ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

ট্যানারিগুলোকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান

প্রকাশিত: ০৯:২৮, ১৮ আগস্ট ২০১৯

ট্যানারিগুলোকে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ সব ট্যানারিকে একসঙ্গে কাজ না করে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন শিল্প সচিব আব্দুল হালিম। শনিবার সাভারে চামড়া শিল্পনগরীতে চামড়া শিল্প-সংক্রান্ত বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি একথা বলেন। সাভার ট্যানারি শিল্পনগরীর সিইটিপি সম্পূর্ণ চালু রয়েছে উল্লেখ করে শিল্প সচিব বলেন, কোরবানির সময় ট্যানারিগুলো সারা বছরের সরবরাহের অর্ধেক চামড়া সংগ্রহ করে। আগামী দু-তিন মাস এ শিল্প নগরী ট্যানারিগুলো পূর্ণ গতিতে চলবে। পিক সিজনে উৎপাদিত চামড়ার আন্তর্জাতিক মান বজায় রাখার স্বার্থে সব ট্যানারিকে একসঙ্গে কাজ না করে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে কাজ করার নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করার ফলে কিছু কিছু স্থানে মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীরা কাঁচা চামড়া নষ্ট করেছেন। এটি পুরো দেশের চিত্র নয়। অন্য স্থানের চামড়া যথাযথভাবে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রশাসন ও জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে মাঠ পর্যায়ে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিল্প সচিব বলেন, লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানদ-ে ১ হাজার ৩৬২টি পয়েন্ট রয়েছে। এর মধ্যে ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্ট ও ইফ্লুয়েন্ট ট্রিটমেন্টের জন্য ২০০ পয়েন্ট। লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের সার্টিফিকেট অর্জনে অবশিষ্ট পয়েন্টগুলোর প্রতি মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। বিটিএ নেতা সাখাওয়াত উল্লাহ বলেন, অতীতের যে কোন সময়ের তুলনায় সাভার ট্যানারি শিল্প নগরী ভালভাবে কাজ করছে। শিল্প নগরীর সিইটিপি’র চারটি ইউনিটই যথাযথভাবে কাজ করছে। শীঘ্রই লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপের মানদ- অর্জন করা সম্ভব হবে বলে জানান তিনি। চামড়ার গুণগত মান ভাল থাকলে সরকারের নির্ধারিত মূল্যে ট্যানারিগুলো চামড়া ক্রয় করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন তিনি। বিসিকের চেয়ারম্যান বলেন, সিইটিপি সম্পূর্ণ অটোমেটেড হবে। দূর থেকে এর কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি আমদানি করা হয়েছে। ট্যানারির বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য শীঘ্রই অস্থায়ী ভিত্তিতে তিনটি ডাম্পিং ইয়ার্ড নির্মাণ করা হবে। কিছু কিছু ট্যানারির সেডিমেন্টেশন ট্যাঙ্ক নেই আবার অনেক ট্যানারির ট্যাঙ্কের আকৃতি ও ডিজাইনে ত্রুটি রয়েছে উল্লেখ করে বিসিকের চেয়ারম্যান বলেন, এ ত্রুটির ফলে বিভিন্ন ধরনের অনাকাক্সিক্ষত বস্তু পানিতে ভেসে এসে সিইটিপি’র কাজকে বাধাগ্রস্ত করছে। এ ধরনের ট্যানারিগুলো শনাক্ত করে সেগুলোকে নোটিস প্রদানের সিদ্ধান্ত সভায় গৃহীত হয়। ট্যানারিগুলো যাতে সব নিয়ম-কানুন মেনে চলে সেজন্য মালিকদের পক্ষ থেকে তদারকির লক্ষ্যে একটি কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বুয়েটের অধ্যাপক আব্দুল জলিল বলেন, কিছু কিছু ট্যানারি ক্রোম বর্জ্য পৃথকভাবে না ফেলায় ক্রোমের সঙ্গে অন্যান্য জিনিস চলে আসছে। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী প্রতি মেট্রিক টন চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ট্যানারিগুলো ২৫ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করতে পারবে। বর্তমানে সাভার ট্যানারি শিল্প নগরীর ট্যানারিগুলো একই পরিমাণ চামড়া প্রক্রিয়াজাত করতে ৪০ হাজার লিটার পানি ব্যবহার করছে। এতে করে সিইটিপি’র ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ছে। ডিপ টিউবওয়েলে মিটার লাগানো হলে পানির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন প্রকল্প পরিচালক প্রকৌশলী জিতেন্দ্রনাথ পাল, বাংলাদেশ ট্যানার্স এ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সাধারণ সম্পাদক সাখাওয়াাত উল্লাহ, বাংলাদেশ ফিনিশড লেদার, লেদার গুডস এ্যান্ড ফুটওয়্যার এক্সপোর্টার্স এ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ দিলজাহান ভূঁইয়া ও উপদেষ্টা এম এ আউয়াল, সাভারের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পারভেজুর রহমান ও সাভারের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ এফ এম সায়েদ।
×