ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিড়ম্বনার ঈদযাত্রা ॥ সড়ক রেল ও নৌপথে মানুষের ঢল

প্রকাশিত: ১০:৫৮, ১০ আগস্ট ২০১৯

বিড়ম্বনার ঈদযাত্রা ॥ সড়ক রেল ও নৌপথে মানুষের ঢল

রাজন ভট্টাচার্য ॥ ঈদের ছুটি শুরু। বৃহস্পতিবার অফিস শেষ করেই নাড়ির টানে গ্রামে ফিরতে শুরু করেছেন রাজধানীর মানুষ। ওদিন দিনভর ছিল থেমে থেমে বৃষ্টি। কখনও রিমঝিম, কখনও মুষলধারায়। তবে শুক্রবার সকাল থেকে চকচকে রোদ। মাঝেমধ্যে আকাশে মেঘ উঁকি দেয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু সারাদিন ভালই কেটেছে। এই সুযোগে ভোর থেকেই টার্মিনালগুলোতে নামে ঘরমুখো মানুষের ঢল। প্রিয়জনের সঙ্গে ঈদের খুশি ভাগাভাগি করতে নানান বিড়ম্বনা মাথায় নিয়ে বাড়ির পথে ছুটেছেন সবাই। নৌ, সড়ক ও রেলপথে সমান ভিড়। অবশ্য টিকেট বিড়ম্বনায় ভুগতে হয়েছে বাসযাত্রীদের। তৃতীয় দিনে ট্রেনযাত্রায়ও স্বস্তি ছিল না। সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত বেশিরভাগ ট্রেন কমলাপুর স্টেশন থেকে বিলম্বে ছেড়েছে। ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে ছিল ৪০ কিমি যানজট। তবে প্রায় সব ফেরিঘাটে কমবেশি যানজট ও দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে ঘরমুখো মানুষকে। অবশ্য নৌপথে যাত্রা ছিল অনেকটাই স্বস্তিদায়ক। ঢাকার সব টার্মিনালেই টিকেট পেতে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে। অন্যদিকে ঘরমুখো মানুষের ভিড় বাড়ায় ফাঁকা হতে শুরু করেছে রাজধানী। শুক্রবার কোন সড়কেই দেখা যায়নি যানজট। অনেকটা নীরব হয়ে এসেছে কর্মব্যস্ত শহরের অলিগলি। কোন রকম সিগন্যাল ছাড়াই স্বাভাবিক গতিতে চলছে যানবাহন। জমতে শুরু করেছে রাজধানীর ২৪ পশুর হাট- বাড়ছে ভিড়। কমলাপুরে দুর্ভোগ ॥ এবারের ঈদে ট্রেন যাত্রায়ও পুরোপুরি স্বস্তির খবর নেই। প্রথমদিন থেকেই ট্রেন ছাড়ছে বিলম্বে। প্রতিদিনই বাড়ছে দুর্ভোগের মাত্রা। এ নিয়ে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করলেও রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, বন্যার কারণে দেশের অনেক এলাকার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ কারণে ট্রেন ঢাকায় পৌঁছাতে সময় লাগছে। ফলে ছাড়তেও বিলম্ব হচ্ছে। এতেই দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে। বঙ্গবন্ধু সেতুর কারণেও এই সিডিউল বিপর্যয় হচ্ছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। শুক্রবার দিনভর বেশিরভাগ ট্রেন শিডিউল বিপর্যয়ের মধ্যে পড়ে। নির্ধারিত সময়ের অনেক পরে ছেড়েছে বিভিন্ন গন্তব্যের ট্রেন। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলো তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত বিলম্বে ছেড়েছে। এতে যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়ে। গত দুদিনে কমবেশি বিলম্ব হলেও ঈদযাত্রার তৃতীয় দিনে এ চিত্র ভয়াবহ আকার ধারণ করে। এ বিষয়ে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, বঙ্গবন্ধু সেতুতে ডাবল লেন না হওয়া পর্যন্ত এই বিপর্যয় থেকে মুক্তি মিলবে না। উত্তরের সব ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ॥ কমলাপুর স্টেশন থেকে রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস শুক্রবার সকাল ছয়টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ট্রেনটি স্টেশনেই এসে পৌঁছায় সকাল সোয়া দশটার পরে। এরপর ট্রেনটি ছাড়ার সম্ভাব্য সময় দশটা ৪০ মিনিটে বলা হলেও ছেড়ে যায় বেলা এগারোটায়। চিলাহাটীগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল আটটায় স্টেশন থেকে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও পরে ছাড়ার নির্ধারিত সময় দেয়া হয় বেলা বারোটা ৫ মিনিট। রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস সকাল নয়টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও বারোটা পর্যন্ত কমলাপুরেই এসে পৌঁছয়নি। দিনাজপুর-পঞ্চগড়গামী একতা এক্সপ্রেস কমলাপুর ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময় ছিল দশটায়, পরে ট্রেনটি স্টেশন ছাড়ে সকাল সাড়ে এগারোটায়। রাজশাহী থেকে আসা ধূমকেতু এক্সপ্রেস দশটা ১৫ মিনিটে কমলাপুর স্টেশনের ৭ নম্বর প্ল্যাটফর্মে এসে পৌঁছায়। এ সময় প্ল্যাটফর্মে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড় ছিল। মুহূর্তে হুড়োহুড়ি করে যাত্রীরা সবাই একসঙ্গে ট্রেনে ওঠার চেষ্টা করে। অল্প সময়ের মধ্যেই ট্রেন ভরে যায়। যাত্রীদের চাপ এত বেশি যে ট্রেনজুড়ে পা ফেলার স্থানটুকুও অবশিষ্ট ছিল না। তবে দীর্ঘলাইনে দাঁড়িয়ে টিকেট সংগ্রহ করলেও অনেক যাত্রীই আসনে বসতে পারেননি। ভিড়ের কারণে আসন খুঁজে নেয়া কঠিন হয়ে পড়ে। একই অবস্থা দেখা গেছে ট্রেনের ছাদেও। প্রতিটি ট্রেনের ছাদজুড়ে মানুষ আর মানুষ। রংপুর এক্সপ্রেসের যাত্রী আলেয়া বলেন, ‘সকাল নয়টার আগেই স্টেশনে এসে পৌঁছেছি। এখন বেলা বারোটা। আমাদের সম্ভাব্য সময়ও দেয়া হয়নি। দুপুর দুটোয়ও ট্রেনে উঠতে পারব কিনা জানি না। বাচ্চাদের নিয়ে সমস্যায় পড়েছি। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সেতু ডাবল লেন না হওয়া পর্যন্ত এই বিপর্যয় থেকে মুক্তি মিলবে না। এজন্য আগামী ’২৩ সাল পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সেতুর লেন না বাড়িয়ে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ালে গতি আরও কমবে। ফলে বিপর্যয় আরও বাড়বে।’ ট্রেনের ছাদে ভ্রমণ নিষিদ্ধ কিন্তু ঈদের সময় ভিড় বেড়ে যাওয়ায় বারণ না শুনে অনেকেই ছাদে উঠে পড়েন। ঝুঁকি নিয়ে ছাদে উঠে বসা এই যাত্রীদের না নামিয়ে বৃহস্পতিবার শুভেচ্ছা জানাতে দেখা গেল রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনকে। শুক্রবার সকাল এগারোটার দিকে কমলাপুর রেলস্টেশন পরিদর্শনে যান মন্ত্রী সঙ্গে রেলের উর্ধতন কর্মকর্তারাও ছিলেন। দিনাজপুরগামী একতা এক্সপ্রেস তখন প্ল্যাটফর্ম ছাড়ছিল। ট্রেনটির ছাদেও এসময় শুয়ে বসে ছিল অনেক মানুষ। মন্ত্রী হাতে উঁচিয়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান। একদিন আগেই রেল পুলিশের অতিরিক্ত আইজি মহসিন হোসেন কমলাপুর স্টেশন পরিদর্শনের সময় বলেছিলেন, কোন যাত্রী যাতে ট্রেনের ছাদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে না ওঠে, সে বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সজাগ আছে। কিন্তু মন্ত্রীর পরিদর্শনের সময়ও সেই ‘সজাগ’ থাকার কোন লক্ষণ দেখা যায়নি। