ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

নওগাঁয় পানির দামে চামড়া বিক্রি

প্রকাশিত: ০৬:৫৩, ১৪ আগস্ট ২০১৯

নওগাঁয় পানির দামে চামড়া বিক্রি

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ ॥ নওগাঁয় গত কয়েক বছরের চেয়ে এবছর ঈদু উল আয্হার কোরবানি পশুর চামড়া একেবারে পানির দামে বেচা কেনা হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে ও পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে চামড়ার দাম অনেক বেশি থাকলেও ট্যানারী মালিকদের দু’টি সংগঠন সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দাম নির্ধারণ করে দেয়া ও বকেয়া টাকা পরিশোধ না করার কারনে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানায়। নওগাঁ জেলার ৪টি উপজেলা ভারতীয় সীমান্তবর্তী হওয়ায় এবার চামড়া ভারতে পাচার হবার আশংকা করছেন কিছু ব্যবসায়ী। এদিকে কোন ভাবেই যাতে কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার হতে না পারে এই জন্য বিজিবি ও পুলিশ চামড়া বাহী গাড়ীর ওপর কড়া নজরদারী ও ৪টি উপজেলায় ভারতীয় সীমান্তবর্তী এলাকায় টহল জোরদার করেছে। এ বারের ঈদে আড়াই থেকে তিন কোটি টাকার চামড়া বেচা কেনার সম্ভাবনা থাকলেও স্থানীয় চামড়া ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, ট্যানারী মালিকরা তাদের নিকট পাওনা টাকা না দেয়ায় তারা বিপাকে পড়েছেন। একারনে এবার তারা ধার দেনা করে টাকা সংগ্রহ করে তাদের জাত ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে কম দামে চামড়া কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রতি বছর ঈদু উল আযহার দিনে নওগাঁয় কোরবানীর পশুর চামড়ার বিশাল বাজার বসে। শহরের বিভিন্ন এলাকা ও গ্রামাঞ্চল থেকে চামড়া কিনে এনে বিক্রির জন্য ভিড় করে মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবারে চামড়ার দাম কম হওয়াই মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ীরা এবার পথে বসার উপক্রম হয়েছে। নওগাঁ জেলা চামড়া ব্যবসায়ী গ্রুপের সভাপতি মমতাজ উদ্দিন বলেন, সরকাররে বেঁধে দেয়া চামড়ার দামের চেয়ে বেশী দামে চামড়া কিনতে হচ্ছে। তবে পার্শ্ববতী দেশ ভারতে চামড়ার দাম অনেক বেশী। একারনে চামড়া ভারতে পাচার হবার আশংকা আছে। প্রতি বছর সিন্ডিকেটের মাধ্যেমে কেন্দ্র থেকে চামড়ার দাম কমানো হয়। এ বারও একই ভাবে কম দাম নির্ধারণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন এ ব্যবসায়ী নেতা। চামড়া শিল্পকে টিকে রাখতে ট্যানারী মালিকদের নিকট পাওনা টাকা পরিশোধ ও ভারতে পাচার রোধ করে চামড়ার প্রকৃত মুল্য নির্ধারণে সরকারের নিকট দাবী জানান তিনি। এছাড়া চামড়ার ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখতে হলে ‘ওয়েট ব্লু’ করে রপ্তানিসহ এ শিল্পের স্বার্থ রক্ষায় নীতিমালা তৈরী করতে হবে। তা না হলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে এ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। দাম কম হওয়ার কারণে এবছর ২৫ শতাংশ চামড়া নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভবনা আছে বলে মনে করেন তিনি। কয়েক জন মৌসুমী চামড়া ব্যবসায়ী বলেন, এবার গরুর চামড়ার মূল্য ৩শ’ টাকা থেকে সর্বচ্চ ৫শ’ টাকা এবং খাসির চামড়ার মূল্য ২০ থেকে ৪০টাকা দরে কেনা বেচা হচ্ছে। বিজিবি পতœীতলা ১৪ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মোঃ জাহিদ হাসান পিবিজিএম, জি+ বলেন, যেহেতু নওগাঁ সীমান্তবর্তী এলাকা, একারণে সীমান্ত এলাকার সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্তক করা হয়েছে। সীমান্তবর্তী এলাকায় বিশেষ টহল জোরদার করা হয়েছে। যাতে কোন ক্রমেই কোরবানির পশুর চামড়া ভারতে পাচার হতে না পারে। পুলিশ সুপার মোঃ ইকবাল হোসেন পিপিএম জানান, কোরবানি পশুর চামড়া কোন ভাবেই যাতে ভারতের সীমান্ত মুখি হতে না পারে এজন্য আমাদের জেলার সীমান্ত এলাকার ৪টি থানাসহ সংশ্লিষ্ট সকলকে সর্তক করা হয়েছে। এমনকি পুলিশিং কমিউনিটিকেও এবিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। কোন ক্রমেই কোরবারি পশুর চামড়া ভারতে পাচার হবে না বলে দাবী করেন তিনি।
×