ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা তুলে এখন তিন কোম্পানিই বন্ধ

প্রকাশিত: ০৯:২২, ১৮ আগস্ট ২০১৯

শেয়ারবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা তুলে এখন তিন কোম্পানিই বন্ধ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ ব্যবসা সম্প্রসারণের কথা বলে পুঁজিবাজার থেকে কোটি কোটি টাকা উত্তোলন করা তিন কোম্পানির উৎপাদনই বন্ধ হয়ে গেছে। উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি কোম্পানি তিনটি আর্থিক হিসাবও প্রকাশ করছে না। সেই সঙ্গে শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশও দিচ্ছে না কোম্পানি তিনটি। ফলে কোম্পানিগুলোর অবস্থান হয়েছে দেড় গ্রুপে। শেষ পাঁচ বছরে তালিকাভুক্ত হওয়া কোম্পানিগুলোর তথ্য পর্যালোচনা করে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। অথচ ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়েছিল। কোম্পানি তিনটি হলো, এমারেল্ড অয়েল, সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইল এবং তুং হাই নিটিং এ্যান্ড ডাইং। কোম্পানি তিনটি সম্মিলিতভাবে পুঁজিবাজার থেকে ১০০ কোটি টাকা উত্তোলন করেছে। পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, তালিকাভুক্তির মাত্র পাঁচ বছরের মধ্যে উৎপাদন বন্ধ হয়ে যাওয়া ভাল লক্ষণ নয়। এগুলো দুর্বল কোম্পানির লক্ষণ। এভাবে দুর্বল কোম্পানি পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ পেলে বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক সদস্য বলেন, ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য পুঁজিবাজারে এসে যে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় সেসব কোম্পানির সততা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এসব যে দুর্বল কোম্পানি তা বুঝতে বিশেষজ্ঞ হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। তিনি আরও বলেন, গত কয়েকবছরে পুঁজিবাজারে বেশ কিছু দুর্বল কোম্পানি তালিকাভুক্ত হয়েছে। এসব কোম্পানি পুঁজিবাজারে আসায় বাজারের কোন উপকার হয়নি, বরং বাজারের আরও ক্ষতি হয়েছে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার উচিত মানসম্মত কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাব (আইপিও) অনুমোদন করা। শেয়ারবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে দুর্বল কোম্পানিকে কোন পরিস্থিতিতেই পুঁজিবাজার থেকে অর্থ উত্তোলনের সুযোগ দেয়া উচিত হবে না। সিএ্যান্ডএ টেক্সটাইল ॥ ২০১৫ সালে প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৪৫ কোটি টাকা সংগ্রহ করে কোম্পানিটি। ব্যবসা সম্প্রসারণের জন্য পুঁজিবাজার থেকে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকা উত্তোলন করা কোম্পানির পারিবারিক কলহে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়ার পাশাপাশি সময় পার হয়ে গেলেও বিগত ৮টি প্রান্তিকের আর্থিক হিসাব প্রকাশ করেনি এ প্রতিষ্ঠানটি। তুং হাই নিটিং এ্যান্ড ডাইং ॥ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ৩৫ কোটি টাকা নেয়া এ কোম্পানিটি ২০১৭ সালের মার্চের পরে কোন আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেনি। পুঁজিবাজার থেকে টাকা তোলার পর পরিচালকদের অন্তর্কলহে কোম্পানির উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে। ব্যবসা না থাকায় শেয়ারহোল্ডাররাও কোন লভ্যাংশ পাচ্ছেন না। পুঁজিবাজারে কোম্পানিটির অবস্থান হয়েছে পঁচা বা ‘জেড’ ক্যাটাগরির তালিকায়। এমারেল্ড অয়েল ॥ প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের মাধ্যমে পুঁজিবাজার থেকে ২০ কোটি টাকা নেয়া কোম্পানিটি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ২০১৪ সালে। তালিকাভুক্তির পর কোম্পানিটির বেসিক ব্যাংক ঋণ কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়ে। এর পরপরই কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায়। কয়েকবছর ধরে কোম্পানিটির উৎপাদন বন্ধ থাকার পাশাপাশি কার্যালয়ও বন্ধ হয়ে গেছে। শেয়ারহোল্ডারদের কোন লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানিটি ২০১৭ সালের মার্চের পর থেকে আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে না।
×