ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

কাশ্মীর ইস্যু স্বস্তি পরিষদে তুলতে চায় পাকিস্তান

প্রকাশিত: ০৯:০৬, ১৫ আগস্ট ২০১৯

কাশ্মীর ইস্যু স্বস্তি পরিষদে তুলতে চায় পাকিস্তান

কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা লোপ করার ভারতীয় সিদ্ধান্ত নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনার জন্য মঙ্গলবার চিঠি দিয়েছে পাকিস্তান। কাশ্মীরে ভারতের এই পদক্ষেপকে দখলদারিত্বের সঙ্গে তুলনা করে ইসলামাবাদ বলেছে, দিল্লীর এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য চরম হুমকি। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদে জরুরী বৈঠক আহ্বান ও নিন্দা জানানোর দাবি তুলেছে ইসলামাবাদ। পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কোরেশি নিরাপত্তা পরিষদ বরাবর পাঠানো চিঠিতে কাশ্মীরে ভারতের অবৈধ পদক্ষেপ নিয়ে আলোচনার জন্য নিরাপত্তা পরিষদের প্রধানকে অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি চিঠিতে উল্লেখ করেছেন, ভারত কাশ্মীর ইস্যুতে জাতিসংঘের আইন ভঙ্গ করেছে। এনডিটিভি, ডন, এক্সপ্রেসি টিবিউন ও পিটিআই। শাহ মেহমুদ কোরেশি কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে পোলান্ডের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাচেক জাপুতোভিচের সঙ্গে আলোচনা করেন। পোলিস পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, কাশ্মীর নিয়ে চলমান মতবিরোধ শুধু ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমাধান সম্ভব। এই আলোচনা আয়োজনের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নকে উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান জাচেক জাপুতোভিচ। শাহ মেহমুদ কোরেশি চিঠিতে আরও লিখেছেন, আমরা কোন দ্বন্দ্ব চাই না। কিন্তু ভারত যেন আমাদের সংযমকে দুর্বলতা না ভাবে। কোরেশি বলেন, ভারতের ‘ভয়ঙ্কর’ সিদ্ধান্ত নিয়ে আমরা নিরাপত্তা পরিষদে আলোচনা করতে চাই। এই অবস্থায় ভারত যদি মনে করে তারা পেশিশক্তি দেখাবে, আত্মরক্ষার স্বার্থে পাকিস্তানও সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিরোধ গড়বে। পোল্যান্ড চলতি মাসের জন্য জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদ প্রধানের দায়িত্ব পালন করছে। মঙ্গলবার পাকিস্তানের পাঠানো চিঠি প্রাপ্তির কথা স্বীকার করে নিউইয়র্কে পোলিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাচেক জাপুতোভিচ বলেন, নিরাপত্তা পরিষদ ইসলামাবাদের তরফে পাঠানো একটি চিঠি পেয়েছে। চিঠিতে কাশ্মীর নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। ১৪ আগস্ট পাকিস্তানের জাতীয় দিবসের দিনটিকে কাশ্মীরী সংহতি দিবস হিসেবে পালন করেছে পাকিস্তান। এ উপলক্ষে বুধবার এক ভাষণে পাক প্রেসিডেন্ট ডক্টর আরিফ আলভি বলেছেন, পাকিস্তানের আপামর জনতা কাশ্মীরীদের প্রতি সংহতি প্রকাশ করছে। আমরা সবসময় কাশ্মীরীদের আকাক্সক্ষার প্রতি শ্রদ্ধা দেখাব। ইসলামাবাদে আয়োজিত জাতীয় দিবসের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে দেয়া ভাষণে পাক প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, আমরা কোনভাবেই কাশ্মীরীদের একাকী ফেলে যাব না। কারণ কাশ্মীরীরাও আমাদেরই জনগণ। তাদের ব্যথা মানে আমাদের ব্যথা। পাকিস্তান কাশ্মীরের পাশে ছিল, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এ সময় পাকিস্তানের সিনিয়র রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এদিকে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদার বিধান লোপ করায় মোদি সরকারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ব্রিটেনের সামাজিক মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা চললেও দেশটির ক্ষমতাসীন দলের এক সংসদ সদস্য বুধবার বলেছেন,এটি নিতান্তই ভারতের অভ্যন্তরীণ ইস্যু। বব ব্লাকম্যান নামের এই ব্রিটিশ এমপি প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে ভারতের পদক্ষেপের প্রতি সমর্থন জানানোর অনুরোধ জানিয়ে লেখা এক চিঠিতে বলেন, আমরা ভারতের মতো একটি দীর্ঘ ঘনিষ্ঠ বন্ধুরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হস্তক্ষেপ করতে পারি না। কাশ্মীর ইস্যু নিয়ে ব্রিটেনের প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিনের এক টুইটার মেসেজ নিয়ে রবিবার দেশটির পার্লামেন্টে বিস্তর বাদানুবাদ হয়। করবিন ওই মেসেজে লিখেছিলেন, কাশ্মীর ইস্যুতে দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিস্থিতি এখন উত্তাল। এ সময় কাশ্মীর ইসুতে জাতিসংঘের আইন মেনে নেয়ার কথা বলেন করবিন। লেবার নেতা করবিনের এই ধরনের বক্তব্যকে স্রেফ উস্কানিমূলক আখ্যা দিয়ে বব ব্লাকম্যান বলেন, ভারতের সকল জনগণের জন্য একই আইন প্রয়োগ নিয়ে দিল্লীর সিদ্ধান্ত নিয়ে সমালোচনা করা সত্যিই বিস্ময়কর। তিনি বলেন, যে কোন গণতন্ত্রমনা এমপির কাশ্মীর নিয়ে দিল্লীর এই সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানানো উচিত।
×