ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

৭ বছর পর পরিবার ফিরে পেল খাদিজা

প্রকাশিত: ০৯:৩৩, ১৮ আগস্ট ২০১৯

৭ বছর পর পরিবার ফিরে পেল খাদিজা

মামুন-অর-রশিদ, রাজশাহী ॥ ২০১২ সালে প্রতিবেশী এক ভাইয়ের মাধ্যমে ভারতে পাচার হয়েছিল খাদিজা খাতুন (১৯)। এরপর দীর্ঘ ৬ বছর ভারতের মালদহে সরকারী এক সেফহোমে থাকতে হয়েছে তাকে। গত বছরের ১৯ এপ্রিল কোন এক মাধ্যমে চাঁপাইনাবগঞ্জের শিবগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসে রাজশাহীর মানবাধিকার সংস্থা ‘এ্যাসোসিয়েশন ফর কমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট-এসিডি’র শেল্টার হোমে আশ্রয় নিয়েছিল সে। সেই থেকে খাদিজা দীর্ঘ এক বছর ৪ মাস রাজশাহীতে এসিডি’র শেল্টার হোমে লালন-পালন হচ্ছিল। অবশেষে শনিবার এসিডি’র মাধ্যমেই মা-বাবাকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ে খাদিজা খাতুন। খাদিজা জানান, ‘দীর্ঘ ৭ বছর পর মায়ের মুখ দেখতে পেয়ে মনে হচ্ছে আকাশের চাঁদ হাতে পেয়েছি। কোনদিন ভাবতেও পারিনি বাবা-মাকে ফিরে পাব। পরিবারকে ফিরে পেয়ে এত খুশি হয়েছি যা কাউকেই বুঝাতে পারব না।’ এ সময় সে এসিডি’র প্রতি কৃতজ্ঞতাও প্রকাশ করে। খাদিজার বাবার নাম আবুল কাশেম ফকির আর মা আনোয়ারা বেগম। এসিডি’র অফিসে এসে মা আনোয়ারা বেগম জানান, তাদের বাড়ি ময়মনসিংহ। তবে দীর্ঘদিন ঢাকার গুলশান-২ এর নূরের চালা এলাকায় পরিবারকে নিয়ে বাস করছিলেন আনোয়ারা। এখনও সেখানেই বসবাস করছেন। ২০১২ সালে খাদিজা যখন নিখোঁজ হয় তার আগে সে মাদ্রাসায় পড়ছিল। পড়ালেখার পাশাপাশি পাশের বাসার ধনাঢ্য এক ব্যক্তির সন্তানকে দেখাশোনার কাজ করছিল খাদিজা। একদিন ওই বাড়িতে গিয়ে সেখান থেকেই নিখোঁজ হয় খাদিজা। পরে জানতে পারেন, প্রতিবেশী এক লোকের মাধ্যমে খাদিজা ভারতে পাচার হয়ে গেছে। তারপর থেকে আনোয়ারা মেয়েকে পাওয়ার আশা ছেড়ে দিয়েছিলেন। আনোয়ারা বলেন, ‘গত এক সপ্তাহ আগে এসিডি’র মাধ্যমে হঠাৎ মেয়ের খোঁজ পান তিনি। তখন থেকেই মেয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা হয়। বুঝতে পারি এই সেই আমার খাদিজা। অবশেষে গুলশান থেকে মেয়েকে নিতে রাজশাহী আসেন তারা। শনিবার সকালে এসিডি অফিসে মেয়েকে পেয়ে খুব ভাল লেগেছে মন্তব্য করে আনোয়ারা বলেন মেয়েকে পেয়ে মনে হচ্ছে স্বপ্ন দেখছি।’ শেষ পর্যন্ত আমরা পরিবারের খোঁজ পেয়ে শনিবার দুপুরে খাদিজাকে মা-বাবার কাছে হস্তান্তর করেছি।’
×