ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

কাঁঠালবাড়ি ঘাটে যাত্রীর ঢল

প্রকাশিত: ০৮:৩৬, ১৯ আগস্ট ২০১৯

 কাঁঠালবাড়ি ঘাটে যাত্রীর ঢল

নিজস্ব সংবাদদাতা, মাদারীপুর, ১৮ আগস্ট ॥ রবিবার প্রথম কর্মদিবসে ঢাকামুখী যাত্রীদের ঢল নেমেছে কাঁঠালবাড়ি ঘাটে। সকালের দিকে আকাশ মেঘলা থাকায় লঞ্চ ও স্পিডবোটের পাশাপাশি ফেরিতেও যাত্রীদের প্রচন্ড ভিড় দেখা গেছে। দুপুরের পর আবহাওয়ার উন্নতি হওয়ায় চাপ আরও বেড়ে গেছে। দক্ষিণাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি যানবাহন ও কাঁঠালবাড়ি ঘাটে নেমে স্পিডবোটে ও লঞ্চগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ করেন যাত্রীরা। ঘাটের একাধিক সূত্রে জানা যায়, রবিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌপথ হয়ে দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। কাঁঠালবাড়ি ঘাট থেকে ছেড়ে যাওয়া প্রতিটি ফেরি, লঞ্চ, স্পিডবোটেই যাত্রী চাপ। লঞ্চে অতিরিক্ত যাত্রী ও ভিড় সামাল দিতে ঘাটে পুলিশ, র‌্যাব, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনী নিয়োজিত রয়েছে। ফেরিতে যানবাহনের চাপ কম থাকলেও যাত্রীদের পর্যাপ্ত চাপ রয়েছে। স্পিডবোটেও চাপ ছিল সহনীয় পর্যায়ে। যশোর, বরিশাল, খুলনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিটি যানবাহন বোঝাই হয়ে যাত্রী কাঁঠালবাড়ি ঘাটে আসছে। ঘাট পর্যন্ত আসতে যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে দেড় থেকে দ্বিগুণ ভাড়া। স্পিডবোট ও কিছু কিছু লঞ্চেও বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। নদী পাড়ি দিয়ে শিমুলিয়া ঘাট থেকে বাড়তি ভাড়া গুনে গন্তব্যে পৌঁছাতে হচ্ছে। রাজধানীগামী যাত্রী কামাল হোসেন বলেন, ‘ঈদের ছুটি শেষ। আজও ঘাটে যাত্রীদের কাছ থেকে স্পিডবোট ও লঞ্চগুলোতে বাড়তি ভাড়া আদায় করছে। আমি ২ শ’ টাকা দিয়ে কাউন্টার থেকে টিকেট কেটে স্পিডবোটে উঠি, প্রতিবাদ করায় ঘাটের লোকজনের হাতে আমাকে অপমান সইতে হয়।’ অপর যাত্রী মোঃ আবুল হোসেন বলেন, ‘ঈদের পরদিন বাড়িতে এসেছিলাম। আজ ঢাকা চলে যাচ্ছি। ভেবেছিলাম ঘাটে ভিড় থাকবে না। কিন্তু আজও ঘাটে যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে।’ আজিজুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, ‘লঞ্চে উঠতে সিরিয়ালে দাঁড়াতে হয়েছে। যাত্রীদের বেশ ভিড় রয়েছে। আবহাওয়া ভাল থাকায় লঞ্চেই পদ্মা পার হচ্ছি।’ কাঁঠালবাড়ি লঞ্চ ঘাটের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর আক্তার হোসেন জানান, লঞ্চে সকাল থেকেই যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ রয়েছে। আজ সারাদিনই ঢাকামুখো যাত্রীদের চাপ থাকবে। তবে দু‘এক দিনের মধ্যে চাপ কমে স্বাভাবিক হবে। এ সময় একটু ভিড় থাকবেই- প্রতিবছরই থাকে।’ মাদারীপুরের কাঁঠালবাড়ি ফেরি ঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম জানিয়েছেন, ‘দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার মানুষ ঢাকার সঙ্গে যাতায়াতের জন্য কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌপথ ব্যবহার করেন। রবিবার প্রথম কর্মদিবসেও ঈদে যাত্রী সেবায় ১৮ ফেরি, ৮৭ লঞ্চ, ২ শতাধিক স্পিডবোট চলাচল করছে।’ বাগেরহাট স্টাফ রিপোর্টার বাগেরহাট থেকে জানান, বাগেহাটে ঈদের ফিরতি টিকেটে যাত্রীদের কাছ থেকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা বাস যাত্রীদের এক প্রকার জিম্মি করে মাত্রাতিরিক্ত বাড়তি ভাড়া আদায়ের অভিযোগ জেলার প্রায় সবকটি পরিবহন সার্ভিসের বিরুদ্ধে। ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা যাত্রীদের জিম্মি করে এভাবে বাড়তি ভাড়া আদায়ের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। ভুক্তভোগী ঢাকাগামী একাধিক চাকরিজীবী যাত্রীরা অভিযোগ করে বলেন, বাগেরহাট বাস টার্মিনাল এলাকায় প্রকাশ্যে হাঁকডাক করে বাড়তি ভাড়া আদায় করা হলেও এর কোন প্রতিকার মিলছে না। বাধ্য হয়েই যাত্রীদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি ভাড়া। কচুয়া থেকে বাগেরহাট বাসস্ট্যান্ডে ঢাকা সায়দাবাদের টিকেট কাটতে আসা মোঃ শাহীন বলেন, আমি প্রায়ই গ্রামীণ সার্ভিস পরিবহনে যাতায়াত করি। বাগেরহাট থেকে ঢাকার ভাড়া ৪৫০ (চার শ’ পঞ্চাশ টাকা) ঈদের অজুহাত দিয়ে ‘গ্রামীন পরিবহন’ আমার কাছ থেকে ৭০০ (সাতশত টাকা) নিয়েছে। ঢাকাগামী আর এক চাকরিজীবী মোঃ সোহাগ বলেন, চাকরির সুবাদে ঢাকা যেতে হচ্ছে তাই বাধ্য হয়ে ১৩ শ’ টাকা দিয়ে ‘বনফুল ট্রান্সপোর্টে’ আমি আর আমার বন্ধু দুটি টিকেট কেটেছি। এক প্রকার বাধ্য হয়ে যাত্রীরা টাকা দিচ্ছে। এটা কোন নিয়ম হতে পারে না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বাস ভাড়া বেশি নেয়ার কথা স্বীকার করে বাগেরহাট গ্রামীণ পরিবহনের কাউন্টার ম্যানেজার বলেন, ঈদের সময় আমরা সাড়ে ৪শ’ টাকার ভাড়া ৭শ’ টাকা নিচ্ছি। কারণ ঢাকা থেকে ফেরার সময় যাত্রী না থাকার কারণে আমাদের ফাঁকা গাড়ি নিয়ে ফিরতে হয়।
×