ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

খানাখন্দে ভরা বাটাজোর সরিকল সড়ক

প্রকাশিত: ০৯:১৩, ১৭ আগস্ট ২০১৯

খানাখন্দে ভরা বাটাজোর সরিকল সড়ক

স্টাফ রিপোর্টার, বরিশাল ॥ সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কের মধ্যকার বড় বড় গর্তে পানি জমে গৌরনদী উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ বাটাজোর-সরিকল সড়কে জলাশয়ের সৃষ্টি হয়। ছয় কিলোমিটার সড়কটিতে খানাখন্দের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে এ সড়কের ওপর নির্ভরশীল দুটি রুটে চলাচলকারী লোকাল বাস। খানাখন্দের কারণে ইতোমধ্যে এ সড়কে ছোট ছোট যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে কয়েক শ’ পরিবারের সদস্য বেকার হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিন থেকে প্রতিনিয়ত এ সড়ক দিয়ে যাতায়াতকারী স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষকে চরম ভোগান্তি পোহাতে হলেও বিষয়টি যেন দেখার কেউ নেই। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জরুরী ভিত্তিতে গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ সংশ্লিষ্ট উর্ধতন কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। চন্দ্রহার গ্রামের বাসিন্দা রেমন তালুকদার, সাহাজিরা গ্রামের শামীম মীর, বাটাজোর গ্রামের ওসমান গনি, ঠাকুরমল্লিক গ্রামের উপেন চন্দ্র মন্ডলসহ একাধিক বাসিন্দা বলেন, প্রতিদিন সড়কটি দিয়ে গৌরনদী উপজেলার বাটাজোর, সরিকল ও নলচিড়া ইউনিয়ন এবং বাবুগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার বাসিন্দা চলাচল করে থাকেন। বরিশাল জেলা শহর, গৌরনদী উপজেলা পরিষদ ও স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর বাড়িতে যাতায়াতের জন্য এসব এলাকার বাসিন্দার একমাত্র ভরসাই হচ্ছে বাটাজোর-সরিকল সড়ক। এ সড়কের ওপর নির্ভর করে দীর্ঘদিন থেকে এসব এলাকার লক্ষাধিক বাসিন্দার যাতায়াতের সুবিধার্থে বরিশাল-সরিকল এবং বরিশাল-রাস্তার মাথা নামক এলাকার দুটি রুটে নিয়মিত বাস চলাচল করে আসছে। এছাড়া ছোট ছোট যানবাহনে যাত্রী ও বিভিন্ন ধরনের মালামাল পরিবহন করে জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন এসব এলাকার শত শত পরিবার। সরিকল ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান জাকির হোসেন সান্টু বলেন, কয়েক বছর আগে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারের সময় স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের এক প্রভাবশালী ঠিকাদার নিম্নমানের নির্মাণসামগ্রী ব্যবহার করায় কয়েকদিনের মধ্যেই পুরো সড়কটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। পরবর্তীতে আর কোন সংস্কার কাজ না হওয়ায় পিচ উঠে গিয়ে সড়কের মধ্যে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়। বর্তমানে পুরো সড়কটি দিয়ে যানবাহন তো দূরের কথা জনসাধারণের হেঁটে চলাচলই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। এছাড়াও সামান্য বৃষ্টিতেই সড়কের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া গর্তে পানি জমে জলাশয়ের সৃষ্টি হচ্ছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে এ সড়কে যাত্রীপরিবহন করা ছোট ছোট যানবাহনকে। জরুরী ভিত্তিতে জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এলাকাবাসী স্থানীয় সংসদ সদস্য আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহসহ সংশ্লিষ্ট দফতরের উর্ধতন কর্মকর্তাদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বাটাজোর-সরিকল সড়কের বেহাল দশার কথা স্বীকার করে গৌরনদী উপজেলা এলজিইডি বিভাগের প্রকৌশলী মোঃ অহিদুর রহমান জানান, সড়কটি সংস্কারের জন্য প্রকল্প তৈরি করে সংশ্লিষ্ট দফতরে প্রেরণ করা হয়েছে। সৈয়দপুর সংবাদদাতা সৈয়দপুর, নীলফামারী থেকে জানান, সৈয়দপুরে কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড কাদায়-পানিতে চাষের জমিতে পরিণত হয়েছে। এতে এ দুই স্ট্যান্ডের যাত্রীদের চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বাস টার্মিনালের সমাধান দ্রুত হলেও দূরপাল্লাগামী কোচ স্ট্যান্ডের চলমান বিবাদের কারণে সমাধান না হওয়ায় এ দুর্ভোগ দিনে-দিনে প্রকট হয়ে উঠেছে। জানা যায়, সৈয়দপুরের নিয়ামত এলাকায় ১৯৯০ সালে প্রায় ৬ একর জমির মধ্যে কেন্দ্রীয় বাসটার্মিনাল গড়ে ওঠে। এর জন্য পৃথকভাবে অভ্যন্তরীণ দিনাজপুর, রংপুর, পঞ্চগড়, ঠাকুরগাঁও, বগুড়া, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ রুটের টিকেট কাউন্টার ঘর ও মালিক, শ্রমিকদের কার্যালয়সহ যাত্রীদের বিশ্রামাগার সমৃদ্ধ দ্বিতল ভবন নির্মাণ করা হয়। পুরো স্ট্যান্ডের মেজেতে ইট বিছিয়ে গাড়ি পার্কিং ব্যবস্থাপনা করা হয়। তবে দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় মেজের ইট উঠে বর্ষায় তা কাদার ক্ষেতে পরিণত হয়েছে। এতে বেহাল অবস্থার কারণে বাস চালক গাড়ি নিয়ে দাঁড়াতে পারছেন না। যাত্রীরাও কাদা-পানির কারণে গাড়িতে উঠতে পারছেন না। ফলে এসব গাড়ি প্রধান সড়কের ওপর দাঁড় করিয়ে যাত্রী ওঠানামা করা হচ্ছে। এতে করে ছোট-বড় দুর্ঘটনাও ঘটছে। একই অবস্থা হয়েছে সৈয়দপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন দূরপাল্লাগামী ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডের। ১৯৯৫ সালে এ বাস টার্মিনালটি স্থানান্তরিত হয়। খালি পড়ে থাকে এ এলাকা। ২০০৯ সালে শহরের অভ্যন্তরে শহীদ ডাঃ জিকরুল হক সড়কের কোচ কাউন্টার সম্মুখে একটি দুর্ঘটনায় ৪ জনের প্রাণহানি হয়। এতে কাউন্টার ব্যবসায়ী ও দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিবাদে ওই সড়কে কোচ প্রবেশ বন্ধ হয়। সমাধানে সৈয়দপুর মোটর শ্রমিক নেতৃবৃন্দ ২০১২ সালে সেই পুরনো বাসস্ট্যান্ডটিকে কোচ স্ট্যান্ড হিসেবে ব্যবহার শুরু করে। অনেক কোচ বিক্ষিপ্তভাবে বিভিন্নস্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা করায়। তবে দীর্ঘ স্টেডিয়াম সম্মুখে ঢাকা কোচ স্ট্যান্ডটির মেজেতে কোন ইট না বিছানোয় বর্তমানে এটাও কর্দমাক্ত ধানের জমির রূপ নিয়েছে। এছাড়া স্ট্যান্ডটিতে যাত্রী ছাউনি, টয়লেট ও অন্যন্য সুবিধা গড়ে না ওঠায় এ বর্ষায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে যাত্রীদের। এ নিয়ে সৈয়দপুর পৌর মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার বলেন, বাস টার্মিনাল মেরামত ও সংস্কারের জন্য চলতি অর্থবছরে অর্থ বরাদ্দ রাখা হয়েছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে। স্টেডিয়াম সংলগ্ন ঢাকা কোচ স্ট্যান্ড বিষয়ে এখনও জানানো হয়নি। তবে দূরপাল্লার কোচগুলোর স্ট্যান্ড ব্যবহার ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার জন্য সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন বলে জানান তিনি।
×