ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

শিবলী সিরাজের আলোকচিত্রে ফরাসী নিসর্গের রূপ

প্রকাশিত: ১১:০৮, ৯ আগস্ট ২০১৯

শিবলী সিরাজের আলোকচিত্রে ফরাসী নিসর্গের রূপ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ ছবির দেশ কবিতার দেশ ফ্রান্স। শিল্প-সাহিত্যের এই তীর্থভূমিতে প্রকৃতিও বড্ড মায়াবী। চারপাশে ছড়িয়ে আছে নিসর্গের রূপময়তা। বৃক্ষ, ফুল, লতা-পাতা, গহীন অরণ্য, সমুদ্রতট থেকে পাহাড়ী ঝরনাধারা কিংবা সুনীল আকাশের সৌন্দর্যে পুলকিত হয় দর্শনার্থীর প্রাণ। সব মিলিয়ে ফরাসী প্রকৃতির অবারিত রূপের মাঝে লুকিয়ে আছে শুধুই মুগ্ধতার হাতছানি। আর সুন্দরতম সেই দেশটির গ্রাম থেকে শহর চষে বেড়িয়েছেন শিবলী সিরাজ। প্রকৃতিকে অবলোকনের পাশাপাশি সেই সৌন্দর্যকে ক্যামেরাবন্দী করেছেন এই আলোকচিত্রী। সেসব ছবি নিয়ে ধানম-ির ফরাসী সাংস্কৃতিক কেন্দ্র আঁলিয়স ফ্রঁসেস দ্য ঢাকার লা গ্যালারিতে সাজানো হয় ‘ফ্রান্স, নৈসর্গিক ও অনন্ত : এক আলোকচিত্রীর অভিযাত্রা’ শীর্ষক প্রদর্শনী। এ বছরের মার্চ মাসে শিবলী সিরাজ তিন সপ্তাহব্যাপী এক অভিযাত্রায় ফ্রান্স ভ্রমণ করেন। ভ্রমণের সুবিধার্থে তিনি ভাড়া করে নেন একটি গাড়ি। সেই বাহনে চড়ে ছুটে শিবরী ছুটে বেড়িয়েছেন মহাসড়ক এবং গ্রামাঞ্চলের পথেঘাটে। ফ্রান্সজুড়ে তার এই ভ্রমণ, উত্তরের বেলাভূমি থেকে দক্ষিণে এবং সমুদ্র থেকে পাহাড়ে, বিশাল প্রকৃতির ছবি তিনি তুলেছেন, ধরেছেন পাহাড়ী ঝরনায় ছুটে চলা নুড়ির চঞ্চলতা, এডোয়ার্ড মানে’র গ্রামের বাড়ি শিবলীকে মোহাবিষ্ট করেছে এবং তিনি তাকে দেখতে চেয়েছেন তার পারিপার্শ্বের প্রকৃতি সমন্বিত করে। সিরাজ বিশ্বাস করেনÑ মানবের অস্তিত্বের গহীনে প্রকৃতির বসবাস অত্যাবশ্যকীয়। এই মন্ত্রই অনুসরণ করে সজ্জিত হয়েছে প্রদর্শনীটি। প্রদর্শনী প্রসঙ্গে শিবলী সিরাজ বলেন, ক্যামেরার চোখ সেই দৃশ্যকে ধারণ করতে পারে যা অনেক সময়ই আমাদের সাদাচোখে ধরা পড়ে না। তাই ক্যামেরায় কারও হাতযশ নির্ভর করে অপসৃয়মান দৃশ্যের কতটা তিনি তার ক্যামেরার ফ্রেমে ধরে রাখতে পারছেন, তার ওপর। আমি সবসময়ই অনুপ্রাণিত হয়েছি আমার চিত্রগ্রহণ প্রয়াসে নতুনতর মাত্রা যোগ করতে। সেটা করতে গিয়েই আমাকে সবচেয়ে বেশি যা আকৃষ্ট করেছে তা হলো নিসর্গ। এ অপরূপ নৈসর্গিক সৌন্দর্যই শুধু নয় বরং প্রতি মুহূর্তে তার সতত-পরিবর্তমান লীলা আর মানুষের মনের গহীনে তার ব্যঞ্জনা তার প্রভাব আমাকে তাড়িত করে। আমরা সবাই নিসর্গ ভালবাসি, কিন্তু নিসর্গও যে কখনও কখনও আমাদের সৃষ্টি করে তোলে, তা প্রায়শই ভুলে যাই। প্রকৃতির সৌন্দর্য সব