ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সাগরে ধরা পড়ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ

প্রকাশিত: ১১:২২, ১৮ আগস্ট ২০১৯

সাগরে ধরা পড়ছে ইলিশসহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রচুর মাছ

মোয়াজ্জেমুল হক, চট্টগ্রাম অফিস ॥ বৈরী পরিবেশ থেকে আবহাওয়া এখন অনুকূলে থাকায় সাগরজুড়ে মৎস্য আহরণে জমজমাট পরিবেশ। বিভিন্ন জাতের মৎস্যের মধ্যে ইলিশ রয়েছে শীর্ষে। চট্টগ্রামে সাগর থেকে আহরিত মৎস্যের বৃহত্তম আড়ত ফিশারিঘাটের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে চলছে জমজমাট বিকিকিনি। সম্প্রতি সাগরে টানা ৬৫ দিন সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ রাখার সরকার সিদ্ধান্ত অতিবাহিত হওয়ার পর সাগরে শুরু হয় পুনরায় মৎস্য আহরণ। শরতের শুরুতেই ইলিশ প্রজাতির মাছ ব্যাপকভাবে জেলেদের জালে ধরা পড়ছে। এরইমধ্যে পুনরায় আবহাওয়ার পরিবেশ উত্তপ্ত হয়ে উঠায় সাগর থেকে বিভিন্ন ধরনের নৌযান উপকূলে চলে আসে। বর্তমানে পরিবেশ আবার স্থিতিশীল হওয়ায় এখন ট্রলার, ইঞ্জিনচালিত বোট মৎস্য আহরণে নিয়োজিত হয়েছে। বেসরকারী পরিসংখ্যান অনুযায়ী বৈধ, অবৈধ লাখ লাখ ইঞ্জিনচালিত নৌযান সাগরে নিয়মিত মাছ আহরণে নিয়োজিত। এরমধ্যে ৬০ হাজারেরও বেশি নৌযান এককভাবে ইলিশ শিকারে নিয়োজিত। চলতি বছর সাগর থেকে ৫ লাখ টনেরও বেশি ইলিশ আহরণের টার্গেট রয়েছে। সে টার্গেটের প্রক্রিয়ায় প্রতিদিন ইঞ্জিনবোট বোঝাই হয়ে সাগর থেকে আসছে বিভিন্ন প্রজাতির মাছের সঙ্গে ইলিশও। উল্লেখ করা যেতে পারে, বর্তমানে সব ধরনের মাছ উৎপাদনের পরিমাণ ৩৫ লাখ টনেরও বেশি। এছাড়া এ আহরিত মাছের মধ্যে ইলিশের পরিমাণ বাংলাদেশী সমুদ্রসীমার মধ্যে সবচেয়ে বেশি। যার পরিমাণ প্রায় ৬০ শতাংশ বলে বিশেষজ্ঞ বিভিন্ন সূত্রের মত রযেছে। অবশিষ্ট পরিমাণ ভারত, মিয়ানমারসহ কযেকটি দেশে আহরিত হয়ে থাকে। সাগরে বর্তমানে আহরিত মাছের মধ্যে ইলিশের আধিক্য রয়েছে। তাই জেলেদের মুখেও হাসি ফুটেছে। ইলিশের দামও আগের তুলনায় কমেছে কেজিতে ১শ’ থেকে ২শ’ টাকা হারে। সঙ্গত ক্রেতারাও খুশি। নগরীতে সামুদ্রিক মাছের বৃহত্তম আড়ত ফিশারিঘাটের আড়তগুলোতে প্রতিদিন সকালে টনে টনে মাছ পাইকাররা কিনছে এবং তা পরবর্তীতে খুচরা বিক্রির জন্য বিভিন্ন বাজারে যাচ্ছে। এরমধ্যে বড় একটি অংশ যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। এ প্রসঙ্গে আড়তদারদের বিভিন্ন সূত্রে জানানো হয়েছে, ৬৫ দিন সাগরে সব ধরনের মাছ ধরা বন্ধ থাকার কারণে মৎস্যজীবীদের দিন কেটেছে কষ্টে। এখন সুদিনই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এক কেজি থেকে এর বেশি ওজনের ইলিশের মূল্য কেজি প্রতি ১ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি ছোট মাঝারি সাইজের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ৩শ’ থেকে ৬শ’ টাকায়। এছাড়া সামুদ্রিক অন্যান্য প্রজাতির মাছ আহরণেও গতি বেড়েছে। মৎস্য আহরণে নিয়োজিত নৌযান মালিকদের সূত্রে জানানো হয়েছে, এখন সাগরে তেমন উত্তাল পরিস্থিতি না থাকায় প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের নৌযান গভীর সাগরে যাচ্ছে। আবার মাছ বোঝাই করে বিভিন্ন নৌযান ঘাটে ঘাটে তা অবতরণ করাচ্ছে। এ প্রক্রিয়ায় নৌযান মালিকরাও দীর্ঘ সময় পর লাভের মুখ দেখছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, বঙ্গোপসাগরে ইতোমধ্যে ৪৩০ প্রজাতির মাছ শনাক্ত হয়েছে। নতুন নতুন প্রজাতির মাছের সন্ধানে সাগরে অনুসন্ধান অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশী জলসীমা অভ্যন্তরে এখনও যে পরিমাণ মৎস্য আহরিত হয়ে থাকে তা এখনও বহুলাংশে কম। বর্তমান সরকার সামুদ্রিক মৎস্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে ব্লু ইকোনমি জোরদারের যে পরিকল্পনা নিয়েছে সে লক্ষ্যে নতুন নতুন প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা অব্যাহত রয়েছে।
×