ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

মানিকগঞ্জে গরু চুরি করে পালাতে গিয়ে নিহত ১

প্রকাশিত: ০৯:৩৭, ১১ আগস্ট ২০১৯

 মানিকগঞ্জে গরু চুরি করে পালাতে  গিয়ে নিহত ১

জনকণ্ঠ ডেস্ক ॥ মানিকগঞ্জের সিংগাইরে গরু চুরি করে পালানোর সময় পুলিশ ফাঁকা গুলি করলে ভয়ে গাড়ি থেকে পড়ে গিয়ে চোর নিহত হয়েছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছে দুই চোর। অন্যদিকে দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জেরে গুলিবিদ্ধ হয়ে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছে। খবর নিজস্ব সংবাদদাতা ও স্টাফ রিপোর্টারের পাঠানো। মানিকগঞ্জ ॥ মানিকগঞ্জের সদর উপজেলা গকুলনগর থেকে গরু চুরি করে পিকআপ নিয়ে পালানোর সময় সিংগাইরে পুলিশের ধাওয়া খেয়ে গাড়ি থেকে পড়ে একজন নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধসহ গণপিটুনিতে দুইজন আহত হয়েছে। এই ঘটনায় সিংগাইর থানার উপপুলিশ পরিদর্শক আল মামুনও আহত হয়েছেন। গাড়ি থেকে পড়ে নিহত ওই ব্যক্তির নাম বাবুল মন্ডল (৪০)। তার বাড়ি হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামে। সিংগাইর থানার ওসি খন্দকার ইমাম হোসেন জানান, শুক্রবার ভোরে মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার গকুলনগরের তমছের আলীর বাড়ি থেকে একটি ষাঁড় ও আজমত আলীর বাড়ি থেকে একটি গাভী চুরি করে একটি পিকআপ ভ্যানে (ঢাকা মেট্রো-ন ১৩-৬৬২৫) ছয় চোর সিংগাইরের দিকে আসছে। এই খবর পেয়ে সিংগাইর থানা পুলিশ সিংগাইর বাসস্ট্যান্ডে ওই পিকআপটিকে থামানোর চেষ্টা করে। এসময় ওই পিকআপটি পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ অমান্য করে দ্রুত চলে যাওয়ার সময় উপ-পুলিশ পরিদর্শক আল মামুন পিকআপের পিছনে ওঠে পড়েন। এ সময় গরু চোররা আল মামুনকে মারধর করলে সে আত্মরক্ষার্থে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি করে। ভয়ে চলন্ত পিকআপ থেকে গরু চোরদের একজন লাফ দিলে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। সে হরিরামপুর উপজেলার সুলতানপুর গ্রামের চান্দু মন্ডলের ছেলে বাবুল মন্ডল। পিকআপটি দ্রুত পালানোর সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে মানিকনগর আলিম মাদ্রাসার দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে থেমে যায়। এ সময় উপপুলিশ পরিদর্শক আল মামুনের আত্মচিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে গরু চোরের দুইজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। এদের মধ্যে সিংগাইর উপজেলার মাধবপুর গ্রামে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্য ছকেল দেওয়ানের ছেলে মিলন দেওয়ানের (৩০) পায়ে গুলি লেগেছে। তাকে পুলিশ পাহারায় ঢাকায় চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। গণপিটুনিতে আহত আরেক জন অজ্ঞাত পরিচয় ৩৫ বছরের ওই ব্যক্তিকে মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এদিকে গরু চোরদের মারধরে আহত উপপুলিশ পরিদর্শক আল মামুনকে সিংগাইর উপজেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভর্তি করা হয়েছে। উদ্ধার করা গরু ও পিকআপটি থানায় রাখা হয়েছে আর নিহত বাবুল মন্ডলের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। দিনাজপুর ॥ দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিটন মন্ডল (৪৫) নামে একজন গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হয়েছে। একই ঘটনায় আহত হয়েছে জজকোর্টের নাজির, জারিকারকসহ উভয় পক্ষের আরও ১৫জন। শনিবার দুপুর দেড়টায় নবাবগঞ্জ উপজেলার জয়পুর ইউনিয়নের ভালকা গ্রামে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত লিটন মন্ডল নবাবগঞ্জ উপজেলার চককরিম গ্রামের আতিয়ার রহমানের ছেলে। আহতরা হলেন, নবাবগঞ্জ উপজেলার চককরিম মনোহরপুর গ্রামের জোনাব আলীর ছেলে সাজু (২৫), একই এলাকার জালাল উদ্দিনের ছেলে খোরশেদ আলম (২৮), ইসলামপুর গ্রামের মৃত অফুর উদ্দিনের ছেলে সাহাব উদ্দিন (৬০), বড়আড়া গ্রামের আনোয়ার হোসেনের স্ত্রী বিলকিস বেগম (৩৫), বড়আড়া কানাহার গ্রামের আজিজুর রহমানের মেয়ে মনোয়ারা বেগম (৪০), মঞ্জু আরা বেগম (৩৫) একই এলাকার রফিক উদ্দিনের এর স্ত্রী মঞ্জিলা বেগম (৬৫), রঘুনাথপুর গ্রামের মতিয়ার রহমানের স্ত্রী মোছাঃ আজুফা বেগম (৫০), একই এলাকার আফুর উদ্দিনের ছেলে সাহেব আলী (৬৫) ও জব্বার আলী (৫৭)। এ সময় জজকোর্টের নাজির, জারিকারক ও ৩ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছে। তাদের নাম ও পরিচয় পাওয়া যায়নি। আহতদের মধ্যে সাজু ম-ল, খোরশেদ আলম ও সাহাবউদ্দিনের শরীর গুলিবিদ্ধ হয়েছে বলে দিনাজপুর এম. আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ার্ড মাস্টার মাসুদ রানা জানান। নিহত লিটনের পরিবারের সদস্যরা বলেন, পুলিশের ছোড়া গুলিতে লিটন গুলিদ্ধি হয়ে আহত হলে তাকে প্রথমে ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক মেডিক্যাল অফিসার রেজাউল করিম উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দিনাজপুর এম আব্দুর রহিম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন। মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক লিটনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে নবাবগঞ্জ থানার ওসি সুব্রত কুমার সরকার বলেন, উপজেলার বড়আড়া গ্রামের রফিক উদ্দিনের সঙ্গে নিহত লিটনের জমি নিয়ে দীর্ঘদিন থেকে মামলা চলে আসছিল। সম্প্রতিক নিম্ন আদালত থেকে বিরোধীয় জমির ডিক্রি পান রফিক উদ্দিন। সেই নিম্ন আদালতের আদেশ বলে রফিককে জমি বুঝিয়ে দিতে গেলে প্রতিপক্ষ লিটন দলবল নিয়ে পুলিশের কাজে বাধা দেয় ও হামলা করে। এসময় পুলিশ ফাঁকা গুলি করে। কিন্তু পুলিশের গুলিতে লিটন গুলিবিদ্ধ হয়েছে কি না তা তার জানা নাই বলে জানান। এদিকে লিটনের পরিবারের সদস্যরা বলেন, ভালকা আড়া এলাকার ৮ বিঘা জমি দীর্ঘদিন তাদের দখলে আছে। হঠাৎ উক্ত জমি পুলিশ নিয়ে রফিক দখল করতে গেলে লিটন বাধা দেয় এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ সময় পুলিশ গুলি করলে লিটন গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়।
×