ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

ন্যাটোকে সহায়তা না করলে সৈন্য প্রত্যাহার

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ১১ আগস্ট ২০১৯

 ন্যাটোকে সহায়তা না করলে সৈন্য প্রত্যাহার

জার্মানিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত রিচার্ড গ্রেনেল প্রস্তাব দিয়েছেন, জার্মানি ন্যাটোর প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা ব্যয় না বাড়ালে যুক্তরাষ্ট্রের উচিত হবে এর হাজার হাজার সৈন্য জার্মানি থেকে প্রত্যাহার করা। এটা সত্যিকারভাবে অশোভন, জার্মানিতে ৫০ হাজারের বেশি আমেরিকানের জন্য মার্কিন করদাতাদের অর্থপ্রদান অবশ্য অব্যাহত রাখতে হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় কর্মসূচীর ওপর উদ্বৃত্ত অর্থ থেকে জার্মানদের এ ব্যয়ে চালিয়ে যাওয়া উচিত। গ্রেনেল এ সপ্তাহে জর্মান সংবাদ সংস্থা ডিপিএকে এ কথা বলেছেন এবং পরে মার্কিন দূতাবাস টুইটে বলেছে। -ফক্স নিউজ জার্মানিতে প্রায় ৩৪ হাজার সামরিক সদস্য অবস্থান করছে এবং ৩ ডজনের বেশি সেনা ও বিমান বাহিনীর ঘাঁটি রয়েছে। দেশটিতে এ সামরিক সদস্যদের সহযোগিতার জন্য রয়েছে প্রায় ১৭ হাজার বেসামরিক আমেরিকান। গ্রেনেল টুইটারে প্রয়োজনীয় প্রতিরক্ষা ব্যয় না মেটানোর জন্য জার্মানির সমালোচনাও করেছেন। তিনি বৃহস্পতিবার সাংবাদিক রোল্যান্ড নেলেস ও সাময়িকী দের ম্পিজেলকে বলেন, জার্মান ও ইউরোপীয়দের সুরক্ষার জন্য জার্মানিতে ৩৪ হাজার মার্কিন সৈন্য রয়েছে। আমি আপনাকে বলতে পারি, এটা ঠিক নয়। আমেরিকানরা বুঝতে পারছে না যে, ন্যাটোতে জার্মানি কেন এর বাধ্যবাধ্যকতা মেনে চলছে না এবং পাশ্চাত্যকে সহযোগিতা করছে না। তারা তো এতে অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে উঠছেন। দের ম্পিজেলের সংবাদদাতা রোল্যান্ড নেলেস গত সপ্তাহে লিখেছেন, জার্মানি ইরান মিশনে অংশগ্রহণ করবে কিংবা যে বিষয়ে আমেরিকানদের খুব আগ্রহ নেই। হরমুজ প্রণালীতে আন্তর্জাতিক ট্র্যানজিট নিরাপত্তায় একটি নৌ নিরাপত্তা মিশনে যোগ দেয়ার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের অনুরোধ জার্মানি সম্প্রতি প্রত্যাখ্যান করার পর নেলেস এ কথা বলেন। পোল্যান্ডে মার্কিন রাষ্ট্রদূত জর্জেট মোসবাচেরও টুইটারে একই সুরে বলেছেন, ন্যাটোতে পোল্যান্ড এর জন্য প্রয়োজনীয় দায়িত্ব পালন করছে এবং দেশটিতে আমেরিকান সৈন্যদের স্বাগত জানাবে। তিনি বলেন, ন্যাটোতে পোল্যান্ড শর্তানুযায়ী এর জিডিপির ২ শতাংশ ব্যয় করছে। জার্মানি করছে না। আমরা জার্মানিতে অবস্থিত মার্কিন সৈন্যদের পোল্যান্ডে আসাতে স্বাগত জানাব। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পোল্যান্ডে মোতায়েন ১ হাজার মার্কিন সৈন্যের বাসস্থান ও অবকাঠামো যোগান দেয়ার জন্য হলে আরও ১ হাজার সৈন্য মোতায়েনের ঘোষণা দেন। পোল্যান্ডের কর্মকর্তারাও পোল্যান্ডে একটি স্থায়ী সামরিক ঘাঁটি ফোর্ট ট্রাম্প’ প্রতিষ্ঠার একটি প্রস্তাব গ্রহণে ট্রাম্পের সম্মতি পাওয়ার চেষ্টা করেন। ট্রাম্প ইচ্ছা প্রকাশ করলেও প্রতিশ্রুতি দেননি। ১৯৯৭ সালে ন্যাটো-রাশিয়া চুক্তিতে বলা হয়েছে যে, ন্যাটো পোল্যান্ডের মতো সাবেক ওয়ারশ চুক্তিভুক্ত দেশগুলোসহ নতুন সদস্য রাষ্ট্রের ভূমিতে সুসংহত যুদ্ধ সৈনিকদের স্থায়ী অবস্থানের চেয়ে বরং সৈন্যদের শক্তিবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে মিশন পরিচালনা করবে। ন্যাটোভুক্ত সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে সংস্থার প্রতিরক্ষা ব্যয় মেটানোর জন্য তাদের জিডিপির ২ শতাংশ প্রদানের প্রয়োজন রয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র বেশিরভাগ ব্যয় বহন করে। দেশটি ২০১৮ সালে এর জিডিপির প্রায় ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ সংস্থার প্রতিরক্ষাখাতে ব্যয় করেছে। জার্মানি গতবছর ব্যয় করেছে এর জিডিপির ১ দশমিক ২৩ শতাংশ। ট্রাম্প অতীতে এর ব্যয় বৃদ্ধি না করার জন্য ন্যাটো সদস্য রাষ্ট্রগুলোর বিশেষ করে জার্মানির সমালোচনা করেছেন বারবার। তিনি বলেছেন, আমাদের প্রত্যাশা দেশগুলো জিডিপির অন্তত ২ শতাংশ অর্থ ব্যয় করবে। আজকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকল সদস্য রাষ্ট্রকে তাদের বাধ্যবাধকতা পূরণ করতে হবে। তাদের জন্য অন্যকোন বিকল্প নেই। ট্রাম্প জুনে লন্ডন সফরকালে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র সঙ্গে বৈঠককালে এ কথা বলেন। ট্রাম্প এপ্রিলে হোয়াইট হাউসে ন্যাটো মহাসচিব জেনস স্টলটেনবার্গের সঙ্গে একই মতামত ব্যক্ত করেন। তিনি ওই সময় বলেছেন, জার্মানি তাদের ন্যায্য দেয় প্রদান করছে না। জার্মানির জন্য আমাদের যথেষ্ট সহানুভূতি রয়েছে। কিন্তু তাদের যে অর্থ প্রদান করা উচিত তা করছে না তারা।
×