চিত্রকরকে আকর্ষণ করে বিশেষত ফরাসী ইম্প্রেশনিস্ট বা অভিব্যক্তিবাদীদের, যারা একটি নতুনতর পন্থা, বলা উচিত একটি নতুন মাত্রা খুঁজে পেয়েছিলেন প্রকৃতিকে তুলে ধরার ক্ষেত্রে। গত ২৬ জুলাই প্রধান অতিথি হিসেবে এ প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন ইন্টারন্যাশনাল থিয়েটার ইনস্টিটিউটের (আইটিআই) সাম্মানিক সভাপতি নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার। দুই সপ্তাহব্যাপী এ প্রদর্শনীর শেষদিন ছিল বৃহস্পতিবার। ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে...’ ॥ স্টাফ রিপোর্টার মুন্সীগঞ্জ থেকে জানান, ‘যখন পড়বে না মোর পায়ের চিহ্ন এই বাটে, আমি বাইব না মোর খেয়াতরী এই ঘাটে, চুকিয়ে দেব বেচা-কেনা, মিটিয়ে দেব গো, মিটিয়ে দেব লেনা-দেনা, বন্ধ হবে আনাগোনা এই হাটে... তখন আমায় নাই বা মনে রাখলে, তারার পানে চেয়ে চেয়ে নাই বা আমায় ডাকলে...’ সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সাবেক সভাপতি এ্যাডভোকেট শাহিন মোঃ আমানউল্লাহর কণ্ঠের এই সঙ্গীত দিয়ে মুন্সীগঞ্জে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৭৮তম প্রয়াণ দিবসের আয়োজনটি শুরু হয়। অন্যান্য বছরের মতো এবারও ২২শে শ্রাবণের এই আয়োজন করে মুন্সীগঞ্জের ‘অন্বেষণ বিক্রমপুর’। এই গানের পর কবিগুরুকে নিয়ে আলোচনা করেন সরকারী হরঙ্গগা কলেজের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমূল হোসাইন। আলোচনার মাঝেই রিমঝিম বৃষ্টি ...। চলে যায় বিদ্যুত। কিন্তু আলোচনা থামে না। বিষদ এই আলোচনার মাঝেই বিদ্যুত ফিরে আসে। আলোচনাটি দীর্ঘ হলেও অতিথি এবং শ্রোতারা মনোযোগ দিয়ে তৃপ্ত মনে শ্রবণ করছিলেন। কিন্তু এর পরের পরিবেশনাটি কোনভাবেই কম আকর্ষণীয় ছিল না। মৌতিষা ভট্টাচার্য নিপুণভাবে আবৃত্তি করেন কবিগুরুর ‘নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ।’ এতে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন। এরপরই গানের সুরে মুগ্ধ শ্রোতারা। জেলা শিল্পকলা একাডেমির সেমিনার কক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসটি) খান মোঃ নাজমুস সোয়েব, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) দিপক রায় ও সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার নাজমুল রায়হান। ধলেশ্বরী তীরের সভ্যতার জনপদ মুন্সীগঞ্জে শ্রাবণে এই আয়োজনে গানে কবিতা ও আলোচনায় আকাশে বাতাসে ছড়িয়ে পড়ছিল সৃজনশীলতার বাণী। এই আসর থেকে যেন আলোক ছড়াচ্ছিল। ছোট পরিসরে হলেও বড় মানুষদের এক মিলন মেলায় পরিণত হয় আয়োজনটি।
×