ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি

প্রকাশিত: ১০:৪২, ১১ আগস্ট ২০১৯

 ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু আক্রান্তের  সংখ্যা বেশি

স্টাফ রিপোর্টার ॥ রাজধানীর বাইরে শনাক্তকৃত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। শনিবার রাজধানীর চেয়ে দেশের অন্য জেলাগুলোতে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের মোট আক্রান্ত ২১৭৬ রোগীর মধ্যে রাজধানীতে ১০৬৫ জন এবং দেশের বিভিন্ন জেলায় মোট ১১১১ নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে। ঈদ উপলক্ষে ঘরে ফেরা মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে ঢাকার বাইরে আক্রান্তের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। গত তিনদিন ধরেই রজাধানীর তুলনায় দেশের অন্য জেলাগুলোতে আক্রান্তের সংখ্যা বেশি শনাক্ত হচ্ছে। সরকারী হিসাবেই ডেঙ্গুতে মৃত্যুর সংখ্যা ২৯ জনে পৌঁছেছে। তবে এই সংখ্যা ৬৫ ছাড়িয়ে গেছে বলে দাবি করেছে বেসরকারী সূত্রসমূহ। শনিবার বরিশালে এক ও ঠাকুরগাঁওয়ে এক ডেঙ্গু রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ফরিদপুর, নওগাঁসহ অনেক জেলায় সীমিত পরিসরে স্থানীয়ভাবে ডেঙ্গু আক্রান্তের ঘটনা ঘটায় আশঙ্কা প্রমাণ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। অধিদফতরের ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম সূত্রে প্রাপ্ত তথ্যের পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত সর্বমোট ডেঙ্গু আল্ডান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৩৮,৮৮৪ জন এবং ছাড়পত্র পাওয়া মোট ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ২৯৩৯৫ জন। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে সর্বমোট ডেঙ্গু আল্ডান্ত ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৯৪২০ জন। ঢাকার ৪০টি সরকারী ও বেসরকারী হাসপাতালে ডেঙ্গু আল্ডান্ত ভর্তি রোগী রয়েছে ৫,২৫৮ জন। রাজধানীসহ সারাদেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন ভর্তি রোগী হয়েছে ২১৭৬ জন। এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু সংখ্যা ২৯ জন। সূত্রটি আরও জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ২৫৩, মিটফোর্ড হাসপাতালে ৬৩, ঢাকা শিশু হাসপাতালে ২৪, শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ৭৮, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩০, রাজারবাগের পুলিশ হাসপাতালে ১৪, মুগদা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ১১৩, পিলখানার বিজিবি হাসপাতালে ২, সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ৩৪, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ৭২ নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। আর ঢাকা শহর ব্যতীত ঢাকা বিভাগের ১৩ জেলায় ২৭৭ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের চার জেলায় ৮৭ জন, চট্টগ্রামের ১১ জেলায় ২২৬ জন, খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় ১২৬ জন, রাজশাহী বিভাগের ৮ জেলায় ১১৪ জন, রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় ৭১ জন, বরিশালের ৬ জেলায় ১৭৮ জন এবং সিলেট বিভাগের ৪ জেলায় ৩২ জন নতুন ডেঙ্গু রোগী ভর্তি হয়েছে। আর বর্তমানে ঢাকা শহর ব্যতীত ঢাকা বিভাগে ৯১২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগে ৩০২ জন, চট্টগ্রাম বিভাগে ৭৬৭ জন, খুলনা বিভাগে ৬৬৫ জন, রাজশাহী বিভাগে ৫০৬ জন, রংপুর বিভাগে ৩০৩ জন, বরিশাল বিভাগে ৬০০ জন এবং সিলেট বিভাগে ১০৭ রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছে। জেলা ও উপজেলায় স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হওয়ার বিষয়ে সতর্কবার্তা ॥ দেশের সব কটি বিভাগে ছড়িয়ে পড়েছে ডেঙ্গু রোগী। রাজধানীতে আক্রান্তদের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় এডিস মশা দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার খবরও পাওয়া যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডেঙ্গুর বাহক দুই প্রকার এডিস মশার মধ্যে ‘এডিস এজিপ্টি’ শহরে এবং ‘এডিস এ্যালবোপিকটাস’ গ্রামাঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। ফলে যারা ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে আক্রান্ত হয়ে গ্রামাঞ্চলে চলে যাচ্ছেন তাদের শরীর থেকে ডেঙ্গুর জীবাণু টেনে নিয়ে গ্রামাঞ্চলেও ডেঙ্গুর প্রকোপ বাড়াতে পারে ‘এডিস এ্যালবোপিকটাস’ মশা। এ বিষয়ে সতর্ক ও সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা। এ বিষয়ে সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর) এর সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডাঃ এএসএম আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, ঢাকার বাইরেও ডেঙ্গ রোগীর সংখ্যা বেড়েছে। ঢাকায় আক্রান্তদের অনেকে গ্রামে চলে গেছেন। ডেঙ্গু মশা দু’ ধরনের হয়ে থাকে। গ্রামাঞ্চলে ছড়ানোর আরেকটি কারণ হলো- ডেঙ্গু বাহক ‘এডিস এজিপ্টি’ মশা যেমন নাগরিক মশা, শহরের মশা। এ ধরনের মশা শহুরে এলাকায় মানুষের বাড়ি-ঘরে থাকে। ডেঙ্গুর আরেকটি বাহক ‘এডিস এ্যালবোপিকটাস’ থাকে গ্রামাঞ্চলে। এই এডিস এ্যালবোপিকটাস যদি কোন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীকে কামড় দেয় তাহলে এই মশাটিও ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। তাই গ্রামে যারা যাচ্ছে তারা গিয়ে সেখানে যে মশার কামড় খাচ্ছে তাতে করে ডেঙ্গু ছড়াতে পারে। ফলে গ্রামাঞ্চলে ডেঙ্গুর বিস্তার লাভের সুযোগ রয়ে যাচ্ছে। আর গ্রামাঞ্চলে স্থানীয়ভাবে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকলে ডেঙ্গু পরিস্থিতির ব্যাপকতা বৃদ্ধি পাবে। আর স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডাঃ সানিয়া তহমিনা বলেন, ঈদ উদযাপন করতে লাখ লাখ শহুরে মানুষ গ্রামে যাবেন। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু রোগী অথবা রোগীর অজান্তেই প্রাথমিকভাবে ডেঙ্গু রোগী হয়ে যাওয়া লোকজন গ্রামে যাবেন। এমনিতেই ঢাকার বাইরে নতুন নতুন ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে। ঈদের ছুটিতে ঢাকার বাইরে ডেঙ্গু বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ঈদের সময়ে যখন মানুষ ঢাকা ছাড়বে, তখন তারা ‘রিজার্ভার’ হিসেবে কাজ করবেন।’ যদি এডিস মশা সেসব এলাকায় থাকে, তখন সেসব মশার মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়াবে বলে জানান অধ্যাপক ডাঃ গানিয়া তহমিনা। ঘরে ফেরা মানুষদের স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরামর্শ ॥ আসন্ন পবিত্র ঈদ উল আজহা উদযাপন করতে হাজার হাজার মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে যাবেন। আর নিজ নিজ বাসা-বাড়ি ‘এডিস মশার প্রজননমুক্ত পরিবেশ’ করে রেখে যাওয়ার জন্য তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদফতর। অধিদফতরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, কিছুদিন পরই গ্রামের বাড়িতে ঈদ উদযাপন করতে ঘরে ফেরা মানুষের ঢল নামবে। শুধু বাসা বাড়ি নয়, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন সরকারী-বেসরকারী অফিস জনশূন্য হয়ে পড়ে থাকবে। ওইসব নিরিবিলি স্থানগুলো হয়ে উঠতে পারে এডিস মশা প্রজননের উত্তম স্থান। এ বিষয়ে অধিদফতরের এক সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তসমূহের মধ্যে রয়েছে ঈদের ছুটিতে যারা ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে ঈদ করতে যাবেন তাদের বাড়ি, অফিস, সব প্রতিষ্ঠানে বিশেষ করে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সমূহের টয়লেটের হাই এবং লো কমোড ঢেকে দিয়ে যেতে হবে। রেফ্রিজারেটরের ট্রে-এর পানি ফেলে শুকিয়ে রেখে যেতে হবে। এয়ার কন্ডিশনারের পাইপের পানিসহ যে কোন পানি পরিষ্কার করে রেখে যেতে হবে। বালতি, বদনা, হাড়িপাতিল, ড্রাম, গামলা, ঘটি-বাটি ইত্যাদির পানি ফেলে পরিষ্কার করে উল্টিয়ে রেখে যেতে হবে। বারান্দা ও বাসার ছাদের উপর রাখা ফুলের টবের ট্রের পানি ফেলে পরিষ্কার করে উল্টিয়ে রেখে যেতে হবে। পানির ট্যাংকের ঢাকনা বন্ধ করে রেখে যেতে হবে। ঈদের ছুটিতে সব সরকারী-বেসরকারী হাসপাতালের হেল্প ডেস্ক খোলা রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ঈদের দিন কমিউনিটি ক্লিনিকের কমিউনিটি হেলথ কেয়ার প্রোভাইডারগণ (সিএইচসিপি) অনকল এ চিকিৎসা কাজে দায়িত্বরত থাকবেন। স্থানীয় কোন রোগীর যে কোন সমস্যায় সিএইচসিপিদের প্রদানকৃত মোবাইল নম্বরে যোগাযোগ করবেন। