ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

গল টেস্টে জয়ের সুবাস পাচ্ছে শ্রীলঙ্কা

প্রকাশিত: ১২:০৩, ১৮ আগস্ট ২০১৯

গল টেস্টে জয়ের সুবাস পাচ্ছে শ্রীলঙ্কা

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ গল টেস্টে প্রথম তিনদিনে শেষ হওয়া তিন ইনিংসে দৌরাত্ম্য দেখিয়েছেন বোলাররা। মূলত উভয় দলের স্পিনাররাই দাপট দেখিয়ে নিশ্চিত করেছেন প্রথম টেস্টের একটা ফলাফল হবে। তবে চতুর্থদিনটা ছিল ব্যতিক্রমী। সফরকারী নিউজিল্যান্ডের স্পিনাররা তো বটেই পেসাররাও লঙ্কান ব্যাটিংয়ে কোন প্রভাব খাটাতে পারেননি। আর তাই দিনশেষে বিনা উইকেটে ১৩৩ রান তুলে এখন জয়ের সুবাস পাচ্ছে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। চতুর্থদিনের শুরুতে নিউজিল্যান্ডের প্রথম ইনিংস ২৮৫ রানে শেষ হওয়ার পর শ্রীলঙ্কার জন্য জয়ের লক্ষ্য দাঁড়ায় ২৬৮ রানের। ওপেনার ও অধিনায়ক দিমুথ করুনারতেœ এবং অভিজ্ঞ লাহিরু থিরিমান্নের অপরাজিত জোড়া হাফ সেঞ্চুরিতে সেই লক্ষ্য থেকে এখন মাত্র ১৩৫ রান দূরে স্বাগতিক লঙ্কানরা। আজ পঞ্চমদিনে এই রান করার জন্য তাদের হাতে আছে পুরো ১০ উইকেট। তৃতীয়দিন শেষে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান নিয়ে মাঠ ছেড়েছিল নিউজিল্যান্ড। দ্বিতীয় ইনিংসে এতদূর যাওয়ার পেছনে বি.জে ওয়াটলিংয়ের হার না মানা সংগ্রামী অর্ধশতক বড় ভূমিকা রেখেছে। গলে প্রথম তিনদিন স্পিনাররা যেভাবে ছড়ি ঘুরিয়েছিলেন ব্যাটসম্যানদের ওপর চতুর্থদিন সকাল থেকে তার ছিটেফোঁটা দেখা যায়নি। তাই ওয়াটলিং টেলএন্ডার উইলিয়াম সমারভিলকে নিয়ে বেশ ভালভাবেই এগিয়ে যাচ্ছিলেন। কিন্তু তিনি নিজেই দ্রুত সাজঘরে ফিরেন। আগের তিনদিন পেসার লাহিরু কুমারার কোন ভূমিকা চোখে না পড়লেও এদিন তিনি ওয়াটলিংকে ফিরিয়ে দেন সাজঘরে। তার আগে এ উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ১৭৩ বলে ৬ চারে ৭৭ রান করেন। অর্থাৎ আগের দিনের সঙ্গে আর ১৪ রান যোগ করতেই তার বিদায় ঘটে। অষ্টম উইকেটে ৪৬ রানের জুটি ভেঙ্গে যায়। কিউইদের লিড ২০০ পেরিয়ে গেলেও শুরুর এই সাফল্যে উজ্জীবিত হয়ে ওঠে লঙ্কানরা। কিন্তু এরপর কিউই টেলএন্ডাররা স্বাগতিক বোলারদের হতাশা উপহার দিয়েছেন। সমারভিল-ট্রেন্ট বোল্ট জুটি নবম উইকেটে ৩৬ রান যোগ করেন। যার মধ্যে বোল্ট একাই দ্রুতগতিতে ২৫ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ২৬ রান করে কুমারার দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। পরে এজাজ প্যাটেলও যন্ত্রণা উপহার দিয়েছেন। তিনি ২৩ বলে ১৪ রান করে ধনঞ্জয়া ডি সিলভার তৃতীয় শিকার হওয়ার আগে শেষ উইকেটে সমারভিলের সঙ্গে আরও ২৫ রান যোগ করে গেছেন। সমারভিল ক্যারিয়ারসেরা ব্যাটিং উপহার দিয়ে ১১৮ বলে ২ চারে ৪০ রান করে অপরাজিত থাকেন। তাই ২৬৭ রানের বড় লিড নিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে কিউইরা ২৮৫ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম হয়। লাসিথ এমবুলদেনিয়া আগের দিন ৪ উইকেট নিতে পারলেও এদিন আর কোন শিকার তুলে নিতে পারেননি। তবে কুমারা ২টি এবং ধনঞ্জয়া ৩টি উইকেট নিয়ে শেষ করেন। ২৬৮ রানের জয়ের লক্ষ্য নিয়ে খেলতে নেমে শুরু থেকেই বেশ সাবধানী ছিল শ্রীলঙ্কার ওপেনাররা। অভিজ্ঞ থিরিমান্নেকে নিয়ে মাটি কামড়ে পড়ে থাকেন করুনারতেœ। প্রথম ২৫.৪ ওভার থেকে তারা মাত্র ৫০ রান তোলেন। প্রায় দু’দিন সময় হাতে থাকাতেই তাদের এমন ধীরলয়ের ব্যাটিং। কিন্তু উইকেট পেতে ব্যর্থ হয়ে কিউই বোলাররা হতাশ হয়ে পড়েন। সেই হতাশা কাজে লাগিয়ে রানকেও বাড়িয়ে নিতে থাকেন তারা। ৩২ ওভারে বিনা উইকেটে ৭৬ রান তুলে চা বিরতিতে যায় লঙ্কান ওপেনাররা। শেষ পর্যন্ত দিনটাও শেষ করেন নির্বিঘেœ। এর মধ্যে উভয়ে তুলে নেন অর্ধশতক। দিনশেষে ৫০ ওভারে বিনা উইকেটে ১৩৩ রান করে এখন গল টেস্ট জয়ের আশা করতেই পারে স্বাগতিক শ্রীলঙ্কা। কারণ আজ পঞ্চম ও শেষদিনের পুরোটা সময় উইকেটে থাকার সুযোগ সামনে নিয়ে সবগুলো উইকেট হাতে রেখে মাত্র ১৩৫ রান করতে হবে আর। করুনারতেœ ১৬৮ বলে মাত্র ২ চারে ৭১ ও থিরিমান্নে ১৩২ বলে ৪ চারে ৫৭ রান নিয়ে ব্যাট করছেন। স্কোর ॥ নিউজিল্যান্ড প্রথম ইনিংস- ২৪৯/১০; ৮৩.২ ওভার (টেইলর ৮৬, নিকোলস ৪২, র‌্যাভাল ৩৩, লাথাম ৩০; আকিলা ৫/৮০, লাকমাল ৪/২৯) ও দ্বিতীয় ইনিংস- ২৮৫/১০; ১০৬ ওভার (ওয়াটলিং ৭৭, লাথাম ৪৫, সমারভিল ৪০*; এমবুলদেনিয়া ৪/৯৯, ধনঞ্জয়া ৩/২৫, কুমারা ২/৩১, আকিলা ১/৫৬)। শ্রীলঙ্কা প্রথম ইনিংস- ২৬৭/১০; ৯৩.২ ওভার (ডিকভেলা ৬১, কুসাল মেন্ডিস ৫৩, ম্যাথুস ৫০, করুনারতেœ ৩৯, লাকমাল ৪০; এজাজ ৫/৮৯, সমারভিল ৩/৮৩, বোল্ট ২/৪৫) ও দ্বিতীয় ইনিংস (টার্গেট ২৬৮)- ১৩৩/০; ৫০ ওভার (করুনারতেœ ৭১*, থিরিমান্নে ৫৭*)। *চতুর্থদিন শেষে।
×