ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কক্সবাজারে জমে উঠেছে গবাদিপশুর হাট

প্রকাশিত: ০৯:১৬, ১০ আগস্ট ২০১৯

কক্সবাজারে জমে উঠেছে গবাদিপশুর হাট

এইচএম এরশাদ, কক্সবাজার ॥ জমে উঠেছে ৪৪টি কোরবানির পশুর হাট। পবিত্র ঈদ-উল-আজহার দিন ঘনিয়ে আসছে দেখে কোরবানির পশুর হাটে ক্রেতার ভিড় বাড়ছে। গরু ক্রেতারা জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের জন্য গরু কেনার কারণে স্থানীয় বাজারে দাম একটু বেশি। জেলার ৪৪টি গরু বাজারে মিয়ানমার ও দেশীয় গরু ভরে গেছে। গরু বাজারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। ছিনতাই, ডাকাতিসহ যে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে প্রশাসন তৎপর। সূত্র জানায়, উখিয়া-টেকনাফে স্থানীয় বাসিন্দা হচ্ছে প্রায় ৫ লাখ। এদের মধ্যে বাড়তি চাপ রয়েছে প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা। কোরিয়াসহ বিভিন্ন এনজিও এবং সংস্থা ওই রোহিঙ্গাদের জন্য কোরবানির গরু কিনে দিচ্ছে। এতে জেলার সব বাজারে গরুর দাম একটু চড়া। তবে দু’একদিনের মধ্যে বিক্রি জমজমাট হবে এবং দামও একটু কমবে বলে আশা করছেন বিক্রেতারা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খরুলিয়া বাজারে আসা ব্যাপারী সাহাব উদ্দিন বলেন, দুটি গরু নিয়ে বাজারে এসেছি। এখনও বিক্রি হয়নি। ছয় মাস আগে দুটি গরু কিনেছিলাম আড়াই লাখ টাকায়। এই ছয় মাস লালন-পালন করে বাজারে নিয়ে এসেছি। গরু দুটি তিন লাখ টাকার কম বিক্রি করলে লোকসান হবে। তিনি বলেন, যেসব ব্যাপারীর কাছ থেকে আমরা গরু কিনি, এবার সেখানেই দাম বেশি। তারা নিজেরাও আমাদের জানিয়ে দিচ্ছে, দেশী-বিদেশী এনজিওর কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের জন্য গরু কিনবে। তাই এবার গরুর দাম একটু বেশি হবে। রামু কলঘর গরু বাজারের ইজারাদার এরফান বলেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা গরু নিয়ে বাজারে এসেছে। আমরা তাদের সর্বোচ্চ সুযোগ-সুবিধা আর নিরাপত্তা দেয়ার চেষ্টা করছি। পাশাপাশি প্রশাসনও আমাদের সর্বোচ্চ সহযোগিতা করছে। কারা রোহিঙ্গাদের জন্য হাজার হাজার পিস গরু লাগছে মর্মে প্রতিটি বাজারে প্রচার হওয়ায় বিক্রেতারা এখনও দাম ধরে রয়েছে। যার কারণে স্থানীয়রা গরু কিনতে বাজারে গিয়েও বেশি দাম শুনে ফেরত যাচ্ছে। স্থানীয়রা বলেন, ১২ লাখ রোহিঙ্গা কক্সবাজার জেলায়। তাদের জন্য তরিতরকারি, মাছ, মাংস ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো ২ বছর ধরে কেনা হচ্ছে স্থানীয় বাজার থেকে। যার কারণে প্রতিটি জিনিসের দাম এখনও আকাশচুম্বী। মাগুরায় বাড়ছে ক্রেতার ভিড় নিজস্ব সংবাদদাতা মাগুরা থেকে জানান, মাগুরায় শেষ মুহূর্তে কোরবানির পশুর হাট জমে উঠছে। ঈদ-উল-আজহা যতই এগিয়ে আসছে, ততই বাড়ছে গরু, ছাগলের বেচাকেনা। পশুর আমদানি ভাল হওয়ায় ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে। এবছর জেলার ইট খোলা, রামনগর, কাটাখালী, আলমখালী, আলোকদিয়া, বেথুলিয়া, নহাটা, আড়পাড়া, সীমাখালী, সারঙ্গদীয়া, লাঙ্গলবাধ প্রভৃতি স্থানে ১৫টির অধিক কোরবানির পশুর হাট বসেছে। বিভিন্ন আকারের গরু ও ছাগল উঠেছে বিক্রির জন্য। কোরবানি দিতে ইচ্ছুক ক্রেতারা হাটের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে ঘুরে-ফিরছেন সাধ্যের মধ্যে তাদের পছন্দের ছাগল ও গরুটি কেনার জন্য। ভারতীয় গরুর আমদানি কম থাকায় দেশী গরুর কদর বেড়েছে। একটি ছাগল প্রকার ভেদে ৭ হাজার থেকে ২৫ হাজার এবং গরু প্রকার ভেদে ৪০ হাজার থেকে দেড় লাখ টাকার মধ্যে কেনাবেচা চলছে। বড় গরুর দাম আরও বেশি। সকলের দৃষ্টি মাঝারি গরু ছাগলের দিকে। দাম নিয়ে রয়েছে ক্রেতা বিক্রেতাদের ভিন্ন মত। বিক্রেতারা বলছেন, পশু খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় এই বছর পশুর দাম কিছুটা বেশি। এই দাম থাকলে তারা কিছুটা লাভ পাবেন। অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, পশুর দাম গত বছর থেকে বেশ কিছুটা বেশি। বাঁশখালীতে বিকিকিনি শুরু নিজস্ব সংবাদদাতা বাঁশখালী থেকে জানান, বৈরী পরিবেশকে উপেক্ষা করে পবিত্র ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে বাঁশখালী উপজেলার পশুর হাটগুলোতে আসতে শুরু করেছে কোরবানির পশু। গত কয়েকদিন আগেও স্থানীয় কয়েকটি বাজারে গরু আসতে দেখা গেছে। গত বৃহস্পতিবার থেকে প্রায়ই সব স্থায়ী-অস্থায়ী বাজারে গরুর উপচেপড়া ভিড়। বিকিকিনি শুরু হয়েছে পুরোদমে। লাভের আশায় বেপারিরা আগেভাগেই হাটে নিয়ে এসে গরু-মহিষের পরিচর্যা করছেন। কেউ খাওয়াচ্ছেন খড়, রং লাগাচ্ছেন শিংয়ে আর কেউবা পানিতে ধুয়ে দিচ্ছেন পশুর শরীর। বাঁশখালীর প্রসিদ্ধ গরুর বাজার হিসেবে পরিচিত রামদাশ মুন্সির হাট, চাম্বল বাজার (গজা হাট), ছনুয়া মনুমিয়াজী বাজার, জালিয়াখালী নতুন বাজারে সরেজমিনে দেখা যায় স্থানীয় ক্রেতার পাশাপাশি শহুরে ক্রেতারও সমাগম হয়েছে। গরু বিক্রেতারা আশা করছে গতবারের চেয়ে তারা চড়া দাম পাবে এ বছর। উপজেলার কয়েকটি পয়েন্টে গড়ে উঠেছে কোরবানির পশুর বাজার। খামারি ও সৃজনাল গরু মোটাতাজাকারীদের ভিড়ে জমে উঠেছে বাঁশখালী উপজেলার ছনুয়া মনুমিয়াজির বাজার, প্রেমবাজার, চাম্বল বাজার (গজাহাট), বড়ঘোনা সকাল বাজার, গন্ডামারা বাজার, শিলকুপ টাইমবাজার, জলদী মিয়ার বাজার, জালিয়াখালী নতুন বাজার, সরল বাজার, গুনাগরি রামদাশ মুন্সির হাট, বশিরুল্লাহ মিয়াজি বাজার, মোশারফ আলী মিয়ার বাজার, রায়ছটা সেন্টার পুকুর পাড়, প্রেমাশিয়া চৌধুরীর হাট, বানীগ্রাম নোয়া বাজার, পুকুরিয়া মনসা হাট, পুকুরিয়া চৌমুহনী মুনায়েম শাহ বাজারসহ ২৫-৩০টির অধিক ছোট বড় কোরবানির পশুর বাজার। গরু বিক্রয় করতে আসা শিলকুপের নাছির উদ্দীন জানান, বাজারে আসা সবচেয়ে বড় গরুটির মূল্য হাঁকা হয়েছে এক লাখ বিশ হাজার টাকা। তিনি গরুটি গত বছর ক্রয় করেছেন ষাট হাজার টাকায়। দীর্ঘ এক বছর পরিচর্যা করার পর তিনি গরুটি বিক্রি করতে বাজারে এনেছেন। কালীপুর এলাকার এক খামারি নুরুল আবছার একটি গরুর দাম দিয়েছেন ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা তিনি ২ লাখ টাকায় বিক্রি করবেন বলে জানিয়েছেন।
×