ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

পাক-লঙ্কার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ১০:৪০, ১৭ আগস্ট ২০১৯

  পাক-লঙ্কার চেয়ে বেশি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার এ্যাসেজের প্রথম টেস্ট দিয়েই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়ে গেছে। যেটিকে টেস্ট বিশ্বকাপও বলা হচ্ছে। এ দীর্ঘ পরিসরের বিশ্বকাপে পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার চেয়ে বেশি টেস্ট খেলবে বাংলাদেশ। পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা যেখানে ১৩টি করে টেস্ট খেলার সুযোগ পাবে। সেখানে বাংলাদেশ একটি ম্যাচ বেশি, টেস্ট বিশ্বকাপে ১৪টি টেস্ট খেলবে। ২০২১ সালের জুনে ইংল্যান্ডের লর্ডসে হবে টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। ২০২১ সালের মার্চ পর্যন্ত যে দুটি দল পয়েন্ট তালিকায় শীর্ষে থাকবে তারাই টেস্ট বিশ্বকাপের শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি খেলবে। যেহেতু খেলা হবে টেস্ট। স্বাভাবিকভাবেই এ ফরমেটে বাংলাদেশ কতটা দুর্বল তা সবারই জানা। বাংলাদেশ যে প্রথমবারের মতো শুরু হওয়া টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে পারবে না, চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে না; তাও সবার বোঝা আছে। কিন্তু ২০১৫ সাল থেকে যে টেস্টেও সাফল্য পাচ্ছে বাংলাদেশ, সেই ধারাবাহিকতা তো বজায় থাকবে? ২০১৫ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ওয়ানডের মতো টেস্টেও সাফল্যে ভেসেছে বাংলাদেশ। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ড্র, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ড্র, ইংল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, অস্ট্রেলিয়া, জিম্বাবুইয়ে, ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারিয়েছে বাংলাদেশ। সেই ধারাবাহিকতা টেস্ট বিশ্বকাপে বজায় থাকলে ভাল অবস্থানেই থাকবে টাইগাররা। আগামী ১৪ নবেম্বর থেকে ভারতের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজের প্রথম টেস্ট দিয়ে টেস্ট বিশ্বকাপ খেলা শুরু করবে বাংলাদেশ। দুই বছর মেয়াদী এ বিশ্বকাপে ২০২১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত টেস্ট খেলবে। নয় দল টেস্ট খেলবে। এর মধ্যে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে খেলবে বাংলাদেশ। তিনটি হোম ও তিনটি এ্যাওয়ে সিরিজ খেলবে। সাতটি নিজেদের মাটিতে, সাতটি দেশের বাইরে খেলবে বাংলাদেশ। এ বছর নবেম্বরে ভারতের মাটিতে ভারতের বিরুদ্ধে দুটি, আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুটি, ফেব্রুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে দুটি, জুলাই-আগস্টে শ্রীলঙ্কার মাটিতে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ৩টি, আগস্ট-সেপ্টেম্বরে দেশের মাটিতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ২টি ও ২০২১ সালের জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে দেশের মাটিতে ৩ টেস্ট ম্যাচের সিরিজ খেলবে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সিরিজ দিয়েই বাংলাদেশের দুই বছর মেয়াদী টেস্ট বিশ্বকাপ খেলা শেষ হবে। টেস্ট বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলতে হলে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পাওয়া দুই দলের একটি হতে হবে। পয়েন্ট তালিকায় সেরা দুই দল খেলবে ফাইনাল। শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচটি টাই বা ড্র হলে লীগপর্বে যে দল পয়েন্ট তালিকায় ওপরে ছিল, তারাই চ্যাম্পিয়ন হবে। প্রতিটি ম্যাচের জন্য ১২০ পয়েন্ট করে থাকবে। জিতলে