ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গমাতার আদর্শ থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান

প্রকাশিত: ১০:৫৭, ৯ আগস্ট ২০১৯

বঙ্গমাতার আদর্শ থেকে শিক্ষা নেয়ার আহ্বান

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, স্বাধীনতার ইতিহাসে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অবদান চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। কোন পদ-পদবির অধিকারী না হয়েও বঙ্গমাতা ছিলেন নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নের এক অনন্য প্রতীক। তিনি ছিলেন এক অসামান্য দৃঢ়তা, আত্মপ্রত্যয়, সাহস এবং অসাধারণ ব্যক্তিত্বের অধিকারী। এ সময় স্পীকার বঙ্গমাতার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা বিশ্লেষণ করে তার আদর্শ থেকে শিক্ষা গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় আয়োজিত বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের ৮৯তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখতে গিয়ে স্পীকার এ আহ্বান জানান। ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেন, সুগভীর রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অধিকারী এই নারী আওয়ামী লীগকে সংগঠিত করেন। নেতাকর্মীদের প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দেন। বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে তিনি পরামর্শ, সাহস, অনুপ্রেরণা ও সকল কাজে সহযোগিতা দিয়ে গেছেন। জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের বঙ্গবন্ধু হয়ে ওঠার ক্ষেত্রে মহীয়সী নারী বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের অনন্য ভূমিকা ছিল। অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী ফজিলাতুন নেসা ইন্দিরার সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মেহের আফরোজ চুমকি, জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান অধ্যাপক মমতাজ বেগম এ্যাডভোকেট। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী ও বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি এ্যাডভোকেট তারানা হালিম। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব কামরুন নাহার। অনুষ্ঠানে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জীবন ও কর্মের ওপর নির্মিত প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। স্পীকার বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের দীর্ঘ প্রেক্ষাপটে নেপথ্যে থেকে বঙ্গমাতা অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি দুঃসময়ে বঙ্গবন্ধুকে প্রেরণা যুগিয়েছেন, পরামর্শ দিয়েছেন। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট কালরাতে জাতির পিতার সঙ্গে বুলেটের নির্মম আঘাতে জীবন দিতে হয়েছে বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবকে, মরণেও তিনি স্বামীর সহযাত্রী হয়েছেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু বার বার গ্রেফতার হয়েছেন, জেল-জুলুমের শিকার হয়েছেন। কিন্তু বঙ্গমাতা ভেঙ্গে পড়েননি। শক্ত হাতে পরিবারের হাল ধরেছেন। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে প্যারোলে মুক্তি নিয়ে পাক সামরিক সরকারের সঙ্গে বৈঠকে বসতে নিষেধ করে বাংলার স্বাধীনতার পথ খুলে দিয়েছিলেন বঙ্গমাতা। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে তার এ দূরদর্শী চিন্তা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। তিনি বলেন, বঙ্গমাতার উৎসাহে বঙ্গবন্ধু কারাগারে আত্মজীবনী লেখেন। ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ স্বাধীনতা সংগ্রামের অনেক অজানা ইতিহাসের সম্ভার। এই আত্মজীবনী সংরক্ষণে বঙ্গমাতার ভূমিকা ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। ড. শিরীন শারমিন আরও বলেন, মহীয়সী নারী শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব ছিলেন প্রচারবিমুখ, পর্দার অন্তরালে থেকে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিরন্তর প্রেরণা যুগিয়েছেন। তার ত্যাগ, দেশপ্রেম ও আদর্শ অনন্তকাল জাতির অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে।
×