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে মাঠপর্যায়ে সার্বক্ষণিক মনিটরিং চালু থাকবে। বাংলাদেশ মেডিসিন সোসাইটির সহযোগিতায় ২৬ জেলার সিভিল সার্জন ও সংশ্লিষ্ট আরএমও, মেডিসিন ও শিশু বিশেষজ্ঞের অংশগ্রহণে ডেঙ্গু ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন নিয়ে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়। ডেঙ্গু রোগীর চিকিৎসা সেবা নিশ্চিতকরণে সরকারী হাসপাতালসমূহে ৩৪০টি আইসিইউ বেড ও ৩৩৫টি ডায়ালাইসিস ইউনিট চালু আছে। এছাড়াও বেসরকারী হাসপাতালসমূহেও এই সেবা চালু আছে। সব বিমানবন্দর, স্থলবন্দর, নৌ ও সমুদ্র বন্দরসমূহে এক্স-স্ট্যান্ডের মাধ্যমে ডেঙ্গু রোগ প্রতিরোধে বিশেষ সতর্কতা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। বরিশাল ॥ স্টাফ রিপোর্টার বরিশাল থেকে জানান শেবাচিম হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রুশা আক্তার (১০) নামের আরও এক রোগী শনিবার সকাল ১০টার দিকে মারা গেছে। এর আগে শুক্রবার রাত আটটার দিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত রুশা ঝালকাঠী জেলার রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা রুহুল আমীনের কন্যা। হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ বাকীর হোসেন জানান, রুশার পরিবার ঢাকায় থাকে। ঢাকায় অবস্থানকালেই সে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়। গত দুইদিন আগে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে রুশা রাজাপুরের গ্রামের বাড়ি আসে। পথিমধ্যে সে আরও অসুস্থ হয়ে পরলে তাকে বরিশাল নগরীর বেসরকারী রাহাত-আনোয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাত আটটার দিকে রুশাকে মুমূর্ষু অবস্থায় শেবাচিম হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এনিয়ে গত এক মাসে শেবাচিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় চার এবং গৌরনদী উপজেলা হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এদিকে শনিবার সকাল পর্যন্ত শেবাচিমে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩৩৯ ডেঙ্গু রোগী। এরমধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ভর্তি হয়েছেন ৯৮ জন। যা এ পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টার হিসেব অনুযায়ী রেকর্ড সংখ্যক ভর্তি রোগী। ভর্তি হওয়া ৯৮ জনের মধ্যে পুরুষ ৫২, নারী ২৬ ও ২০ শিশু। ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন ৩২ জন। হাসপাতালের পরিচালক বলেন, ঈদের আগমুহূর্তে রোগীর সংখ্যা বাড়াটা শঙ্কার। কারণ এখন মানুষ গ্রামের বাড়িতে ফিরছে আর রোগীর সংখ্যাও বাড়ছে। তবে আমরা আগাম সব ধরনের প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছি। ফলে চিকিৎসা কার্যক্রম ব্যাহত হবে না। ঠাকুরগাঁও ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা ঠাকুরগাঁও থেকে জানান, জেলায় ডেঙ্গু জ্বরে এ পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা ৬৬ জন এবং ডেঙ্গুতে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে তিন জনে। মৃতদের মধ্যে শুক্রবার রাতে রাণীশংকৈল উপজেলার অনুকূল রায়ের মেয়ে অপি রাণী রায় (১৬) নামে এক কলেজছাত্রী ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল থেকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। অপি রাণীর খবর নিশ্চিত করে ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডাঃ এইচএম আনোয়ারুল ইসলাম জানান, অপি রাণী রায় গত ৫ আগস্ট অসুস্থ হয়ে ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়ে মহিলা মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি হলে ল্যাবরেটরী টেস্টে তার ডেঙ্গু ধরা পড়ে। তিনি আরও জানান, শুক্রবার (৯ আগস্ট) বিকেলে তার অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে কর্তব্যরত ডাক্তার রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে নেয়ার পথে তিনি নিথর হয়ে পড়লে নিকটবর্তী দিনাজপুর সদর হাসপাতালে নেয়া হলে জরুরী বিভাগে কর্মরত ডাক্তার ফারহানা আখতার তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নওগাঁ ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ থেকে জানান, নওগাঁ জেলায় ছড়িয়ে পড়ছে ডেঙ্গু রোগী। ঢাকা থেকে ঈদ করতে আসা ডেঙ্গু রোগের জীবাণু বহনকারী লোকজনের মাধ্যমে জেলায় এ রোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ নিশ্চিত করেছে। নওগাঁ সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাঃ রওশন আরা খানম জানান, শনিবার বিকেল ৩টা পর্যন্ত সদর হাসপাতালে মোট ৮৪ জনকে ডেঙ্গু রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে। এরমধ্যে ১০ রোগী হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। রাজশাহী মেডিক্যালে রেফার্ড করা হয়েছে ২৩ জনকে। অবশিষ্টরা চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছে। তিনি আরও জানান, উল্লিখিত সংখ্যক রোগীর মধ্যে মাত্র ৬ জন স্থানীয়ভাবে আক্রান্ত হয়েছে। বাকিরা ঢাকা আগত রোগী। ফরিদপুর॥ নিজস্ব সংবাদদাতা ফরিদপুর থেকে জানান, গত ২০ জুলাই থেকে শনিবার পর্যন্ত ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছিলেন ৫৯১ জন। চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৩১৭ জন। ফরিদপুরের বিভিন্ন হাসপাতালে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে ৭৬ জন। ফরিদপুর ॥ ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক কামদা প্রসাদ সাহা বলেন, এ হাসপাতালে যেসব ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন তাদের মধ্যে ৮৬ জন ফরিদপুরে, ২২ জন নিজ বাড়ি মাদারীপুরে, ১৪ জন গোপালগঞ্জে, ৩০ জন রাজবাড়ীতে, ৫ জন ঝিনাইদহে, ২ জন মাগুরায় ও মানিকগঞ্জে আক্রান্ত এবং ২১৪ জন ঢাকা আক্রান্ত হয়ে আসা রোগী ভর্তি হয়েছেন। ফরিদপুরের সিভিল সার্জন এনামুল হক জানান, গত ২০ জুলাই থেকে শনিবার পর্যন্ত ফরিদপুরে ডেঙ্গু আক্রান্ত মোট ৫৯১ জন ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তি আছেন ৩১৭ জন। এছাড়া ২২৫ জন চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে গেছেন। ৪৭ জনকে ঢাকায় স্থনান্তর করা হয়েছে এবং মারা গেছেন দুইজন। নীলফামারী ॥ স্টাফ রিপোর্টার নীলফামারী থেকে জানান, নীলফামারীতে শনিবার আরও ৭ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত হয়েছে। এনিয়ে গত ১৭ দিনে ২৫ জুলাই থেকে জেলায় ৭৪ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়েছেন। আক্রান্তরা সকলেই রাজধানী থেকে জ্বর নিয়ে নিজ জেলায় ফিরে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়। সিভিল সার্জন রনজিৎ কুমার বর্মণ বলেন, নীলফামারী আধুনিক সদর হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা এবং চিকিৎসার কোন সমস্যা নেই। ডেঙ্গু যাতে না ছড়ায় সে বিষয়ে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য কর্মীরা মাঠে কাজ করছেন। সচেতনতামূলক মাইকিং করা হচ্ছে। জ্বর হলে সরকারী হাসপাতালে আসার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। মাগুরা ॥ নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৯ রোগী মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে। এরমধ্যে ২১ পুরুষ ও ৮ মহিলা। শনিবার ৫ জন মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে । রাজশাহী ॥ স্টাফ রিপোর্টার রাজশাহী থেকে জানান, সারাদেশে ডেঙ্গুর প্রার্দুভাব প্রতিরোধে সরকারের নির্দেশনা মোতাবেক বিভিন্ন কর্মসূচী গ্রহণ করেছে রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন। এরই অংশ হিসেবে ডেঙ্গু সংক্রান্ত যেকোন সহায়তায় রাজশাহী সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ কন্ট্রোলরুম খুলেছে। কন্ট্রোলরুমে ২৪ ঘণ্টায় দায়িত্বরতা দায়িত্ব পালন করবেন। এ সংক্রান্ত যেকোন প্রয়োজন অথবা সহযোগিতায় ০১৭৬০৪০০০৫২, ০১৭৭৯৫৪১২৬৩, ০১৭৫৪১২২৫৫২, ০১৭২৭৮৬৪১৪৬, ০১৮৬২৩৭৩৩৬৬ এবং ০১৯১৪৩২৭৫৫৫ নম্বরে যোগাযোগ করার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ।
×