পুরো পয়েন্ট মিলবে। টাই হলে অর্ধেক পয়েন্ট মিলবে। আর ড্র হলে তিন ভাগ করে এক ভাগ পয়েন্ট অর্থাৎ ৪০ পয়েন্ট মিলবে। হারলে কোন পয়েন্টই থাকবে না। সিরিজে যত ম্যাচ বেশি হবে তত পয়েন্ট ভাগ হবে। যেমন দুই ম্যাচের সিরিজে জয়ের জন্য মিলবে ৬০ পয়েন্ট। ম্যাচ টাই হলে ৩০ পয়েন্ট করে পাওয়া যাবে। ড্র হলে ২০ পয়েন্ট মিলবে। হারলে কোন পয়েন্ট নেই। তিন ম্যাচের সিরিজ হলে জয়ের জন্য ৪০ পয়েন্ট, টাই হলে ২০ পয়েন্ট, ড্র হলে ১৩ পয়েন্ট মিলবে। চার ম্যাচের সিরিজে জিতলে ৩০ পয়েন্ট, টাই হলে ১৫ পয়েন্ট, ড্র হলে ১০ পয়েন্ট মিলবে। ঠিক তেমনি ৫ ম্যাচের সিরিজ হলে জিতলে ২৪ পয়েন্ট, টাই হলে ১২ পয়েন্ট ও ড্র হলে ৮ পয়েন্ট মিলবে। পাঁচ ম্যাচের এ্যাসেজ দিয়েই টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ শুরু হয়েছে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচ খেলবে ইংল্যান্ড। সবচেয়ে বেশি ২২ ম্যাচ খেলবে তারা। এরপর অস্ট্রেলিয়া ১৯, ভারত ১৮, দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ১৫, নিউজিল্যান্ড ১৪, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা ১৩ ও বাংলাদেশ ১৪ ম্যাচ খেলবে। এ হিসেবেই বোঝা যাচ্ছে, ইংল্যান্ডের ওপরে থাকার সুযোগ ভালই থাকছে। ইংল্যান্ড যেখানে ২৬৪০ পয়েন্টের খেলা খেলবে, সেখানে বাংলাদেশ ১৬৮০ পয়েন্টের খেলা খেলবে। ইংল্যান্ডের চেয়ে ৯৬০ পয়েন্ট কম খেলবে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের তাই ওপরে থাকার সম্ভাবনা একেবারেই কম থাকছে। দুই বছর ধরে নয় দল ২৭টি সিরিজে মোট ৭২টি ম্যাচ খেলবে। প্রত্যেক দল তিনটি হোম ও তিনটি এ্যাওয়ে সিরিজ খেলার সুযোগ পাবে। প্রত্যেক দল মুখোমুখি হবে ছয় প্রতিপক্ষের। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট আলাদা থাকবে। লীগ পদ্ধতিতে হবে এ চ্যাম্পিয়নশিপ। ২০২১ সাল পর্যন্ত যে প্রতিপক্ষ থাকবে তাতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত আবারও লীগ পদ্ধতিতে হবে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। সেখানে দুই একটি প্রতিপক্ষ দল বদলাবে। আইসিসির টেস্ট র‌্যাঙ্কিংয়ের পয়েন্ট এবং অবস্থানও আলাদা থাকবে। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ম্যাচগুলোর পয়েন্ট থেকে আইসিসির নিয়মে র‌্যাঙ্কিংয়েও পয়েন্ট জমা হবে। এখন টেস্ট খেলুড়ে দল হচ্ছে ১২টি। জিম্বাবুইয়ে, আফগানিস্তান, আয়ারল্যান্ড টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের তালিকায় থাকছে না। তাই ১১ দল খেলবে। এই দলগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় দ্বিপাক্ষিক টেস্টও খেলতে পারবে। তবে সেই টেস্টগুলোর পয়েন্ট চ্যাম্পিয়নশিপে যুক্ত হবে না। আইসিসির র‌্যাঙ্কিং পয়েন্টে যুক্ত হবে। বাংলাদেশ দল চার বা পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলার সুযোগ পায়নি। পাঁচ টেস্টের সিরিজ খেলার সুযোগ পাচ্ছে শুধু টেস্টের র‌্যাঙ্কিংয়ের এক নম্বরে থাকা ভারত, চার নম্বরে থাকা ইংল্যান্ড ও পাঁচ নম্বরে থাকা অস্ট্রেলিয়া। এই তিন দলের সঙ্গে শুধু চার টেস্টের একটি সিরিজ খেলার সুযোগ পাচ্ছে দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ চারটি দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ ও দুটি তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলবে। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ খেলবে না। আইসিসি র‌্যাঙ্কিংয়ে নয় নম্বরে আছে বাংলাদেশ। যে সিরিজগুলো দেশের মাটিতে হবে অন্য দেশগুলোর মতো সিরিজগুলো আয়োজনের দায়িত্ব, স্পন্সর, টিকেট ও টিভি সম্প্রচারের আয় বাংলাদেশেরই থাকবে। শুধু ফাইনাল ম্যাচটির সবকিছুর দায়িত্বে থাকবে আইসিসি।
×