দারুণ অবাক হয়েছিলাম। কেননা কখনও ভাবিইনি অধিনায়ক হব। পরে অনেক খুশি হয়েছি।’ কথাগুলো যার তিনি আল্পনা আক্তার। বাংলাদেশ জাতীয় যুব নারী হ্যান্ডবল দল তারই অধিনায়কত্বে আজ রাতে ভারতের জয়পুরের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবে। সেখানে তারা ২১-৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনুষ্ঠেয় এশিয়ান ওমেন্স ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপ’-এ অংশ নেবে। এই আসরটি এশিয়ান হ্যান্ডবল ফেডারেশনের ব্যবস্থাপনায় এবং ইন্ডিয়ান হ্যান্ডবল ফেডারেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হবে। জনকণ্ঠের সঙ্গে আলাপনে জামালপুর জেলার ইসলামপুরের মেয়ে আল্পনা বলেন, ‘দলে আমার ভূমিকা প্লে-মেকারের। লক্ষ্য থাকবে সতীর্থ ফরোয়ার্ডদের উদ্দেশে গোল করার জন্য বল সঠিকভাবে পাস দেয়া। সতীর্থরা ভুল করলে তা শুধরে দেয়া, তাদের সান্ত¡না দেয়া ও উজ্জীবিত করার চেষ্টা করব।’ আল্পনাকে অধিনায়ক করা প্রসঙ্গে কোচ তৌহিদুর বলেন, ‘প্লে-মেকার হওয়ার কারণে আল্পনা দলকে ভালমতো নিয়ন্ত্রণ করতে পারে। সতীর্থদের সঙ্গে খুব ভাল সম্পর্ক তার। তাদের মোটিভেট করতে পারে। অভিজ্ঞতায়ও অন্যদের চেয়ে এগিয়ে। জাতীয় সিনিয়র দলের হয়ে একাধিক আসরে খেলেছে। সবকিছু মিলিয়েই মনে হয়েছে জাতীয় দলের ক্যাপ্টেন হবার মতো সব গুণাবলীই আছে আল্পনার।’ স্কুলে যখন অষ্টম শ্রেণীর শিক্ষার্থী তখন থেকেই হ্যান্ডবল খেলা শুরু আল্পনার। কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত আন্তঃস্কুল হ্যান্ডবল প্রতিযোগিতায় অংশ নেন এবং তার স্কুল চ্যাম্পিয়ন হয়। সেখানেই আল্পনার খেলা নজর কাড়ে আনসারের কোচ তৌাহিদুরের। তিনি আল্পনাকে আনসারে নিয়ে আসেন ২০১৬ সালে। কোচকে কৃতজ্ঞতায় ভাসিয়েছেন আল্পনা, আনসারে এবং জাতীয় দলে আমার কোচ একজনই তৌহিদ স্যার। তার কাছে অনেক কিছু শিখেছি। জাতীয় দলে তিনিই আমাকে ক্যাপ্টেন বানিয়েছেন। আসরে দুটি গ্রুপে অংশ নেবে ১০টি দেশ। বাংলাদেশ দল পড়েছে খুবই কঠিন ‘এ’ গ্রুপে। তাদের সঙ্গে আছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন (তারা আগের সাতটি আসরেই চ্যাম্পিয়ন) দক্ষিণ কোরিয়া, বর্তমান রানার্সআপ জাপান, উজবেকিস্তান এবং চাইনিজ তাইপে। ‘বি’ গ্রুপে আছে স্বাগতিক ভারত, গত আসরের তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারী চীন এবং কাজাখস্তান ও মঙ্গোলিয়া। বাংলাদেশের গ্রুপ ম্যাচগুলো হচ্ছে ২১, ২৩, ২৫ আগস্ট যথাক্রমে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, চাইনিজ তাইপে এবং উজবেকিস্তানের বিরুদ্ধে। এই আসরের সেরা দুটি দল ২০২০ সালে ফ্রান্সে অনুষ্ঠেয় ওয়ার্ল্ড ওমেন ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপে খেলার সুযোগ পাবে। ইসলামপুর জে জে কে গার্লস কলেজে উচ্চ মাধ্যমিকে মানবিক বিষয় নিয়ে প্রথমবর্ষে পড়ুয়া আল্পনার আদর্শ হ্যান্ডবল খেলোয়াড় ডালিয়া আক্তার, ‘ডালিয়া আপুর খেলার ধরন সবার চেয়ে ভিন্ন। অনেক ভাল লাগে তার খেলা। তিনি সবসময়ই আমাদের ভুল ধরিয়ে দেন, নানা পরামর্শ দেন।’ উল্লেখ্য, এশিয়ান ওমেন্স ইয়ুথ চ্যাম্পিয়নশিপ এর আগে সাতবার অনুষ্ঠিত হলেও বাংলাদেশ দল এই আসরে এবারই প্রথমবারের মতো অংশ নিতে যাচ্ছে। গত ১৬ জুলাই থেকে দলটি অনুশীলন করছে। মহিলা লীগ, জাতীয় চাম্পিয়নশিপ এবং যুব গেমসে পারফর্মেন্সের ভিত্তিতে মোট ৭০ খেলোয়াড়কে বেছে নিয়েছিল বাংলাদেশ হ্যান্ডবল ফেডারেশন। পরে বিভিন্ন ধাপে ধাপে সেখান থেকে ৫৬ জনকে বাদ দিয়ে চূড়ান্ত স্কোয়াডে রাখা হয় ১৪ জনকে। দলের প্রায় সব খেলোয়াড়ই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন। অনেকেই আবার সিনিয়র বা জাতীয় দলেও খেলেছেন। দলের ১৪ খেলোয়াড়ের ৬ জনই হচ্ছেন আনসার দলের।
×