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ট্রেনের ছাদে চড়ে যাত্রীদের যাওয়ার বিষয়ে সাংবাদিকরা প্রশ্ন করলে রেলমন্ত্রী সুজন বলেন, ‘এসব লোককে নামিয়ে দিলেই কি সমস্যার সমাধান করতে পারব? ইচ্ছা থাকলেও সব সময় কিছু কিছু ক্ষেত্রে আমরা যাত্রীদের ছাদ থেকে নামিয়ে দিতে পারি না। তবে ট্রেনের ছাদে কোন দুর্ঘটনা ঘটলে তার দায় যে মন্ত্রণালয়ের ওপরই পড়বে, তা স্বীকার করেন মন্ত্রী। এই সমস্যা সমাধানে সাংবাদিকদের পরামর্শ দেয়ারও আহ্বান জানান তিনি। সাপ্তাহিক ছুটির সঙ্গে মিলিয়ে কোরবানির ঈদের ছুটি শুক্রবার থেকেই শুরু হওয়ায় কমলাপুরে ছিল প্রচন্ড ভিড়। তবে পশ্চিমাঞ্চল রেলের অধিকাংশ ট্রেন আগের মতোই দেরি করে ছাড়ছে বলে যাত্রী ভোগান্তি বিন্দুমাত্র কমেনি। একতা এক্সপ্রেস নির্ধারিত সময় সকাল দশটায় থাকলেও এটি দেড় ঘণ্টা দেরি করে সাড়ে এগারোটায় ছেড়ে যায়। মন্ত্রীর সামনেই প্রচন্ড ভিড়ের মধ্যে ট্রেনের জানালা দিয়েও যাত্রী উঠছিল। খুলনাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস সকাল ছয়টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ২ ঘণ্টা ৩৮ মিনিট দেরিতে ছাড়ে। রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস সকাল ছয়টায় ছেড়ে যাওয়ার নির্ধারিত সময় থাকলেও এটি ৫ ঘণ্টা দেরিতে ছেড়েছে। রাজশাহীগামী বনলতা এক্সপ্রেস দুপুর সোয়া একটার পরিবর্তে এক থেকে দেড় ঘণ্টা দেরি করে ছাড়ে। আর রাজশাহীগামী সিল্কসিটি দুপুর দুটো ৪০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার সময় থাকলেও এটি অন্তত ৩ ঘণ্টা, রাজশাহীগামী পদ্মা এক্সপ্রেস রাত এগারোটা ১০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এটি ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা এবং খুলনাগামী চিত্রা সন্ধ্যা সাতটার বদলে অন্তত সাড়ে ৩ ঘণ্টা দেরি করে ছেড়েছে। তবে পূর্ব রেলের চট্টগ্রাম ও সিলেটের ট্রেনগুলো নির্ধারিত সময়ে ছেড়ে যাচ্ছে বলে জানান রেলমন্ত্রী। ট্রেন যথাসময়ে ছাড়তে না পারার বিষয়ে তিনি বলেন, পশ্চিমাঞ্চলের ট্রেনগুলোকে বঙ্গবন্ধু সেতু অতিক্রম করে যেতে হয়। এই সেতু দিয়ে প্রতিটি ট্রেন অতিক্রম করতে ৩০/৪০ মিনিট সময় লাগে, প্রতিদিন বত্রিশটি ট্রেন এর ওপর দিয়ে চলাচল করে। ওই হিসেবে ট্রেনের সময়সূচী আর ঠিক রাখা যাচ্ছে না। যমুনার ওপর ’২৩ সালের মধ্যে দ্বিতীয় সেতু নির্মাণ হলে এই সমস্যার সমাধান হবে। প্রশ্নবাণে জর্জরিত রেলমন্ত্রী ॥ মন্ত্রীকে স্টেশনে পেয়ে যাত্রীরা প্রশ্ন করেন, সকালের ট্রেন বিকালে কেন? জবাবে মন্ত্রী বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে ধীরে ট্রেন চলাচলের কারণ দেখান। একতা ট্রেনের যাত্রী মাসুম পারভেজ মন্ত্রীকে বলেন, ‘আপনাদের সার্ভিস ভালো না, ভিড়ের কারণে ট্রেনের ভেতরে মানুষ দাঁড়ানোরও সুযোগ নেই। ছাদে কেন মানুষ উঠেছে? মন্ত্রী তখন বলেন, ঈদ উপলক্ষে এমনটি হয়েই থাকে, তবে আগামীতে চেষ্টা থাকবে মানুষ যেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে না যায়। একই ট্রেনের যাত্রী সেন্টু ফরাজী মন্ত্রীকে পেয়ে অভিযোগ করেন, ৩৬ ঘণ্টা লাইনে অপেক্ষা করে টিকেট পেয়েছি, এখন ট্রেনে উঠে সিটে বসারও উপায় নেই। বহু কষ্ট করে সিট পেলাম। এই সমস্যা শেষ হবে কখন? মন্ত্রী বলেন, অতীতে ট্রেনের সার্ভিস আরও খারাপ ছিল, অনেক কিছুই ছিল না। এখন ট্রেনের অনেক উন্নতি হয়েছে, ভবিষতে আরও সুযোগ-সুবিধা বাড়বে। বিদেশ থেকে আরও ২০০ বগি আনা হচ্ছে জানিয়ে রেলমন্ত্রী বলেন, আগামী এক বছরের মধ্যে রেলে আরও দশটি নতুন ট্রেন যুক্ত হচ্ছে। এদিকে কমলাপুর থেকে কোন ট্রেনে মশা নিরোধক ওষুধ ছিটাতে দেখা যায়নি বাসের টিকেট না পাওয়ায় ভোগান্তি ॥ ঈদের তিন দিন আগে রাজধানীর প্রধান দুটি বাস টার্মিনালে ঘরমুখো যাত্রীদের উপচে পড়া ভিড়ের মধ্যে অনেকেই আগে থেকে টিকেট না নেয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন। শুক্রবার সকালে মহাখালী বাস টার্মিনালে অপেক্ষমাণ দেশের উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অনেক যাত্রী টিকেটের অপেক্ষায় ছিলেন। টিকেট তো দূরের কথা যোগাযোগের জন্যও কোন কাউন্টার খোলা ছিল না। সরেজমিনে দেখা যায়, সিরাজগঞ্জগামী এসআই এন্টারপ্রাইজ, অভি এন্টারপ্রাইজ ও সেবা লাইনের সব কাউন্টারই বন্ধ। এসব বাসের চালকরাও কোন উত্তর দিতে পারেনি। যাত্রীরা জানান, সকাল ৯টায় এসেছি, এখনও কোন টিকেট পাচ্ছি না। সব কাউন্টার বন্ধ দেখছি সকাল থেকে। কাউন্টার বন্ধ রেখে সিরাজগঞ্জের বাসের ২৫০ টাকার টিকেট ৮০০ টাকা করে বিক্রি হয় বলে অভিযোগ করেন সবাই। বিলাস নামের একজন যাত্রী জানান, আমাদের এই রুটের বাসে অগ্রিম টিকেট বিক্রি হয় না, বাস ছাড়ার আগে টিকেট বিক্রি হয়। ব্ল্যাকে সব টিকেট বিক্রি হচ্ছে, একহাজার টাকা দিয়েও টিকেট পাচ্ছি না। এসআই এন্টারপ্রাইজের বাসের এক স্টাফ বলেন, বাস মালিকরা যেভাবে নির্দেশনা দেয়, সেভাবেই বাসে যাত্রী উঠাই। টাকা তো বেশি হবে। কারণ আসার সময় খালি আসি। সিরাজগঞ্জে যাওয়ার জন্য মহাখালী বাস টার্মিনালে সকাল থেকে বসে ছিলেন দীপু এন্টারপ্রাইজের সার্ভিসম্যান শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, সিরাজগঞ্জে যাওয়ার সব কাউন্টার বন্ধ। আমরা কারও সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছি না। সিলেট রুটের এনা পরিবহনের টিকেট পাওয়ার জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করছিলেন সুনামগঞ্জের মালিহা। এনা পরিবহনের জেনারেল ম্যানেজার আতিকুল ইসলাম বলেন, যাত্রীর চাপ বেশি। গাড়ি কম। তাই সবাইকে টিকেট দেয়া যাচ্ছে না। গাড়ি রাস্তায় রেখে অনেক সময় টিকেট বিক্রি হচ্ছে। গাবতলী বাস টার্মিনালেও টিকেটের জন্য হা-হুতাশ উত্তর ও দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের। সকাল থেকে বসে থাকলেও টিকেট পাচ্ছে না অন্তত কয়েক হাজার যাত্রী। কাউন্টারে গিয়ে টিকেট না পেয়ে বাচ্চাদের নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গোপালগঞ্জের মকসুদপুরের যাত্রী গোলাম রসুল। তিনি বলেন, অতিরিক্ত টাকা দিয়েও টিকেট পাচ্ছি না। সব কাউন্টারই বলে টিকেট শেষ। এখন কি করি?। গাবতলীতে ভাড়া বেশি নেয়ার অভিযোগ করেছেন মুকসেদপুরের আরেক যাত্রী মোঃ পিন্টু। একই অভিযোগ সাদিকেরও। তিনি বলেন, ২৫০ টাকার টিকেট নিয়েছি ৫০০ টাকা দিয়ে। তাও আবার সকালে এসে এখন ১২টায় পেয়েছি। গাড়ি কখন আসে বলতে পারছি না। বরিশাল-সাতক্ষীরা-নড়াইল রুটে চলাচলকারী ঈগল পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, গাড়ির সঙ্কট নেই। তবে ফেরিতে দেরি হওয়ায় সঠিক সময়ে গাড়ি ছাড়া কঠিন হয়ে যাচ্ছে। আগের থেকে এক-দেড় ঘণ্টা সময় দেরিতে আমরা যাত্রী গাড়িতে উঠাচ্ছি। আর ভাড়া সরকারি চার্টের বাইরে আমরা নিচ্ছি না। ঢাকা-বরিশাল-মঠবাড়িয়াগামী হানিফ পরিবহনের কাউন্টার মাস্টার শরিয়তউল্যাহ মিন্টু বলেন, ফেরির কারণে গাড়ি ছাড়তে এক-দেড় ঘণ্টা দেরি হচ্ছে।
×