ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিশেষ পয়েন্টে ওয়াচ টাওয়ার

বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল হকারদের ছবিসহ তালিকা হচ্ছে

প্রকাশিত: ০৯:৪৩, ১০ আগস্ট ২০১৯

বাস ও লঞ্চ টার্মিনাল হকারদের ছবিসহ তালিকা হচ্ছে

গাফফার খান চৌধুরী ॥ ঈদে ঘরমুখো মানুষদের অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টির কবল থেকে রক্ষা করতে দেশের প্রতিটি আন্তঃজেলা বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ টার্মিনালের হকারদের ছবিসহ তালিকা তৈরির কাজ শুরু করেছে পুলিশ। নতুন কোন হকারকে বাস বা লঞ্চ টার্মিনালে বসতে দেয়া হচ্ছে না। কারণ বাস ও লঞ্চ টার্মিনালে থাকা হকার আর তাদের সহযোগীদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেট খাবারের সঙ্গে নেশার ওষুধ মিশিয়ে যাত্রীকে খাইয়ে দিয়ে যাত্রীর সঙ্গে থাকা মালামাল হাতিয়ে নেয়। এছাড়া যানজট কমাতে ঈদের তিনদিন আগে থেকেই মহাসড়কে সব ধরনের মালবাহী বড় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেয়া হচ্ছে। সারাদেশের মহাসড়কে অধিক দুর্ঘটনাপ্রবণ স্থান হিসেবে চিহ্নিত ব্ল্যাক স্পটগুলোতে অনেক দূর থেকে দেখা যায়, এমন সাইনবোর্ড দেয়া হয়েছে। এসব স্পটে সর্বক্ষণিক রেকার ও এ্যাম্বুলেন্স রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিশেষ বিশেষ পয়েন্টে একটি করে ওয়াচ টাওয়ার বসানো হচ্ছে। ওয়াচ টাওয়ার থেকে বাইন্যুকুলারের মাধ্যমে আশপাশের রাস্তার যানজট পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা হবে। মহাসড়কে গাড়ির চাপ দেখে যানজট নিরসনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে পুলিশ। ছিনতাই ও দুর্ঘটনা কমাতে মহাসড়কে এক সপ্তাহ আগে থেকেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অতিরিক্ত সদস্য মোতায়েন করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান জনকণ্ঠকে বলেন, ঈদ সামনে রেখে রাজধানীতে মৌসুমি অপরাধীদের তৎপরতা বেড়ে যায়। এসব অপরাধী ঈদের সময় বেশি তৎপর থাকে। এজন্য রাজধানীতে ছিনতাই, ছোঁ পার্টি, অজ্ঞানপার্টি ও মলমপার্টির বিষয়ে পুলিশকে বিশেষভাবে সর্তক থাকার পরামর্শ দিয়েছেন ডিএমপি কমিশনার মোঃ আছাদুজ্জামান মিয়া। বিশেষ করে বাস টার্মিনালগুলোতে এবং লঞ্চ টার্মিনালে থাকা হকারদের ছবিসহ তালিকা করা হচ্ছে। নতুন করে বাস টার্মিনাল ও লঞ্চ টার্মিনালে কোন হকারকে বসতে দেয়া হচ্ছে না। কারণ এসব হরকারদের বিরুদ্ধে খাবারের সঙ্গে ঘুম বা নেশার ওষুধ মিশিয়ে টার্গেটকৃত যাত্রীদের খাইয়ে, যাত্রীর সঙ্গে থাকা সব মালামাল হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ আছে। পুলিশের হাইওয়ে বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সারাদেশে ১১ হাজার ৮০৬ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। এবার বর্ষা ও বন্যায় দেশের বহু সড়ক-মহাসড়কের ক্ষতি হয়েছে। রাস্তা নষ্ট হওয়ার কারণে ঈদে যানজট হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এবার ঈদে ঘরমুখো মানুষের যথেষ্ট যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হতে পারে। প্রতিবারই ঈদে বর্ষার কারণে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এবারও এর ব্যতিক্রম হচ্ছে না। কারণ ইতোমধ্যেই বৃষ্টি আর বন্যায় দেশের বহু রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম চার লেন মহাসড়ক নির্মিত হওয়ায় মহাসড়কটিতে যানজট তুলনামূলক কম থাকবে। অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ঢাকা-ময়মনসিংহ চার লেন বিশিষ্ট মহাসড়কেরও অন্তত ২০ কিলোমিটার রাস্তায় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে এ রাস্তায়ও এবার যানজট হওয়ার আশঙ্কা বেশি। ঢাকার আশপাশের ১৪টি বিশেষ স্থানকে তীব্র যানজটপ্রবণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। যার মধ্যে আছে উত্তরার আব্দুল্লাহপুর, গাজীপুর চৌরাস্তা, চন্দ্রা চৌরাস্তা, আশুলিয়া ল্যান্ডিং স্টেশন এলাকা, গাবতলী, সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, সায়েদাবাদ সোনারগাঁও জনপদ চৌরাস্তা মোড়, জুরাইন চৌরাস্তা, কদমতলী, দ্বিতীয় বুড়িগঙ্গা সেতুর ঢাকার দিকের অংশ, কদমতলী, পাগলা, কাঁচপুর ব্রিজ ও সাভারের আমিনবাজার থেকে বলিয়ারপুর পর্যন্ত।
×