ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

চেলসিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল

প্রকাশিত: ১১:৪৩, ১৬ আগস্ট ২০১৯

চেলসিকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ব্যর্থতার পিঠেই থাকে সাফল্য। গত বছর কষ্টের বেদনায় নীল হতে হয়েছিল লাল বাহাদুরের দল লিভারপুলকে। অথচ চলমান বছরে কষ্ট ভুলে একের পর এক উৎসব করছে দ্য রেডসরা। গত ১ জুন উয়েফা চ্যাাম্পিয়ন্স লীগ জিতে ২০১৮-১৯ মৌসুম শেষ করেছিল জার্গেন ক্লপের দল। ঠিক দেড় মাস পর নতুন মৌসুমের (২০১৯-২০) শুরুতেও সাফল্য ধরা দিয়েছে মানে, ফিরমিনো, সালাহদের। এবার মৌসুমের শুরুতেই লিভারপুল জিতে নিয়েছে উয়েফা সুপার কাপ। বুধবার রাতে তুরস্কের ইস্তানবুলের ভোদাফোন পার্কে অনুষ্ঠিত শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে স্বদেশী ইংলিশ ক্লাব চেলসিকে টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলে হারিয়েছে লিভারপুল। নির্ধারিত ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ গোলে অমীমাংসিত থাকার পর খেলা গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। সেখানেও দু’দল একটি করে গোল করলে ম্যাচের স্কোর দাঁড়ায় ২-২। এরপর ভাগ্য নির্ধারণী টাইব্রেকারে লিভারপুল তাদের পাঁচটি শটেই গোল করে। কিন্তু চেলসি প্রথম চারটিতে গোল করতে পারলেও তাদের শেষ শটটি রুখে দিয়ে লিভারপুলকে উৎসবে ভাসান আচমকা সেরা একাদশে সুযোগ পাওয়া স্প্যানিশ গোলরক্ষক আদ্রিয়ান। এই নিয়ে নিজেদের ইতিহাসে চতুর্থবারের মতো উয়েফা সুপার কাপ ঘরে তুলেছে লিভারপুল। এই ম্যাচটি পরিচালনা করেন ফ্রান্সের মহিলা রেফারি স্টেফানি ফ্রাপাট। এর ফলে উয়েফা আয়োজিত ছেলেদের বড় কোন আসরে ম্যাচ পরিচালনার বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন তিনি। প্রতি বছর নতুন মৌসুমের শুরুতে আগের মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লীগ ও ইউরোপা লীগের চ্যাম্পিয়নের মধ্যে উয়েফা সুপার কাপের ম্যাচ হয়ে থাকে। গতবার চ্যাম্পিয়ন্স লীগের চ্যাম্পিয়ন লিভারপুল আর ইউরোপা লীগের শিরোপাধারী চেলসি। যে কারণে দল দু’টি মুখোমুখি হয়। এতে করে আরেকটি অল-ইংলিশ লড়াই উপভোগ করে ফুটবল বিশ্ব। গত মৌসুমে লিভারপুল ও টটেনহ্যাম হটস্পার অল-ইংলিশ চ্যাম্পিয়ন্স লীগের ফাইনালে মুখোমুখি হয়েছিল। শুধু তাই নয়, ইউরোপা লীগের ফাইনালও হয়েছিল অল-ইংলিশ। যেখানে চেলসির প্রতিপক্ষ ছিল আর্সেনাল। তবে উয়েফা সুপার কাপে এবারই প্রথম হয়েছে অল-ইংলিশ লড়াই। আর এ নিয়ে অষ্টমবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলো একই দেশের দুই ক্লাব। সাম্প্রতিক সময়ে লিভারপুলের সাফল্যের অন্যতম প্রধান রূপকার ব্রাজিলিয়ান গোলরক্ষক এ্যালিসন বেকার। কিন্তু চোটের কারণে তিনি ম্যাচটি খেলতে পারেননি। তার বদলে সুযোগ হয় আদ্রিয়ানের। বদলি এই গোলরক্ষকই লিভারপুলকে ট্রফি পাইয়ে দিয়েছেন। টাইব্রেকারে তো সেভ করেছেনই, ম্যাচেও কয়েকটি দুর্দান্ত সেভ করে দলকে বাঁচিয়েছেন। দারুণ উপভোগ্য ম্যাচের ২৩ মিনিটে গোলবঞ্চিত হয় চেলসি। এ সময় স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড পেড্রোর শট লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ানের হাতে লেগে ক্রসবারে প্রতিহত হয়। যে কারণে এগিয়ে যাওয়া হয়নি ইউরোপা লীগ চ্যাম্পিয়নদের। তবে ৩৬ মিনিটে ঠিকই এগিয়ে যায় ব্লুজরা। গোল করেন ফ্রান্সের হয়ে বিশ্বকাপ জয়ী তারকা অলিভিয়ের জিরুড। যুক্তরাষ্ট্রের ফরোয়ার্ড ক্রিস্টিয়ান পুলিসিচের ডিফেন্স চেরা পাস পেয়ে কোনাকুনি শটে লক্ষ্যভেদ করেন তিনি। ৪০ মিনিটে পুলিসিচ লিভারপুলের জালে বল জড়ালেও অফসাইডের কারণে গোলটি বাতিল করেন রেফারি। বিরতির পর বদলি হিসেবে নেমেই লিভারপুলকে সমতা ফেরাতে ভূমিকা রাখেন ব্রাজিলিয়ান তারকা রবার্টো ফিরমিনো। ৪৮ মিনিটে ফ্যাবিনহোর বাড়ানো বল আগুয়ান গোলরক্ষক কেপা আরিসাবালাগা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার আগ মুহূর্তে টোকা দিয়ে দেন অরক্ষিত সাদিও মানেকে। সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন গত মৌসুমে ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের সর্বোচ্চ গোলদাতা মানে। এরপর ৯০ মিনিটের খেলা ১-১ গোলে শেষ হয়। ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত ৩০ মিনিটে। ম্যাচের ৯৫ মিনিটে লিভারপুলকে এগিয়ে দেন দলের প্রথম গোলদাতা মানে। জোড়া গোল করে ম্যাচের সেরা খেলোয়াড়ও হন সেনেগালের এই ফরোয়ার্ড। ১০১ মিনিটে স্পট কিক থেকে চেলসিকে সমতায় ফেরান জর্জিনহো। ট্যামি আব্রাহামকে ডি বক্সে গোলরক্ষক আদ্রিয়ান ফাউল করলে পেনাল্টি পায় ব্লুজরা। এরপর টাইব্রেকারে লিভারপুলের পক্ষে প্রথম পাঁচটি শটে গোল করেন রবার্টো ফিরমিনো, ফ্যাবিনহো, ডিভক অরিজি, ট্রেন্ট আলেক্সান্ডার আরনল্ড ও মোহাম্মদ সালাহ। আর চেলসির পক্ষে প্রথম চারটি শটে গোল করেন জর্জিনহো, রস বার্কলি, মাসোন মাউন্ট ও এমারসন পালমেরি। তবে পঞ্চম শটে গোল করতে ব্যর্থ হন চেলসির আব্রাহাম। পা দিয়ে দুর্দান্তভাবে শটটি রুখে দেন লিভারপুল গোলরক্ষক আদ্রিয়ান।
×