ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

স্ত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় রুয়েট শিক্ষককে মারধর

প্রকাশিত: ০৯:২৩, ১৭ আগস্ট ২০১৯

 স্ত্রীকে যৌন হয়রানির প্রতিবাদ করায় রুয়েট শিক্ষককে মারধর

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ চোখের সামনেই স্ত্রীকে যৌন হয়রানি করছিল বখাটের দল। প্রতিবাদ করেছিলেন রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (রুয়েট) শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম। ফলশ্রুতিতে বখাটেদের মারধরের শিকার হন তিনি। এ সময় অনেকেই দাঁড়িয়ে দেখলেও কেউ তাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসেনি। গত ১০ আগস্ট রাতে রাজশাহী মহানগরীর মনিচত্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ‘প্রধানমন্ত্রী গোল্ড মেডেল’ প্রাপ্ত রাশিদুল ইসলাম রুয়েটের ইলেক্ট্রিক্যাল এ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের শিক্ষক। এ নিয়ে ঝামেলা এড়াতে এই শিক্ষক শুক্রবার পর্যন্ত আইনের আশ্রয় নেননি। তবে বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লম্বা এক পোস্ট দিয়েছেন তিনি। সেখানেই বলেছেন, ঘটনার সময় আশপাশে থাকা মানুষের কাছে ‘বাঁচান’ বলে সাহায্য চাইলেও কেউ এগিয়ে আসেনি। একপর্যায়ে ক্রোধান্বিত হয়ে ‘ও আমার বউ, গার্লফ্রেন্ড না, কাবিননামা দেখাতে হবে আপনাদের?’ বললে উল্টো বখাটেদের পক্ষ নিয়ে একজন ভিড়ের মধ্য থেকে বলে, হ্যাঁ, কাবিননামা নিয়েই চলাফেরা করতে হবে! সেদিনের সেই ঘটনার বিবৃতি দিয়ে শিক্ষক রাশিদুল ইসলাম ফেসবুকে তার ওয়ালে লেখেন, মেনে নিন নয়তো দেশ ছেড়ে চলে যান। এ দেশে আপনার চোখের সামনে আপনার মা, বোন অথবা বউ ধর্ষিত হলেও প্রতিবাদ করবেন না, আশপাশে কাউকে পাবেন না। মার খেয়ে মরবেন। তিনি লেখেন, সাহেববাজার মনিচত্বরের মতো জনবহুল এলাকাতেও আমার বউ হেনস্তার শিকার হয়। এক পাল ছেলের মধ্যে একজন আমার বউকে পেছন থেকে কয়েকবার ইচ্ছাকৃত ধাক্কা দেয়। দুই-তিনবার সহ্য করলেও পরেরবার প্রতিবাদ করি। ব্যাস, ছেলেদের দাপট শুরু। শেষে আমাকে সোনাদীঘি মসজিদের সামনে ৫-৭ জন মিলে ঘিরে ধরে মারা শুরু করে। এই পর্যন্ত না হয় মেনে নিলাম। কিন্তু ওখানে কম করে হলেও ৫০ জন আমার মার খাওয়া দেখছিল। একজনও এগিয়ে আসেনি। মার খাওয়ার এক পর্যায়ে আমি দর্শকদের উদ্দেশ্যে বলি, ‘বাঁচান আমাকে’, কোন রেসপন্স পাইনি। একজন মোটরসাইকেল থামিয়ে আমার মার খাওয়া দেখছিল, আমি সাহায্য চাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মোটরসাইকেল চালিয়ে চলে গেল। এ বিষয়ে কথা বলতে শিক্ষক রাশিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, পুলিশের সঙ্গে কথা বলছি। তাই এখন কথা বলতে পারব না। তবে ওই সময় নগরীর বোয়ালিয়া থানায় গিয়ে শিক্ষক রাশিদুল ইসলামকে পাওয়া যায়নি। থানার ওসি নিবারণ চন্দ্র বর্মণ জানান, ঘটনার পর থেকেই তিনি থানায় আসেননি।ওসি জানান, ওই শিক্ষকের শ্বশুর তাকে বিষয়টি ফোন করে জানিয়েছেন। এরপর তিনি নিজে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। আশপাশে থাকা ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখেছেন। কিন্তু কিছু বুঝতে পারেননি। আর এ নিয়ে ভুক্তভোগী কোন অভিযোগ না করায় তিনি নিজেই থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন। ওসি বলেন, লিখিত অভিযোগ কিংবা মামলা হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×