স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি এবং মহিলা সমিতি মিলনায়তনে নিয়মিতভাবে মঞ্চস্থ হচ্ছে ‘থিয়েটার-৫২’ এর প্রথম প্রযোজনা ‘নননপুরের মেলায় একজন কমলাসুন্দরী ও একটি বাঘ আসে’ নাটক। নাটকটি রচনা করেছেন বদরুজ্জামান আলমগীর। আর নির্দেশনা দিয়েছেন তরুণ নির্দেশক জয়িতা মহলানবীশ। নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেন নূরে খোদা মাসুক সিদ্দিক, রবিন বসাক, রুবাইয়াত মনজুর পিপ, সুরভী রায়, মোঃ নজরুল ইসলাম, আদিব মজলিশ খান, মোঃ রাসেল, ইব্রাহীম তারেক, শাহিনূর শিকদার পাখি, আদ্রিতা রহমান, রামিম হাসান তপু, মোহাম্মদ নাদিম হাসান, মোঃ রিফাত সরকার, রায়হান খান, নূপুর শর্মা, দিপু আহমেদ প্রেম, রুদ্র রায় অপু, রাহাত ও সানি। নাটকের সেট ডিজাইন করেছেন পলাশ হেনড্রি সেন। লাইট ডিজাইন করেছেন আসলাম অরণ্য, প্রপস পলাশ হেনড্রি সেন ও রবিন বসাক। সঙ্গীত পরিচালনায় এবিএস জেম। নাটকের বিভিন্ন গানে কণ্ঠ দিয়েছন চেতনা রহমান ভাষা, গোপী দেবনাথ, সুরভী রায়, মোঃ নজরুল ইসলাম, রতন হক ও জয়িতা মহলানবীশ। গানে সুর দিয়েছেন রতন হক। নাটকে ব্যবহৃত পাহাড়ী সুর, কীর্তনের সুর ও বিয়ের গীত সংগৃহিত। অকাল প্রয়াত প্রাচ্যনাটের সদস্য রিঙ্কন সিকদারের, ‘যাইবার আগে যাও বলে যাও’ গানটি নাটকে ব্যবহার করা হয়েছে। নাটকে সঙ্গীত প্রক্ষেপণ করেছেন মোঃ নেওয়াজ শরীফ। কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ করেছেন কামরুল হাসান ফেরদৌস, রবিন বসাক, নূরে খোদা মাসুক সিদ্দিক। নাটকের জন্য পোশাক ডিজাইন করেছেন আফছান আনোয়ার। প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন, শাহীনুর রহমান। নাটকের সমন্বয়ক হিসাবে কাজ করেছেন মোঃ নজরুল ইসলাম।
পাহাড়ী ঢালে ঝর্ণার পানিতে ভেসে আসা এক মানব শিশুকে নিয়ে চাকমাদের মনে আনন্দের জোয়ার বয়ছে। নাম পরিচয়হীন সেই এতটুকু মানব শিশুকে কোলে তুলে জনপদে নিয়ে এসেছিলেন মঙ্গল নামের এক বীর মুক্তিযোদ্ধা। দূরে পানিতে ভেসে যেতে দেখেছেন এক মহিলাকে, হয়ত সেই মা জননী। এমনই এক গল্পের মধ্যদিয়ে লোকালয়ে যুদ্ধশিশু জাইদুল ইসলামকে কেন্দ্র করে ‘নননপুরের মেলায় একজন কমলা সুন্দরী ও একটি বাঘ আসে’ গল্পের কাহিনী এগিয়ে যায়। নাটকটির কেন্দ্রীয় চরিত্র জাইদুল জন্ম নেয় পাকসেনা ক্যাম্পে সৈন্যদের দ্বারা তার মায়ের সম্মানহানির মাধ্যমে। যার ফলে দেখা যায় জাইদুলের জন্ম পরিচয়ের জটিলতা। নাটকে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় মানুষের উপর পাক-বাহিনী ও এদেশীয় সহযোগীরা যে অত্যাচার খুন, ধর্ষণ, লুটতরাজ চালিয়েছিল তার চিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়েছে খুব সহজে। দেখানো হয়েছে এদেশীয় দোসর রাজাকারদের চক্রান্ত্রের ছায়া। গল্পের একপর্যায়ে জাইদুলের মৃত্যু হলে সে ঈশ্বরকে বলে আমি আবার পৃথিবীতে ফিরতে চাই, তবে মানুষ হয়ে নয়! সুন্দরবনের বাঘ হয়ে। এভাবে নাটকটি এগিয়ে চলে। এটি ‘থিয়েটার ৫২’ নাট্যদলের প্রথম প্রযোজিত নাটক । বাংলার মিথ ও বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের মিথস্ক্রিয়া ঘটেছে এই নাটকে। নাটকটি একটি যুদ্ধ শিশুকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হলেও এর প্রতিটি চরিত্রই এই বাংলার সাধারণ গ্রামীণ মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে।