ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসির পর উচ্চশিক্ষা

প্রকাশিত: ১২:২৭, ১৮ আগস্ট ২০১৯

এইচএসসির পর উচ্চশিক্ষা

বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ইচ্ছা কার না থাকে? তবে প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষা নিয়ে শিক্ষার্থীদের থাকে নানা ভীতি। কী ধরনের প্রশ্ন হবে, কিভাবে উত্তর দেব, কিভাবে নিজেকে তৈরি করব-এসব চিন্তা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজী বিভাগে ভর্তি হওয়া নুসরাত জাহান এবং আইন বিভাগে ভর্তি হওয়া ইফতি বললেন, কিভাবে তারা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। তাদের লক্ষ্যে পৌঁছানোর গল্পের কথা জানালেন নুসরাত। তিনি বলেন, গ্রামের বাড়ির বড় ভাইয়া ও আপুদের দেখে যারা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়েন, তাছাড়া আম্মুর দিকনির্দেশনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার স্বপ্ন দানা বেঁধেছিল সেই অষ্টম শ্রেণীতে পড়া থেকেই। এই লক্ষ্যে নিয়মিত ক্লাসের বই পড়ার পাশাপাশি সাধারণ জ্ঞানের বই ও জাতীয় দৈনিকগুলো পড়তাম। একদিকে জানার আগ্রহ অন্যদিকে নিজেকে তৈরি করার জন্য। ইফতি বলেন, আমি এসএসসি পরীক্ষার পর খালাত বোনের সঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘুরতে এসেছিলাম তখনই নিজের স্বপ্ন তৈরি করি এখানে ভর্তি হয়ে বিচারক হতে হবে। তারা উভয়ে বলেন, জ্ঞানের বিষয় কিন্তু চর্চানির্ভর। প্রশ্ন ছিল ইংরেজীর প্রস্তুতি কিভাবে নিয়েছিলেন? উত্তরে তারা বলেন, ‘ইংরেজী আন্তর্জাতিক ভাষা। ইংরেজীকে বাদ দিয়ে চলা যায় না। তাছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু ইংরেজী ও আইনই নয় অন্য যে কোন বিষয়ে পড়ার জন্য ইংরেজীতে ভাল নম্বর পাওয়ার বিকল্প নেই। এ জন্য ইংরেজী ব্যাকরণের প্রস্তুতি ভালভাবেই নিয়েছিলাম।’ নিয়মিত ইংরেজী পত্রিকা পড়াটা জরুরী বলে মনে করেন তারা। ভর্তি পরীক্ষায় ইংরেজী ব্যাকরণের জন্য অনেক বই না দেখে একটি বই অনুসরণ করা উচিত। প্রতিদিন ইংরেজী ব্যাকরণ চর্চা করা দরকার বলেও মনে করেন তারা। নুসরাত বলেন, অক্সফোর্ড ও ক্যামব্রিজ ডিকশনারি থেকে ব্যাকরণের নিয়মগুলো দেখেছি। বার বার পড়তাম ইংরেজীর মূল বই।’ বাংলা বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে নুসরাত ও ইফতি উভয়ই বললেন বাংলা ব্যাকরণের জন্য নবম-দশম শ্রেণীর বোর্ডের বইয়ের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলাম। খুব ভালভাবে পড়েছি বাংলা মূল বই। ভর্তিযুদ্ধ এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষার ফল কতটা গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা করলে তারা বলেন, নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। তার মানে কিন্তু এমনটা নয়, জিপিএ-৫-এর ছড়াছড়িতে আপনি ৫ পয়েন্টের চেয়ে কম পেয়েছেন বলে টিকতে পারবেন না। একটু জোর দিয়েই ইফতি বললেন, এ ক্ষেত্রে অনুশীলন ভর্তিযুদ্ধের বৈতরণী পার হতে খুবই সহায়তা করবে। কোচিংয়ের প্রয়োজনীয়তা কতখানি এমন প্রশ্নে তারা বলেন, কোচিং সেন্টারগুলো কিন্তু একজন শিক্ষার্থীকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করিয়ে দেয় না। নিজের যোগ্যতা দিয়েই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ তৈরি করতে হয়। তবে কোচিং সেন্টারগুলো ভর্তির প্রস্তুতি কিভাবে নিতে হয় বা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির পদ্ধতি কেমন হবে, সে বিষয়ে ধারণা দিয়ে থাকে। পড়াশোনা করতে হবে নিজেকেই। কেউ পরীক্ষায় পাস করিয়ে দেবে না। এ বছর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ইচ্ছুকদের কিভাবে প্রস্তুতি নেয়া উচিত এ প্রশ্ন করলে তারা বলেন, ফলাফল নিয়ে চিন্তা না করে বই নিয়ে বসে পড়া উচিত। কেননা সময় নষ্ট করা মানে নিজের জীবন নষ্ট করা। নুসরাত জাহান ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি এপিজে আবদুল কালামের কণ্ঠে কণ্ঠ মিলিয়ে বলেন, স্বপ্ন দেখাটা স্বপ্ন নয়, বরং স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করাই হলো স্বপ্ন। আর তাই স্বপ্ন দেখে সময় নষ্ট না করে স্বপ্ন বাস্তবায়নে লেগে পড়ো।
×