ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সুমন্ত গুপ্ত

দ্য ডায়েরি অব আনা ফ্রাঙ্ক

প্রকাশিত: ১৩:০১, ৮ আগস্ট ২০১৯

দ্য ডায়েরি অব আনা ফ্রাঙ্ক

কোন বিখ্যাত ব্যক্তির ডায়েরির কথা মনে হলে, সবার আগে যে নামটি আসে তা হলো আনা ফ্রাঙ্কের ডায়েরি। ১৩ বছর বয়সী একজন কিশোরী, যার চেনা পৃথিবীটা হঠাৎ করেই বদলে যেতে শুরু করেছিল। আনা ফ্রাঙ্ক, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকাময় অধ্যায়ের অনেক বড় একজন সাক্ষী। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অনিশ্চিত দিনগুলোর কথা ডায়েরিতে লিখেছিল নিয়মিতভাবে। তখনকার ভয়াবহ দিনগুলো এই কিশোরীর কলমের আঁচড়েই ডায়েরির পাতায় ফুটে উঠেছে জলজ্যান্তভাবে। সেই ডায়েরি পড়ে চোখের পানি ঝরেনি এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া মুশকিল। বিশ্বযুদ্ধ চলাকালে আনা ও তার পরিবার ১৯৪২ সালের পর পরই দখলদার নাৎসি বাহিনীর হাত থেকে রক্ষা পেতে আত্মগোপন করে। আত্মগোপনের সময় তার ১৩তম জন্মদিনে উপহার হিসেবে পাওয়া ডায়েরিতে দিনলিপি লিখতে শুরু করে আনা। ডায়েরিটিকে সে তার বন্ধুর মর্যাদা দিয়েছিল। এর একটি নামও ছিল, কিটি। প্রত্যেকবার লেখার সময়ে কিটি সম্বোধন করেই লিখত আনা। ডায়েরি লেখার সময়ে আনার বাবা বেশ ভয় পাচ্ছিলেন, লুকিয়ে থাকার সেই ভয়াবহ সময়টায় যদি তারা ধরা পড়ে যান, তাহলে ডায়েরিটি তাদের পরিচয় বহন করবে। তাই কিটিকে পুড়িয়ে ফেলতে চেয়েছিলেন। কিছু কিছু অংশ পড়ার সময় আঁতকে উঠতে হবে এই ভেবে যে, নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে যদি ডায়েরিটা সত্যিই পুড়িয়ে ফেলা হতো, তা হলে ইতিহাস খানিকটা অপূর্ণ থেকে যেত। আনার এ ডায়েরিকে উপজীব্য করে নির্মিত হয়েছে অনেকগুলো সিনেমা। সেগুলোর মধ্যে জর্জ স্টিভেনস পরিচালিত দ্য ডায়েরি অব আনা ফ্রাঙ্ক ছবিটি মুক্তি পায় ১৯৫৯ সালে। পরে ১৯৮৮ সালে জন এরম্যানের পরিচালনায় মুক্তি পায় দ্য এ্যাটিক : দ্য হাইডিং অব আনা ফ্রাঙ্ক ছবিটি। ১৯৯৫ সালে জন ব্লায়ার পরিচালনা করেন আনা ফ্রাঙ্ক রিমেম্বারড। ১৯৯৯ সালে জুলিয়ান উল্ফ পরিচালনা করেন আনা ফ্রাঙ্কস ডায়েরি। হান্স স্টাইনভেশলার পরিচালনায় ২০১৬ সালে মুক্তি পায় জার্মান ছবি ডাস তাগবুকতিয়া আনা ফ্রাঙ্ক। ২০১৭ সালে পরিচালক ম্যাট শিভারস্টোন করেন লাভ অল ইউ হ্যাভ লেফট। এখানেই শেষ নয়। ঘটনাটি নিয়ে নিশ্চয়ই আরও সিনেমা হবে। ধরা পড়ার পর ১৯৪৫ সালের মার্চে আনা ফ্রাঙ্ক ও তার বোন মার্গট ফ্রাঙ্ক ক্ষুধার্ত অবস্থায় মারা যায়। তাদের মরদেহ ছুড়ে ফেলা হয় লাশের স্তূপ। মেয়েদের মৃত্যুর পর বাবা ওটো ফ্রাঙ্ক আনার ডায়েরিটি পান। প্রথম সেটি বই হিসেবে প্রকাশিত হয় ১৯৪৭ সালের ২৫ জুন। নেদারল্যান্ডসে প্রকাশের পাঁচ বছর পর ১৯৫২ সালে আমেরিকায় বইটি মুদ্রিত হয় ৫ হাজার কপি, দ্বিতীয় মুদ্রণে ১৫ হাজার কপি আর তৃতীয় মুদ্রণে ৪৫ হাজার কপি প্রকাশিত হয়। এরপর লাখ লাখ লোক বইটি পড়তে শুরু করে। সিনেমাগুলো কত মানুষ দেখেছেন, সে হিসাব বের করা যায়নি।
×